জাতীয়

শামসুল হককে শ্রদ্ধা জানাতে লক্ষ জনতা

ভালুকা নিউজ ডট কম; ডেস্কঃ- সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল  হক চলে গেছেন না ফেরার দেশে। সেবার জন্য রেকে গেছেন তাঁর আদর্শ এবং তার সৃষ্টির সবকিছু। যা মানুষের জন্য কল্যানকর। ভক্তদের ভালোবাসায় সিক্ত তিনি।তাঁর মৃত্যুতে ভেঙ্গে পড়েছে অনেকেই। অনেকেই নিজেকে সামলাতে না পেরে অঝড়ে কাঁদছেন। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তার মরদেহকে  শ্রদ্ধা জানাতে দেশের প্রতিটি কোণা থেকে ছুটে এসেছে মানুষ।

বুধবার বেলা ১১টায় তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয়। এরপর শহীদ মিনারে ঢল নামে সর্বস্তরের মানুষের।

বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদিন ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল।

এরপর স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা দক্ষিণ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, ঢাকা উত্তর মহানগর আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ যুবলীগ, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পক্ষে সভাপতি সাইফুল ইসলাম সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মীজানুর রহমান, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক, প্রথম আলো, বাংলাদেশ শিশু একাডেমীসহ আরো অনেক সংগঠন শ্রদ্ধা জানায়।

মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন।

জানা গেছে, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে তার মরদেহ কুড়িগ্রামে গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হবে। সেখানেই তাকে দাফন করা হবে।

১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর কুড়িগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। কবিতা, উপন্যাস, নাটক, ছোটগল্প তথা সাহিত্যের সকল শাখায় সাবলীল পদচারণার জন্য তাকে ‘সব্যসাচী লেখক’ বলা হয়ে থাকে। ১৯৬৪ সালে মাত্র ২৯ বছর বয়সে বাংলা একাডেমী পুরস্কার পান সৈয়দ শামসুল হক। এখন পর্যন্ত বাংলা একাডেমি পুরস্কার পাওয়া সর্বকনিষ্ঠ লেখক তিনি।

১৯৫০-এর দশকে প্রকাশিত হয় তার প্রথম উপন্যাস ‘দেয়ালের দেশ’। পরে ‘খেলারাম খেলে যা’, ‘নিষিদ্ধ লোবান’, ‘সীমানা ছাড়িয়ে’, ‘নীল দংশন’, ‘বারো দিনের জীবন’, ‘তুমি সেই তরবারী’, ‘কয়েকটি মানুষের সোনালী যৌবন’, ‘নির্বাসিতা’ এর মতো বিখ্যাত উপন্যাস উপহার দিয়েছেন।

তার বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘একদা এক রাজ্যে’, ‘বৈশাখে রচিত পঙক্তিমালা’, ‘পরানের গহীন ভিতর’, ‘অপর পুরুষ’, ‘অগ্নি ও জলের কবিতা’। ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’, ‘নুরলদীনের সারা জীবন’সৈয়দ শামসুল হকের বিখ্যাত কাব্যনাট্য।

সৈয়দ শামসুল হক গত ১৫ এপ্রিল ফুসফুসের সমস্যা নিয়ে লন্ডনে যান। সেখানে পরীক্ষার পর তার ক্যানসার ধরা পড়ে। গত ১ সেপ্টেম্বর দেশে ফেরার পর তিনি ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button