উপ-সম্পাদকীয়

অপসংস্কৃতির আগ্রাসন ও আমাদের বর্তমান প্রজন্ম

-সফিউল্লাহ আনসারী-
ইদানিং ভারতীয় সংস্কৃতির প্রভাবে আমাদের দেশে পারিবারিক ও সামারজিক ভাবে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন দেশিয় সংস্কৃতির জন্য বড় ধরনের হুমকির কারন হয়ে দাড়িয়েছে।মুসলিম প্রধান দেশ হিসেবে বাংলাদেশের মানুষের ধর্মীয় ও সামাজিক কৃষ্টি-কালচার রক্ষনশীল ও নিজস্ব।কিন্তু ডিস সংস্কৃতি ও ইন্টারনেট কালচার বর্তমানে দেশের গৃহবধু থেকে শুরু করে ছেলে-বুড়োদেরকেই মর্ডানের পাশাপাশি আল্টা-মর্ডান কোন-কোন ক্ষেত্রে অশা লীন ও বেহায়া করে তুলছে।আমরাই স্বগর্বে ডেকে আনছি আমাদের সর্বনাশ,নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারার মতোই আবস্হা আজ দেশীয় সংস্কৃতির।
যার উদাহরন গত ঈদগুলোতে পোষাকের নামে দেশীয় সংস্কৃতির যে ভারতীয় সংষ্করন-মাসাক্কালি,পাখি ড্রেস,কিরনমালা ড্রেস,বর্জ্র্যমালা ড্রেস,ঝিলিক,বুঝেনাসে বুঝেনা !(ভারতীয় নাটক-সিরিয়লের নাম ও নায়িকাদের নাম) সহ ছেলে-মেয়েদের বাহারী নামের পোষাকে আসক্তি।এমনকি এসব ভিনদেশী পোষাকের জন্য আত্বহত্যার মতো ভয়ংকর ঘটনা ঘটছে যা আমাদের জন্য সুখকর তো নয়ই বরং সামাজিক অবক্ষয়।
অপসংস্কৃতির এহেন আগ্রাসন মোটেই দেশ-জনগনের জন্য অশুভ ও পরিতাপের বিষয়।সামাজিক প্রতিরোধ আন্দোলনে এবং রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ না নিলে অদুর ভবিষ্যতে আমাদের বর্তমান ও তরুন প্রজন্ম ভুলে যাবে তার স্বজাতীর সংস্কৃতি ও সামাজিকতা। অশ্লীলতায় ভরপুর ভারতীয় নাটক-সিরিয়ালগুলো নারী-শিশুদের মগজ ধোলাইয়ের পাশাপাশি সংসার জীবনে বপন করছে অশান্তির বীজ। যার কুফল শিশু নির্যাতন,পারিবারকি বন্ধন কমে যাওয়া,আত্বহত্যা,নারীর প্রতি য়ৌনাচারের নামে সহিংসতাসহ বিভিন্ন সামাজিক অবক্ষয়।ক্যাবল নেটওর্য়াকের মাধ্যমে অপসংস্কৃতির এই নগ্নতা এদেশে আমদানি হয়েছিল বিগত নব্বই দশকের দিকে।যা বর্তমানে আমাদের সামাজিক-পারিবারিক ব্যাবস্হার আস্ট্রে-পৃষ্টে জড়িয়ে আমাদেরকে ভুলিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশী ও বাঙালী সংস্কৃতি।এমন ভয়াবহ পরিস্হিতিতে সচেতন মহল ও অভিভাবক সমাজ জাগ্র্রত না হলে বিদেশি,পাশ্চাত্য বিশেষ করে ভারতীয় অপসংস্কৃতি আমাদের দেশে সামাজিক অবক্ষয়ের মাধ্যমে আমাদের বর্তমান ও অনাগত প্রজন্মকে মানুষিক বিকার গ্রস্হ ও স্বল্প বসনাদের আদর্শে তাদেরকে গড়ে তুলতে গিয়ে বারোটা বাজাবে দেশীয় সংস্কৃতির।বিদেশী সিনেমা ও নাটকে যেসকল অশালীন পোষাক-আশাক ও অসভ্য ভাষার ব্যবহার হয় তা আমাদের নয়;নয় বাঙালী সমাজের আচার-অনুষ্ঠান।নৈতিকতাবোধ ও মানুষিক বিকাশ সাধনের জন্য বিকৃত-বেহায়াপনায় ভরপুর এসব ভিনদেশী কৃষ্টি-কালচার সমৃব্ধ অপসংস্কৃতির হাত থেকে মুক্তির পথ খোঁজে সভ্য ও স্বাভবিক দেশীয় সংস্কৃতির বিকাশ জরুরী ও সময়ে দাবী। বিদেশী চ্যানেল বন্ধ করে দেশীয় বাংলা চ্যানেল গুলোকে জনপ্রিয় করা,যারা আমাদের ভাষা আন্দোলন,স্বাধীনতার গৌরবগাথা ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাথে আমাদের তরুন প্রজন্মকে পরিচিত করে এমন কিছু করা উচিত।সচেতন মহলের দাবী আমাদের প্রজন্মকে অপসংস্কৃতি থেকে রক্ষা করুন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button