কানের ভেতর পিঁপড়ার বাসা

ভালুকা নিউজ ডট কম:
ভারতের গুজরাট প্রদেশে শ্রেয়া দেশাই নামে বারো বছরের শিশুর কানে বাসা বেধেছে এক হাজার বৃহদাকৃতির পিঁপড়া। তার বাবা-মা জানায়, প্রতিদিন আনুমানিক দশটি করে পিঁপড়া তার কানের ভেতর থেকে বের হয়ে আসে।
গত বছর আগষ্ট মাসে তাকে একটি স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানকার চিকিৎসকরা জানায় তার কানের ছিদ্রপথে পিঁপড়া খুঁজে পাওয়া গেছে।
তখন তার কান থেকে আনুমানিক এক’শ পিঁপড়া বের করা সম্ভব হলেও কানের ভিতর থেকে যাওয়া পিঁপড়াগুলো এন্ডোস্কোপি ক্যামেরার মাধ্যমে পরীক্ষা করে ডাক্তার তার কানের ভিতর মরে যাওয়া পিঁপড়াগুলো বের করতে সক্ষম হয়।
তার বিচলিত বাবা-মা জানায়, শ্রেয়ার কান থেকে পিঁপড়া বের করার জন্য তারা চিকিৎসকের দেয়া সব পরামর্শই পালন করেছেন কিন্তু কোনভাবেই তার কান থেকে পিঁপড়া বের করা সম্ভব হচ্ছিল না।
নাক, কান গলা বিশেষজ্ঞ জওহর তালসানিয়া বলেন, ‘আমরা আমাদের সাধ্যমত সবকিছু করার চেষ্টা করছি। এমনকি তার এমআরআই এবং সিটিস্ক্যান করে দেখেছি তার কানের ভেতর সবকিছু স্বাভাবিক আছে।
তার কানে কোন প্রকার অস্বাভাবিকতাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি সে কানে কোন ব্যথাও অনুভব করতো না এবং তার কানে কোন প্রকার ক্ষতও খুঁজে যায়নি।
তিনি আরো বলেন, ‘শ্রেয়ার পরিবার খুবই স্বাভাবিক জীবনযাপন করে এবং বেশ স্বাস্থ্যকর পরিবেশেই থাকে। তাই এঘটনার জন্য তার আবাসস্থলকে কোন মতে দায়ি করা যাবে না। তবে এরকম ঘটনা আমাদের চিকিৎসাশাস্ত্রের ইতিহাসে এর আগে কখনো আমি দেখিনি’।
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা পিঁপড়াগুলো কান থেকে বের করার চেষ্টা করছি কিন্তু যেগুলো রয়ে যাচ্ছে সেগুলো আবার নতুন করে বংশবৃদ্ধি করছে। আমরা বিশ্বাসই করতে পারি না যে, পিঁপড়া কানের ভেতর ডিম পারতে পারে কারণ কানের ছিদ্রপথে তেমন পর্যাপ্ত জায়গা থাকে না।
আর এই বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য আমরা তার কানে ও গলায় একটি ক্যামেরা বসিয়েছি দেখার জন্য যে কিভাবে পিঁপড়া তার কানের ভিতর ডিম পারতে পারে।
শ্রেয়ার বাবা সঞ্জয় দর্জির একটি ছোট টেলিভিশন মেরামতের দোকান আছে। তিনি বলেন, তার মেয়ে যখন স্কুলে যেত তখন তার মেয়ের কান থেকে প্রায়েই পিঁপড়া বের হয়ে আসতো।
এই ঘটনা দেখার পর থেকেই তিনি খুব আতঙ্কিত হয়ে যান এবং তাকে দ্রুত সুস্থ করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ের জন্য আমার পক্ষে যা করা সম্ভব আমি তাই করেছি। আমি তাকে সবচেয়ে বড় বড় ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছি কিন্তু সবাই তার সমস্যাটি সনাক্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে।
আমি আশা করি খুব জলদিই সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। তবে আমি তার ভবিষ্যৎ নিয়ে খুবই চিন্তিত তার এই সমস্যা তার পড়ালেখায় বেশ ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। সে খুব মেধাবী কিন্তু সে নিয়মিত ক্লাসে যেতে পারছেনা।
তার এই ঘটনা শোনার পর স্কুলের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা তাকে নিয়ে মজা করছে। আমি চাই তার এই অবস্থার খুব জলদিই একটি সমাধান হোক আর তা না হলে সে তার জীবনের আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলবে’।