বিয়ের আসর থেকে স্কুলে ফিরে এলো সাহসী ছাত্রী মুক্তামনি
গৌরিপুর প্রতিনিধি: আত্মীয় স্বজন ও প্রতিবেশীরা বিয়ে ঠিক করলেও সেই বিয়ের আসর থেকে উঠে এসে বাল্য বিয়ের বিরুদ্ধে সাহসী প্রতিবাদ জানিয়েছে মুক্তা মনি। নিজ মা ও সাংবাদিকদের সহযোগিতায় লেখাপড়ার জন্য সে আবার স্কুলে ভর্তি হয়েছে। স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর মুক্তামনি আনন্দে আত্মহারা। স্বপ্ন দেখছে উচ্চ শিক্ষিত হয়ে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার।
ঘটনাটি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার পৌরশহরের পূর্বদাপুনিয়া এলাকার। ওই এলাকার দরিদ্র পরিবার মৃত খোকন মিয়া ও মোছাঃ বেগমের কন্যা মুক্তামনি (১৩)। মুক্তামনি ২০১৪ সনে প্রাথমিক সমাপনী পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পরের বছর গৌরীপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ট শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছিল। মুক্তা মনি দেখতে সুন্দরী হওয়ায় ৬ষ্ট শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় বিভিন্ন জায়গা থেকে বিয়ের প্রস্তাব আসতে থাকে। আত্মীয় স্বজন ও প্রতিবেশীরা বিয়েতে রাজি হওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছিল মুক্তামনির ওপর। কিন্তু চাপের মুখে নতি স্বীকার া করেনি মুক্তামনি।
এরপরও গত বছর নভেম্বর মাসের শেষের দিকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে ঠিক করা হয় । এসময় আত্মীয় স্বজন ও সমাজের মুখে চুন কালি মেখে প্রচন্ড সাহসীকতার সাথে বিয়ের আসর থেকে উঠে এসে বাল্য বিয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে উঠে মুক্তা। এ ঘটনার পর মুক্তামনির সাথে তার মা ব্যাতিত আত্মীয় স্বজন ও প্রতিবেশীরা কথাবলা বন্ধ করে দেয়।
শনিবার (২৭) সন্ধ্যায় মুক্তামনির মা বেগম গৌরীপুর প্রেসকাবে এসে সাংবাদিক রইছ উদ্দিন ও মশিউর রহমান কাউসারকে ঘটনা সম্পর্কে অবগত করে আকুতি জানায় তার মেয়েকে লেখাপড়ার সুযোগ করে দেয়ার জন্য। পরদিন রবিবার স্থানীয় অগ্রদূত নিকেতনের প্রধান শিক্ষক ম, নুরুল ইসলামের সার্বিক সহযোগিতায় ওই স্কুলে ৭ম শ্রেণীতে ভর্তি করা হয় মুক্তামনিকে। তার হাতে তুলে দেয়া হয় নতুন বই। স্কুলে ভর্তি হতে পেরে ও নতুন বই পেয়ে মুক্তামনির মনে বইছে আনন্দের বন্যা ও মুখে ফুটেছে চাঁদের হাসি । স্বপ্ন দেখছে নতুন দিনের। স্কুলে ভর্তি হতে পারায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে মুক্তামনি বলেন, আমি উচ্চ শিক্ষিত হয়ে সমাজের অন্যান্য নারীদের মত প্রতিষ্ঠিত হতে চাই।