উপ-সম্পাদকীয়

দিন দিন কমছে ফসলি জমি । সফিউল্লাহ আনসারী

 

সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে প্রতিদিন আমাদের চারপাশে কমছে ফসলি জমি।আর এই  ফসলি জমি কমে যাওয়ায় হুমকির মুখে খাদ্য নিরাপত্তা।শুনতে অবাক লাগলেও সত্যিটা এমনই।সারা দেশে অপরিকল্পিত নগরায়ন,শিল্পায়ন,বাড়ী-ঘর নির্মাণসহ একাধীক কারনে বর্তমানে ফসলি জমি উদ্বেগজনক হারে কমে আসছে খুব দ্রুতলয়ে।মৎস চাষের নামে এবং ইট ভাটার কারনে অনেক ফসলি জমি বন্ধি হয়ে যাচ্ছে।সঠিক পরিকল্পনা থাকলে পতিত জমিতে এসব করা যেতো।অদৃশ্য কিছুই না,সবই দৃশ্যমান,অথচ সমযোপযোগী উদ্যোগ গ্রহন না করায় তা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

এরকম বিভিন্ন কারনে জনসংখ্যা বাড়ার সাথেই পাল্লা দিয়ে কমছে আবাদি জমি। আবাদি জমি কমে যাওয়ায় কৃষি উৎপাদন হ্রাস পেয়ে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকিতে পরতে পারে, আশঙ্কা অমুলক নয়।যা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য জীবনের হুমকির কারন হতে পারে।প্রতি বছরই আবাদি জমিতে অপরিকল্পিত ও অনুমোদনের তোয়াক্কা না করেই ঘরবাড়ি নির্মাণ,ক্ষুদ্র-মাঝারি ও বড় শিল্প-কারখানা স্থাপন,ইটের ভাটা,মৎস চাষ,রাস্তাঘাট নির্মানসহ নানা কারণে অনাবাদির তালিকায় চলে যাচ্ছে ফসলি জমি,ব্যাপক হারে।সোথে জীব বৈচিত্রে আসছে পরিবর্তন।কৃষি জমিতে বসবাসকারী অনেক প্রাণীর জীবনও হুমকিতে পড়ছে।

তবে কৃষি সংশ্লীষ্ঠদের মতে-যদি নগরায়ন ও শিল্পাঞ্চলের সঙ্গে সঙ্গে কৃষি জমির একটি সমন্বিত ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা গেলে ফসলি জমি কমার হার অনেকাংশে কমে আসবে।কিছুটা হলেও তুলনামুলক কমবে খাদ্য নিরাপত্তার মতো আশংকা।বাচবে ক্ষুদ্র জীব,কীট-পতঙ্গ।রক্ষা পাবে পরিবেশের ভারসাম্য ।

এসআরডিআই পরিচালিত এক গবেষণায় তথ্যে জানাযায়-১৯৭৬ সালে দেশে ফসলি জমির পরিমাণ ছিল ৯৭ লাখ ৬১ হাজার ৪৫০ হেক্টর।অথচ ১০ বছরে ২০১০ সালে ৬ লাখ ৮৭ হাজার ৬০৪ হেক্টর কমে মোট ফসলি জমির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৭ লাখ ৫১ হাজার ৯৩৭ হেক্টরে।

একটা দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য যেমনি শিল্পায়নের বিকল্প নেই তেমনি বিপুল জনগোষ্টির খাদ্য চাহিদা পুরনের জন্য কৃষিকে কোনভা্বেই ছোট করে দেখার সুযোগ নেই।আমাদের দেশ কৃষি প্রধান দেশ হওয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা অতীব জরুরী।নগরায়ন-শিল্পায়নের পাশাপাশি সরকারের পরিকল্পনার বাস্তবায় ও সঠিক সময়োপযোগি পদক্ষেপ গ্রহন করা সময়ে দাবী। আর এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া দরকার এখনই, না হলে ফসল উৎপাদন একসময় হুমকির মুখে পড়বে,বাড়বে খাদ্য সংকট। অর্থনীতির চাকা সচল রাখতের নানাবিধ জন বান্ধন কর্মসুচির মাধ্যমে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহন করে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি নিত্যনতুন স্থাপনা তৈরিতে সমন্বয় সাধন করে দেশের মূল চালিকাশক্তি কৃষি জমি রক্ষা করাও সকলের নৈতিক দায়িত্ব ।অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বি ও নাগরিক জীবনকে উন্নততর সোপানে পৌঁছাতে শিল্পায়ন ও আবাস নির্মাণ যেমন প্রয়োজন তেমনি কৃষি নির্ভরতাকে বাচিয়ে রাখার জন্য ফসলি ভূমি রক্ষা করাও দরকার।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button