জাতীয়
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার স্থানান্তর হচ্ছে কেরানীগঞ্জে
অবশেষে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোড থেকে প্রায় আড়াইশ বছরের পুরোনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানীগঞ্জে স্থানান্তর হচ্ছে। বুড়িগঙ্গা নদীর পাড়ে কেরানীগঞ্জে নব নির্মিত অত্যাধুনিক এই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার উদ্বোধন করা হচ্ছে রোববার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করবেন। এরপরই চলতি মাসের কোনো একদিন এক সঙ্গে পুরুষ বন্দিদের স্থানান্তর করা হবে নতুন কারাগারে। আর নারী বন্দিদের পাঠানো হবে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে। পর্যায়ক্রমে নেয়া হবে নথিপত্রসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। পরবর্তীতে ঐতিহ্যবাহী এই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার অত্যাধুনিক কারা কমপ্লেক্স, যাদুঘর ও বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
শুক্রবার সকালে কারা অধিদফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক (আইজি-প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, কেরাণীগঞ্জ উদ্বোধন উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
কারা মহাপরিদর্শক বলেন, মূলত বন্দীদের আবাসন সমস্যা নিরসনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারটি কেরানীগঞ্জ স্থানান্তর করা হয়েছে। কারাগারটি জরাজীর্ণ ও মেরামত অযোগ্য। এর বন্দি ধারণ ক্ষমতা দুই হাজার ৬৮৪ জন হলে বর্তমানে সেখানে থাকছেন প্রায় আট হাজার বন্দী। কেরাণীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার নির্মাণ কাজ চলছে। ইতিমধ্যে পুরুষ কারাগার-১ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এটি কাল রোববার প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করার সম্মতি দিয়েছেন। এই কারাগারে বন্দি ধারণ ক্ষমতা চার হাজার ৫৯০জন।
ইফতেখার উদ্দিন বলেন, সাজাপ্রাপ্তদের জন্য কাশিমপুর কারাগার এবং মূলত বিচারাধীন আসামীদের জন্য কেরানীগঞ্জের এ কারাগারটি ব্যবহার হবে। আমাদের যে জনবল রয়েছে তা দিয়ে একসাথে দুই কারাগারের নিরাপত্তা বিধান অসম্ভব। ঢাকা কারাগারে এতো বন্দিদের একদিনে স্থানান্তর করতে আড়াই হাজার প্রিজন ভ্যানের প্রয়োজন, তা সারাদেশেও নেই। তাছাড়া স্থানান্তরকালে রাস্তায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বিধানের বিষয়টিও এখানে জড়িত। তবে সমন্বয় কমিটির সিদ্ধান্ত নিয়ে এপ্রিল মাসেই যে কোন ছুটির একদিন সব বন্দিদের স্থানান্তর করা হবে। আর কাশিমপুর কারাগারে মহিলা বন্দিদের স্থানান্তর করা হবে। কারাগারের অন্যান্য দাফতরিক কাগজপত্র ও আসবাব ধাপে ধাপে স্থানান্তর করা হবে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে কোনকিছুই পরিপূর্ণভাবে শুরু করতে পারি না। যে কোন শুরুরই যন্ত্রণা আছে। প্রাথমিক কষ্টটুকু মেনেই কাজ করতে হবে। ঢাকার বাইরে হওয়ায় স্টাফদের সন্তানদের শিক্ষার ব্যপারেও কষ্ট হবে। খুব শিগগিরই আমরা একটি স্কুল নির্মানের কাজ শুরু করব। কারারক্ষীরাও প্রাথমিকভাবে এ ত্যাগ স্বীকার করতে আগ্রহী।
কারা মহাপরিদর্শক বলেন, নতুন কারাগারে চার হাজার ৫৯০ জন (পুরুষ) বন্দী থাকতে পারবেন। জেলকোড অনুযায়ী বন্দীদের যেসব সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার অধিকার রয়েছে, এর সবই রয়েছে এই কারাগারে। পাশাপাশি কারাগারে অত্যাধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। কারাগারগুলোকে আরো প্রযুক্তিবান্ধব করার পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।
কারাগার নির্মাণে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, নতুন কারাগার নির্মাণ ভিত্তিতে কোনো দুর্বলতা নেই। তবে ফিনিশিং কাজে কিছু ত্রুটি আছে। এতে নিরাপত্তায় কোন সমস্যা হবে না। তারপরও বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটি বিষয়টি দেখছে।
কারাগারে ভেতর মোবাইল ফোনে কথা বলা এবং কৌশলে মাদক দ্রব্য ও মোবাইল ফোন প্রবেশ করার কথা অস্বীকার করতে পারি না উল্লেখ করে সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন বলেন, অভিনব কৌশলে অসংখ্য মোবাইল ফোন ও মাদকদ্রব্য ভেতরে ঢুকানো হয়। অনেক ধরা পড়ে। আমাদের লোকবলের অভাব আছে। তবে বিষয়টি রোধ করার চেষ্টা চলছে। নতুন কারাগারে মোবাইল জ্যামার বসানো হয়েছে। ফলে বন্দিরা আর মোবাইলে কথা বলতে পারবে না। নতুন কারাগারের পাশাপাশি কাশিমপুরেও লাগেজ স্ক্যানার আর পার্সোনাল স্ক্যানার বসানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
জনবল সংকটের কথা জানিয়ে আইজি প্রিজন বলেন, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ৭৫০ কারারক্ষী আছে। এরমধ্যে ২৫০ জনই বন্দিদের চিকিৎসার জন্যে বিভিন্ন হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করেন। এই স্বল্প সংখ্যক কারারক্ষী দিয়ে নিরাপত্তা বিধানে হিমসীম খেতে হচ্ছে। আর মাত্র পাঁচশ কারারক্ষী দিয়ে কেরানীগঞ্জের এতোবড় কারাগারের নিরাপত্তা বিধান দুঃসাধ্য। নতুন কারাগারে আবাসন সমস্যাও রয়েছে। মাত্র তিনশ কারারক্ষী আবাসনের সুবিধা পাবেন। প্রাথমিকভাবে কস্টটুকু তারা মিনে নিতে সম্মত হয়েছেন। তবে পর্যায়ক্রমে আবাসন সমস্যা সমাধান করা হবে। এছাড়া কারা অধিদফতরে ৬৮টি কারাগারের জন্যে মাত্র ৫জন প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা আছেন। তবে কারারক্ষীসহ ৩ হাজার ৭০০ লোকবল বাড়ানোর প্রস্তাবনা দেয়া আছে।
তিনি বলেন, নতুন কারাগারে সাধারণ বন্দিদের জন্যে ছয়টি ভবনের মধ্যে একটির কাজ আংশিক বাকি আছে। বাকিগুলোর কাজ পুরোপুরি শেষ হয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের মধ্যে একটির কাজ আংশিক বাকি আছে।
কারা সূত্র জানায়, ঢাকার কাছে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুরে ১৯৪ দশমিক ৪১ একর জমির ওপর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, কেরাণীগঞ্জ নির্মাণ করা হচ্ছে। ব্যয় বরাদ্দ রয়েছে ৪০৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। ২০০৫ সালে এই কারাগার নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। কাজ শুরু হয় ২০১০ সালে। এখানে দুইটি পুরুষ কারাগার ও একটি মহিলা কারাগার এবং কারাগারের পেরিমিটার দেয়ালের বাইরে ২০০ শয্যার হাসপাতাল, প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ও স্কুল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে। এ হাসপাতালে বন্দীদের পাশপাশি সাধারণ রোগীরাও চিকিৎসা নিতে পারবেন।
পুরুষ কারাগার-১ এ পদ্মা, যমুনা, করতোয়া, বকুল, শাপলা, ও চম্পাকলি নামে ছয়টি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। একানে পাঁচশজন করে ধারণ ক্ষমতার ৬টি বিচারধীন বন্দি ওয়ার্ড, পাঁচশজন ধারন ক্ষমতার দুইটি সাজাপ্রাপ্ত বন্দি ওয়ার্ড, একশজন করে চারটি বিপদজনক বন্দির সেল, ৩০জনের একটি মানসিক ভারসাম্য বন্দি ওয়ার্ড ও ৬০জন ধারণ ক্ষমতার একটি শ্রেণিপ্রাপ্ত (ডিভিশন) বন্দি ভবন। নিরাপত্তায় থাকছে ৪৮টি সিসিটিভি সিস্টেম ও মোবাইল জ্যামার। পুরুষ কারাগার-১ এর ন্যায় নির্মাণ করা হবে পুরুষ কারাগার-২। মহিলা কারাগারের নির্মাণ কাজ চলছে। ইতিমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ শেষ হয়েছে। কারাগারের দক্ষিণ অংশের সীমানা প্রাচীরের কাছে তৈরি করা হয়েছে দক্ষিণমুখী ফাঁসির মঞ্চ। মঞ্চের ওপর ছাউনি রয়েছে। একই মঞ্চে এক সঙ্গে দুজনকে ফাঁসি দেয়া যাবে।
আইজি প্রিজন জানান, নাজিম উদ্দিন রোড থেকে কারাগার চলে যাওয়ার পর সেখানে একটি অত্যাধুনিক কারা কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। গড়ে তোলা হবে একাধিক স্মৃতি যাদুঘর, একটি কনভেনশন সেন্টার ও একটি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট। আর পুরান ঢাকাবাসীর বিনোদনের জন্য দশ একর জমির ওপর গড়ে তোলা হবে একটি পার্ক ও ব্যায়ামাগার। সেজন্য প্রধানমন্ত্রী দফতরের একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করা হয়েছে বলে জানান মহাপরিদর্শক।
পুরান ঢাকার চানখারপুলের নাজিমউদ্দীন রোডে ১৭৬৫ সালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার নির্মাণ করে ব্রিটিশ সরকার। অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী একারাগারের ধারণ ক্ষমতা দুই হাজার ৮২৬ জন। খবর- মানবকন্ঠ
শুক্রবার সকালে কারা অধিদফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক (আইজি-প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, কেরাণীগঞ্জ উদ্বোধন উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
কারা মহাপরিদর্শক বলেন, মূলত বন্দীদের আবাসন সমস্যা নিরসনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারটি কেরানীগঞ্জ স্থানান্তর করা হয়েছে। কারাগারটি জরাজীর্ণ ও মেরামত অযোগ্য। এর বন্দি ধারণ ক্ষমতা দুই হাজার ৬৮৪ জন হলে বর্তমানে সেখানে থাকছেন প্রায় আট হাজার বন্দী। কেরাণীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার নির্মাণ কাজ চলছে। ইতিমধ্যে পুরুষ কারাগার-১ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এটি কাল রোববার প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করার সম্মতি দিয়েছেন। এই কারাগারে বন্দি ধারণ ক্ষমতা চার হাজার ৫৯০জন।
ইফতেখার উদ্দিন বলেন, সাজাপ্রাপ্তদের জন্য কাশিমপুর কারাগার এবং মূলত বিচারাধীন আসামীদের জন্য কেরানীগঞ্জের এ কারাগারটি ব্যবহার হবে। আমাদের যে জনবল রয়েছে তা দিয়ে একসাথে দুই কারাগারের নিরাপত্তা বিধান অসম্ভব। ঢাকা কারাগারে এতো বন্দিদের একদিনে স্থানান্তর করতে আড়াই হাজার প্রিজন ভ্যানের প্রয়োজন, তা সারাদেশেও নেই। তাছাড়া স্থানান্তরকালে রাস্তায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বিধানের বিষয়টিও এখানে জড়িত। তবে সমন্বয় কমিটির সিদ্ধান্ত নিয়ে এপ্রিল মাসেই যে কোন ছুটির একদিন সব বন্দিদের স্থানান্তর করা হবে। আর কাশিমপুর কারাগারে মহিলা বন্দিদের স্থানান্তর করা হবে। কারাগারের অন্যান্য দাফতরিক কাগজপত্র ও আসবাব ধাপে ধাপে স্থানান্তর করা হবে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে কোনকিছুই পরিপূর্ণভাবে শুরু করতে পারি না। যে কোন শুরুরই যন্ত্রণা আছে। প্রাথমিক কষ্টটুকু মেনেই কাজ করতে হবে। ঢাকার বাইরে হওয়ায় স্টাফদের সন্তানদের শিক্ষার ব্যপারেও কষ্ট হবে। খুব শিগগিরই আমরা একটি স্কুল নির্মানের কাজ শুরু করব। কারারক্ষীরাও প্রাথমিকভাবে এ ত্যাগ স্বীকার করতে আগ্রহী।
কারা মহাপরিদর্শক বলেন, নতুন কারাগারে চার হাজার ৫৯০ জন (পুরুষ) বন্দী থাকতে পারবেন। জেলকোড অনুযায়ী বন্দীদের যেসব সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার অধিকার রয়েছে, এর সবই রয়েছে এই কারাগারে। পাশাপাশি কারাগারে অত্যাধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। কারাগারগুলোকে আরো প্রযুক্তিবান্ধব করার পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।
কারাগার নির্মাণে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, নতুন কারাগার নির্মাণ ভিত্তিতে কোনো দুর্বলতা নেই। তবে ফিনিশিং কাজে কিছু ত্রুটি আছে। এতে নিরাপত্তায় কোন সমস্যা হবে না। তারপরও বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটি বিষয়টি দেখছে।
কারাগারে ভেতর মোবাইল ফোনে কথা বলা এবং কৌশলে মাদক দ্রব্য ও মোবাইল ফোন প্রবেশ করার কথা অস্বীকার করতে পারি না উল্লেখ করে সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন বলেন, অভিনব কৌশলে অসংখ্য মোবাইল ফোন ও মাদকদ্রব্য ভেতরে ঢুকানো হয়। অনেক ধরা পড়ে। আমাদের লোকবলের অভাব আছে। তবে বিষয়টি রোধ করার চেষ্টা চলছে। নতুন কারাগারে মোবাইল জ্যামার বসানো হয়েছে। ফলে বন্দিরা আর মোবাইলে কথা বলতে পারবে না। নতুন কারাগারের পাশাপাশি কাশিমপুরেও লাগেজ স্ক্যানার আর পার্সোনাল স্ক্যানার বসানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
জনবল সংকটের কথা জানিয়ে আইজি প্রিজন বলেন, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ৭৫০ কারারক্ষী আছে। এরমধ্যে ২৫০ জনই বন্দিদের চিকিৎসার জন্যে বিভিন্ন হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করেন। এই স্বল্প সংখ্যক কারারক্ষী দিয়ে নিরাপত্তা বিধানে হিমসীম খেতে হচ্ছে। আর মাত্র পাঁচশ কারারক্ষী দিয়ে কেরানীগঞ্জের এতোবড় কারাগারের নিরাপত্তা বিধান দুঃসাধ্য। নতুন কারাগারে আবাসন সমস্যাও রয়েছে। মাত্র তিনশ কারারক্ষী আবাসনের সুবিধা পাবেন। প্রাথমিকভাবে কস্টটুকু তারা মিনে নিতে সম্মত হয়েছেন। তবে পর্যায়ক্রমে আবাসন সমস্যা সমাধান করা হবে। এছাড়া কারা অধিদফতরে ৬৮টি কারাগারের জন্যে মাত্র ৫জন প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা আছেন। তবে কারারক্ষীসহ ৩ হাজার ৭০০ লোকবল বাড়ানোর প্রস্তাবনা দেয়া আছে।
তিনি বলেন, নতুন কারাগারে সাধারণ বন্দিদের জন্যে ছয়টি ভবনের মধ্যে একটির কাজ আংশিক বাকি আছে। বাকিগুলোর কাজ পুরোপুরি শেষ হয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের মধ্যে একটির কাজ আংশিক বাকি আছে।
কারা সূত্র জানায়, ঢাকার কাছে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুরে ১৯৪ দশমিক ৪১ একর জমির ওপর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, কেরাণীগঞ্জ নির্মাণ করা হচ্ছে। ব্যয় বরাদ্দ রয়েছে ৪০৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। ২০০৫ সালে এই কারাগার নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। কাজ শুরু হয় ২০১০ সালে। এখানে দুইটি পুরুষ কারাগার ও একটি মহিলা কারাগার এবং কারাগারের পেরিমিটার দেয়ালের বাইরে ২০০ শয্যার হাসপাতাল, প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ও স্কুল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে। এ হাসপাতালে বন্দীদের পাশপাশি সাধারণ রোগীরাও চিকিৎসা নিতে পারবেন।
পুরুষ কারাগার-১ এ পদ্মা, যমুনা, করতোয়া, বকুল, শাপলা, ও চম্পাকলি নামে ছয়টি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। একানে পাঁচশজন করে ধারণ ক্ষমতার ৬টি বিচারধীন বন্দি ওয়ার্ড, পাঁচশজন ধারন ক্ষমতার দুইটি সাজাপ্রাপ্ত বন্দি ওয়ার্ড, একশজন করে চারটি বিপদজনক বন্দির সেল, ৩০জনের একটি মানসিক ভারসাম্য বন্দি ওয়ার্ড ও ৬০জন ধারণ ক্ষমতার একটি শ্রেণিপ্রাপ্ত (ডিভিশন) বন্দি ভবন। নিরাপত্তায় থাকছে ৪৮টি সিসিটিভি সিস্টেম ও মোবাইল জ্যামার। পুরুষ কারাগার-১ এর ন্যায় নির্মাণ করা হবে পুরুষ কারাগার-২। মহিলা কারাগারের নির্মাণ কাজ চলছে। ইতিমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ শেষ হয়েছে। কারাগারের দক্ষিণ অংশের সীমানা প্রাচীরের কাছে তৈরি করা হয়েছে দক্ষিণমুখী ফাঁসির মঞ্চ। মঞ্চের ওপর ছাউনি রয়েছে। একই মঞ্চে এক সঙ্গে দুজনকে ফাঁসি দেয়া যাবে।
আইজি প্রিজন জানান, নাজিম উদ্দিন রোড থেকে কারাগার চলে যাওয়ার পর সেখানে একটি অত্যাধুনিক কারা কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। গড়ে তোলা হবে একাধিক স্মৃতি যাদুঘর, একটি কনভেনশন সেন্টার ও একটি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট। আর পুরান ঢাকাবাসীর বিনোদনের জন্য দশ একর জমির ওপর গড়ে তোলা হবে একটি পার্ক ও ব্যায়ামাগার। সেজন্য প্রধানমন্ত্রী দফতরের একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করা হয়েছে বলে জানান মহাপরিদর্শক।
পুরান ঢাকার চানখারপুলের নাজিমউদ্দীন রোডে ১৭৬৫ সালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার নির্মাণ করে ব্রিটিশ সরকার। অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী একারাগারের ধারণ ক্ষমতা দুই হাজার ৮২৬ জন। খবর- মানবকন্ঠ