চুরির মালের কথা প্রকাশ হওয়ায় জয় সাহেব অস্থির-রিজভী

ঢাকা : প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের নামে ‘বিভ্রান্তি’ ছড়ানোর অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ অভিহিত করেছে দলটি। একই সঙ্গে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এ মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
বুধবার (৪ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির পক্ষে দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ দাবি জানান। তিনি বলেন, চুরির মালের কথা প্রকাশ হয়ে যাওয়ায় জয় সাহেব অস্থির হয়ে পড়েছেন।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রীপুত্রের নামে ‘বিভ্রান্তি’ ছড়ানোর অভিযোগে মঙ্গলবার বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কোটি টাকার মানহানির মামলা হয়েছে কুমিল্লার একটি আদালতে। কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ফাহাদ বিন আমীন চৌধুরীর আদালতে মামলাটি দায়ের করেন মো. শরিফুল আলম চৌধুরী। শরিফুল আমরা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান মুরাদনগর উপজেলা সভাপতি ও উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক।
বাদীর আইনজীবী এস টি আহমেদ ফয়সাল সাংবাদিকদের জানান, বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে আগামী ২ জুনের মধ্যে কুমিল্লা জেলা তথ্য কর্মকর্তাকে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দিয়েছেন।
বাদীর অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত রোববার (১ মে) ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির জনসভায় খালেদা জিয়া বক্তব্য দেন। বক্তব্যে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের ব্যাংক হিসাবে আড়াই হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ তিনশ মিলিয়ন ডলার জমা থাকার কথা বলেন।
কুমিল্লার ওই মামলা এবং জয়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের লেনদেন প্রসঙ্গে রুহুল কবির রিজভী বলেন, বেগম খালেদা জিয়া মে দিবসের জনসভায় আমেরিকান আদালতের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর পুত্রের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তিনশো মিলিয়ন ডলার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা-এফবিআইয়ের একজন এজেন্টকে ঘুষ দিয়ে এক প্রবাসী বাংলাদেশি তরুণ বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর পুত্রের ব্যাপারে কিছু তথ্য সংগ্রহ করেছেন।
সেখানে দেখা গেছে, সজীব ওয়াজেদ জয়ের একটি অ্যাকাউন্টেই তিনশো মিলিয়ন ডলার তথা আড়াই হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে এতো টাকা লেনদেন সন্দেহজনক। এই টাকার উৎস কী, তা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া জানতে চেয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, এই ঘটনা শুধু দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াই নয়, বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্বের মানুষের মনে প্রশ্ন, জয়ের এই টাকার উৎস কী? এখন এই ঘটনার ব্যাখ্যা ও নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার দায়িত্ব জয়ের, বেগম খালেদা জিয়ার নয়। তার অ্যাকাউন্টে বিপুল পরিমাণ অর্থ যদি বৈধ হয়, তাহলে তা জনসম্মুখে উপস্থাপন করতে সমস্যা না থাকারই কথা। এ নিয়ে সাংবাদিকসহ দেশ-বিদেশের যেকোনো অনুসন্ধানী সংগঠন বা সংস্থাই খোঁজখবর নিতে পারে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্যের পর শেখ হাসিনা তনয় যে বক্তব্য পেশ করেছেন তা এতটাই দুর্বিনীত, রুচি ও শিষ্টাচার বহির্ভূত যে, তাতে রহস্য আরো বেশি ঘনীভূত হয়। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, চুরির মালের কথা প্রকাশ হয়ে যাওয়াতে জয় সাহেব অস্থির হয়ে পড়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হারুন-অর রশিদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, ছাত্রদলের যুগ্ম-সম্পাদক সেলিনা সুলতানা নিশীতা প্রমুখ।