সড়ক দুর্ঘটনায় শ্রমিক নিহতের জের ভালুকায় মহাসড়ক অবরোধ পুলিশের রাবার বুলেট নিক্ষেপ: আহত ৩০

স্টাফ রির্পোটার, ভালুকা নিউজ ডট কম: ময়মনসিংহের ভালুকায় বুধবার সকালে সড়ক দুর্ঘটনায় জিয়াউল রহমান জাকির (২৫) নামে এক মিল শ্রমিক নিহতের জের হিসেবে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে উপজেলার কাঠালী রাসেল মিল এলাকায় প্রায় তিন ঘন্টা অবরোধ করে রাখে বিক্ষোব্ধ শ্রমিকরা। খবর পেয়ে ভালুকা মডেল থানা ও হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এসময় শ্রমিকরা পিছু হটতে না চাইলে পুলিশ বেধম লাঠিচার্জ শুরু করলে শ্রমিকরা সংঘর্ষ ছড়িয়ে পরে। এক পর্যায়ে পুলিশ অর্ধশত রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এতে তিন নারী শ্রমিক গুলিবিদ্ধসহ ৩০ জন আহত হন।
শ্রমিক, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘটনার সময় উপজেলার কাঠালীস্থ রাসেল স্পিনিং মিলের স্যুয়িং সেকশনের শ্রমিক উপজেলার পানিবান্দা গ্রামের নুরু মিয়ার ছেলে জিয়াউর রহমান জাকির সাইকেল যোগে মিলের সামনে রাস্তা পারাপারের সময় ময়মনসিংহ গামী শ্যামলী বাংলা পরিবহনের একটি যাত্রীবাহি বাস তাকে চাপা দিলে তিনি গুরুতর আহত হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে প্রথমে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর তিনি মারা যান।
নিহতের সংবাদ পেয়ে ওই মিলের শ্রমিকরা বিক্ষোব্ধ হয়ে মহাসড়কে নেমে আসে। এ সময় আশপাশের অন্যান্য মিলের শ্রমিকরা মহাসড়কে নেমে আসে এবং ৩/৪ কিলোমিটার সড়ক জুড়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে এবং রাজিব পরিবহণের একটি যাত্রীবাহি বাস ভাঙচুর করে। এ সময় মহাসড়কের দু’পাশে ভরাডোবা থেকে শুরু করে গাজীপুরের মাওনা পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত দীর্ঘ যানযটের সৃষ্টি হয়। ফলে মহাসড়কে চলাচলরত যত্রীবাহি বাস ও অন্যান্য কয়েক’শ পরিবহন আটকা পড়ে। এতে যাত্রীরা চরম দূর্ভোগের শিকার হন।
খবর পেয়ে ভালুকা মডেল থানার ওসি মামুন অর রশিদ, ওসি (তদন্ত) হযরত আলী ও ভরাডোবা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মারুফুর রহমানের নেতৃত্বে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাঠি চার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালায়। এ সময় শ্রমিকরা বিক্ষোব্ধ হয়ে ইটপাটকেল মারা শুরু করলে পুলিশ অর্ধশতাধিক রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে যানচলাচল স্বাভাবিক করেন। এসময় ৩ নারী শ্রমিক গুলিবিদ্ধসহ ৩০ শ্রমিক আহত হন। আহতদের ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ও বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে ভালুকা মডেল থানার ওসি মামুন অর রশিদ সড়ক দুর্ঘটনায় শ্রমিক নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কত রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়েছে, তা হিসেব না করে এই মুমূর্তে বলা যাচ্ছেনা। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত ও যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।