মতামত

স্মৃতিতে : মৃত্যু থেকে ফিরে আসা

——- এস.এম হাবিবুর রহমান মহব্বত

আজ আমার জীবনের ঘটে যাওয়া একটি দুর্ঘটনার কথা বলব। যা শুনলে আপনাদের গা শিউরে উঠবে। গত ১৭ জুলাই ২০১৫ ইং রোজ শুক্রবার সকাল ৭ টা। পবিত্র উদ-উল-ফিতরের আগের দিন। এই দিনটা আমার জীবনে ঘটে গেল এক হৃদয় বিদারক ঘটনা। যে ঘটনা আমার জীবনে এভাবে কখনও ঘটেনি। আমি মুত্যুর কাছাকাছি থেকে ফিরে এসেছি। মৃত্যু কি, তা আমি দেখে বুঝেছি। কিভাবে মানুষের জীবনে মৃত্যু ধাওয়া করে থাকে।
মূল ঘটনা: আমি ১৬ জুলাই বৃহস্পতিবার আমাদের অফিস (দৈনিক আমার সংবাদ) থেকে ইফতার করে নামাজ পরে বাড়ি যাব বলে অফিসের সবাইকে বলে বিদায় নেই। বাসায় গিয়ে আমার ব্যাগ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে রাত পৌনে আটটায় গাবতলী যাবার উদ্দেশ্যে দৈনিক বাংলার মোড়ে এসে গাড়ির উদ্দেশ্যে দাঁড়াই। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকি কিন্তু গাড়ি আসছে না। দু একটি যা আসছিল তাও গেট লাগানো। অনেক ভিড়। কিছুতেই যেতে পারছিনা। প্রায় ৯ টার দিকে আমার পূর্ব পরিচিত একজন সাংবাদিক (বর্তমানে তিনি একটি টিভি চ্যানেলে কর্মরত) তার সঙ্গে একটি বাসে উঠি এবং সিট পেয়ে বসি। কিছুক্ষণের মধ্যে কন্ট্রাক্টর ভাড়া নিতে এলে আমি ল্যাবএইডের কথা বলে দুজনের জন্য ২০ টাকা ভাড়া দেই। এরই মধ্যে সাংবাদিকের সঙ্গে গাড়িতে বসে আমার অনেক কথা হল। রাস্তা যানজট না থাকাতে তাড়াতাড়ি ল্যাবএইডের সামনে পৌঁছে যাই। কিছুক্ষনের মধ্যেই ল্যাবএইডের সামনে গিয়ে দুজনেই নামি। তিনি যাবার আগে আমাকে বললেন, এখান থেকে ৮ নং গাড়িতে গাবতলী যেতে পারবেন। এখানে অপেক্ষা করুন। এই বলেই আমাকে সালাম দিয়ে চলে গেল। আমি বাসের জন্য অপেক্ষা করতে থাকলাম গাবতলী যাব বলে। কিন্তু বাস আর পাই না। রাত ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত কোনো গাড়িতে উঠতে পারলাম না। পড়লাম মহাবিপদে। ভাবতে থাকলাম এদিক দিয়ে আসাটা আমার ভুল হয়েছে। কেন আসলাম, দৈনিক বাংলায় থাকলেই মনে হয় ভাল হতো। সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে পুলিশের কাছে গিয়ে বললাম, ভাই গাবতলী যাব গাড়িতে উঠতে পারছিনা। প্রচুর ভীড় গাড়িতে তা ছাড়া গাড়িও অল্প। আবার যাও দুএকটা আসছে তা সিটিং করে গেট লাগিয়ে। একটা বাসের ব্যবস্থা করে দেন। পুলিশ মনে হয় আমার কথা কর্ণপাত করলেন না। কয়েকবার বলার পর বলল ঠিক আছে গাড়ি আসুক আপনাকে উঠিয়ে দেব। কিন্তু গাড়ি আর আসল না। এদিক ওদিক ঘোড়াঘুড়ি করছি। কি করবো কোন গাড়িতে যাব। ভাবছি আর চেষ্টা করছি গাড়ির সন্ধান পাই কী না। কিন্তু পুলিশ আমাকে উপকার করতে পারলনা। কারণ গাড়ি নাই কি করে করবে। এরই মধ্যে বৃষ্টি শুরু হল। পড়লাম আরও বিপদে। এখন কি করব। ল্যাবএইডের মোড়ে একটি ফুটওভার ব্রীজ আছে তার নিচে গিয়ে দাঁড়ালাম।
বৃষ্টি কমলে গাবতলী যাওয়ার জন্য এদিক ওদিক ছুটে বেড়াচ্ছি। এরই মধ্যে একটি ছেলে এসে বলল ভাই আমিও গাবতলী যাব, দেখেন সিএনজি বা রিক্সায় যাওয়া যায় কিনা। আমি বলি বৃষ্টি হচ্ছে রিক্সায় যাওয়া কষ্ট হবে। সিএনজি হলে ভাল হয়। কিন্তু কোনো সিএনজি ৫০০ টাকার নিচে যাবে না। রিক্সা ওয়ালারাও ভাড়া চাচ্ছে প্রচুর। আবার অনেকে যাবে না বৃষ্টির কারণে। কী করি। সেই ছেলেটি চলে গেল সিএনজিতে। আমি অপেক্ষা করতে থাকলাম। এরই মধ্যে আরো একজনকে পাই। বাড়ি তার যশোরে যাবে গাবতলীতে। সেও বলল ভাই যেভাবে রিক্সা ভাড়া চাচ্ছে তাতে যাওয়াই কষ্টকর। গাড়িতে ভাড়া মাত্র ১০ টাকা। আমি বললাম দুজনে একটি রিক্সা ঠিক করি। সে বলল ঠিক আছে। পড়ে একটি রিক্সা পেলাম ৭০ টাকায় শিশু মেলা শ্যামলী পর্যন্ত যাবে। এরপর যাবে না। কারণ এরপর যানজট। পড়ে শ্যামলী পর্যন্ত গিয়ে ৮ নং গাড়িতে আবার উঠে শেষ পর্যন্ত গাবতলীতে যাই। তখন রাত পৌনে ১২ টা বাঁজে। গাবতলীতে পৌঁছা মাত্রই একটি গাড়ির হেলপার ডাকছে পাটুরিয়া বলে। আমি বলি ভাই ভাড়া কত? বলে ২০০ টাকা। আমি ভাবলাম ঘোড়াঘুরি না করে এই গাড়িতেই যাই। তাড়াতাড়ি যেতে পারব। বাড়ি পৌঁছে সেহেরী খেতে পারব।
৫ মিনিটের মধ্যেই গাড়ি ছাড়ল। পাটুরিয়ার উদ্দেশ্যে। তেমন ঘুম আর আসলোনা বাড়ি যাব এই চিন্তায় অনেকদিন পর। ভাবতে ভাবতে রাত ২টার সময় পাটুরিয়া ঘাটের কাছাকাছি ৬ কিমি দূরে পৌঁছে যাই। ভাবলাম কিছুক্ষণের মধ্যে হয়তো ঘাটে যেতে পারব। ঘাটে গিয়ে সেহেরী খাব। কিন্তু ভাগ্য কত খারাপ। রাত ৩ টা বেজে গেল গাড়ি আস্তে আস্তে এগোতে থাকল। আবার থেমে গেল এভাবে ৪ টা পযর্ন্ত আমাদের ঘাটে আর পৌঁছা হল না। আর সেহেরী খাওয়া হলো না। রোজা থাকা হল না। গাড়ি থেকে নামতেও পারছিনা। কারণ ঘাটের কাছে কোনো হোটেল নাই। যদিও দ্ইু একটা আছে তাও অনেক দূরে। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস বিধাতা লিখেছে। প্রায় সাড়ে ৫ টার সময় আমরা পাটুরিয়া ঘাটে পৌঁছাই। লঞ্চ পার হতে আধা ঘন্টার মত সময় লাগে।
ঘাট পার হয়ে বাস টার্মিনালে গিয়ে একটি মাক্রোবাসে ড্রাইভারকে বলি মাগুরা যাবেন। বলে যাব। বলি ভাড়া কত বলে ৩০০ টাকা। আমার ভাল লাগলোনা, বললাম না যাব না। মাক্রোবাসে ডাকাতি হয় এটা ভেবে বললাম। তারপর সামনের দিকে এগোতে থাকি। কিছুদূর যাওয়ার পর একটা বাসের লোকজন ডাকছে মাগুরা আর ঝিনাইদহ বলে। আমি বললাম ভাড়া কত বলছে সবাই যা দেয় আপনিও তাই দিয়েন। অল্প কয়েকটা সিট আসে উঠে বসেন এখনই ছেড়ে দেব। ভাবলাম গাড়িতে উঠে দেখি কতটি সিট আছে। দরজা দিয়ে গাড়িতে উঠতেই কন্ট্রাক্টর আমাকে ডেকে বলে ভাই আপনি কোথায় যাবেন। আমি বলি মাগুরা। কন্ট্রাক্টর বলে এখানে বসেন একটা সিট আসে ড্রাইভারের পেছনে দ্বিতীয়টা আমি বসতেই একজন বয়স্ক লোক বলল আপনি জানালার পাশে বসেন। কারণ আমার পা লম্বা এই কারণে। আমি বললাম ঠিক আছে। আমি জানালার পাশে বসলাম। একটু পড়ে লোকটি আমার কাছ থেকে উঠে বামপাশে গেটের কাছে এক সিট আলাদা পেয়ে বসে পড়ল।
আমি জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, এখানে ভাল আছি একা একা। বললাম ঠিক আছে। এরই মধ্যে স্বামী-স্ত্রী দুজন বাসে উঠেছে কিন্তু সিট নিয়ে সমস্যা কারণ একটা সিট আমার বামপাশে আর একটা সিট আমার পিছনে কয়েকটা পর খালি আছে। কন্ট্রাক্টর আমাকে বলে ভাই এরা স্বামী-স্ত্রী দুজন আপনি যদি মাঝে ওই সিটে গিয়ে বসেন তাহলে ভাল হয়। আমি বললাম ঠিক আছে। তাদের সুবিধা হলে যাই। বসতে গিয়ে দেখি একটা ছেলে ২৫ বছর হবে (অনুমানিক) সে ঝিনাইদহ যাবে।
এরই মধ্যে গাড়ি ছেড়ে দিল। কিছুদূর যাওয়ার পর কন্ট্রাক্টর এসে ভাড়ার টাকা চাইল আমি ৫০০ টাকা দিয়ে বললাম বাকিটা ফেরত দিতে। আমাকে কন্ট্রাক্টর ২০০ টাকা দিয়ে বলে যে আরো ৫০ টাকা আপনাকে পড়ে দেব। সে টাকা আর পড়ে ফেরত দেয়নি।
এদিকে আমার প্রচ- ঘুম পাচ্ছিল। কারণ সারারাত ঘুমাতে পারিনি। ঢাকা থাকতেও ঠিকমত ঘুমাতে পারিনি কয়েক রাত। এরই মধ্যে হাত সামনের সিটে হাতের ওপর মাথা দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি।
১৭ জুলাই সকাল ৭টা:
যখন আমার ঘুম ভাঙে তখন দেখি গাড়িটি উল্টে গেছে আমার হাত সামনের সিটে খুব টাইট করে ধরা। আর আমার পায়ের নীচে কয়েকজন মানুষ আর আমার সাথে জানালার কাছে যে ছেলেটা তার সারা শরীরে রক্ত। আমি পা টা দ্রুত সরাই, তার পর উঠে যাই। আর পাশের ছেলেটি দুই সিটের মাঝে পড়ে আছে। আমি প্রথমে তাকে টেনে তুলি এরপর সে কোন দিক দিয়ে বের হল আমি বুঝতে পারলাম না। প্রথমে ভেবেছিলাম গাড়িতে মনে হয় আগুন লেগেছে। পরে দেখি না, গাড়িটি খাদে পড়ে গেছে। উল্টে রয়েছে গাড়িটি। চারিদিকে চেচামেচি, কাঁন্নাকাটি, চিৎকারের শব্দ শোনা যাচ্ছে।
পিছনের দিকেও বেশ কিছু লোক দেখতে পেলাম। আর সামনের দিকের কয়েকজন আছে। যেদিকে তাকাই সেদিকেই আফসা আফসা দেখি। কি করবো ভেবে পাচ্ছি না। আমি সামনের দিকে তাকাতেই দেখি ড্রাইভারের সামনের বড় গ্লাসটা ভাঙা। আমি সেদিক দিয়ে বের হয়ে গাড়ির ছাঁদের রডটা ধরেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। জ্ঞান ফিরলে দেখি আমার কাছে ব্যাগ দুটি নেই। আমি বলি যে, আমার ব্যাগ কোথায়। অনেকের ব্যাগ বের করছে কিন্তু আমার ব্যাগ নাই। কিছুক্ষনের মধ্যে সামনের দিকে তাকিয়ে দেখি কিছু ব্যাগ দেখা যায়। কেউ আমাকে বলছে দেখেন এখানে আপনার ব্যাগ থাকতে পারে। গাড়ির ভিতরের সব ব্যাগ আমরা বের করেছি। আমি তাকিয়ে দেখি আমার ব্যাগ দুটা দেখা যায়। আমি ব্যাগ দুটি নিয়ে গাড়ির কাছে এসে বসা মাত্রই আবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।
এরপর যা দেখলাম: যেদিকে তাকাই সেদিকে শুধু মানুষ আর সবার গায়েই রক্ত। কারো হাত কাটা, কারো মাথা ফাটা, পা কাটা, ক্ষতবিক্ষত অবস্থা। কেউ ভাল নেই। সবার গায়েই কম বেশি রক্ত। কারণ গাড়িটি যখন উল্টে খাদে পড়ে যায় তখন সাথে সাথে কেউ বের হতে পারেনি। আর চলন্ত অবস্থায় গাড়ি খাদে পড়ে যায়। অনেক লোক ঘুমিয়ে ছিল কেউ কেউ হয়তো জেগেও ছিল। কিন্তু সবারই কম বেশি কেটেছে। কেউ অক্ষত নেই। এরপর আমি রাস্তায় আসলাম আমাকে কেউ কেউ বলল আপনি হাসপাতালে যান ফরিদপুরে। এদিকে অ্যাম্বুলেন্স এসেছে দুই তিনটি। আহতদের নিয়ে যাচ্ছে ফরিদপুর হাসপাতালে। আমাকে বললেও আমি যাইনি। আমি বললাম আমি ভাল আছি আমি যাব না। আমাকে পারলে মাগুরার গাড়িতে উঠিয়ে দিন। আমি ভাবলাম যদি মারা যাই তাহলে যেন বাড়ি গিয়ে মায়ের কাছেই মরতে পারি। তাই আমি ফরিদপুর যাইনি। আমার মন টানছিলনা হাসপাতালে যেতে। এখানে মরলে কেউ আমাকে দেখতে পাবেনা।
একটু স্বাভাবিক হয়ে একটু রাস্তা দিয়ে এগোতে থাকি দেখি রাস্তার পাশেই বড় একটি ফুট পার্ক মনে হলো নতুন এটা। জায়গাটির নাম ফরিদপুরের কানাইপুর এলাকায় অর্থাৎ রাজবাড়ীর মোড় থেকে কানাইপুরের মাঝামাঝি জায়গাটি। এদিকে আমাদের বাড়ির এক ভাবী আমাকে ফোন দিয়েছিল আমি রিসিভ করিনি। সে ভাবছে আমাকে তো ভোরেই যাওয়ার কথা কিন্তু সকাল ৭টা বাজে তখনও আমি কেন বাড়ি যাইনি ভেবে আমাকে মোবাইল করে। আমি প্রথমে না ধরলে কিছুক্ষণ পড়ে আবার মোবাইল করলে তখন বলি যে আমি এক্সিডেন্ট করেছি।
এর মধ্যে তিনি আমাদের বাড়ি গিয়ে আমার ছোট বোনকে কাঁদতে কাঁদতে বলে আমার এক্সিডেন্টের ঘটনা। একটু পড়ে মেঝ ভাই আমাকে মোবাইল করে। আমি বলি আপনি স্ট্যান্ডে থাকেন আমি আসছি। এরপর আমার মোবাইল বন্ধ হয়ে যায় চার্জ না থাকার কারণে।
এদিকে আমি অনুভব করতে থাকি আমার বুকের ডান দিকে ব্যথা করছে। আমি বুঝতে পারি আমার বুকে আঘাত লেগেছে। সিটে আঘাত লাগতে পারে অনুভব করলাম কারণ বুকে ব্যথা করছিল খুব। মনে হচ্ছিল আজ আমি আর বাঁচবো না। দেহ থেকে কোনো কিছু বের হয়ে যাচ্ছে। মৃত্যু আমাকে ডাকছে। চোখে অন্ধকারের মত লাগছিল। মুখে কোনো ভাষা ছিল না, স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। একটু স্বাভাবিক হয়ে আস্তে আস্তে রাস্তা দিয়ে ফুটপার্কের দিকে হাটছি।
এরপর আমি ফুটপার্ক এর বিপরীতে একটা ছোট হোটেল দেখতে পাই। হোটেলটিতে গিয়ে এক মগ পানি নিয়ে মুখ ধুই। তারপর দেখি আমার সারা গায়ে রক্ত আর রক্ত। আমি খুঁজতে থাকলাম আমার কোথাও কেটেছে কিনা। দেখলাম কাটেনি। তখন ব্যাগ থেকে কাপড় বের করে আমি হোটেলের ভিতর বসেই নিজের গায়ের কাপড় পরিবর্তন করি। তারপর একটু স্বাভাবিক হলেই অটোরিক্সাতে কানাইপুর আসি।
কানাইপুর থেকে আরেকটি অটোরিক্সা করে আমি কামারখালী পৌঁছাই। কামারখালী গিয়ে আমি আমার সঙ্গে থাকা একটি ছেলের মোবাইল দিয়ে আমার আরেক ভাইকে ফোন করে কামারখালী স্ট্যান্ডে আাসতে বলি।
এ কথা বলে আমি ওয়াপদা বাস স্ট্যান্ডে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি আমার ছোট ভাই মায়াব আমার জন্য দাঁড়িয়ে আছে। ও বলে যে মেঝ ভাই বাগাট চলে গেছে, বলি ফিরে আসতে বল, পড়ে মেঝ ভাইকে ফিরে আসতে বলে। আবার মধূখালী থেকে আমার বোনের ভাসুরের ছেলে মুকুল কানাইপুর গেছে আমার খবর শুনে। পড়ে সেও ফিরে আসে আমি বাড়ি চলে এসেছি খবর পেয়ে। রায়নগরের নতুন বাড়ি গিয়ে দেখি আমাদের বাড়িতে অনেক মানুষ। আমার এক্সিডেন্টের কথা শুনে আমাকে দেখার জন্য এসেছে। সবাই আমাকে শান্তনা দিয়েছে তাড়াতাড়ি ভাল হয়ে যাবে। এলাকার সকলে আমার জন্যে দোয়া করেছে।
খবর পেয়ে ডাক্তার আমাদের বাড়ি আসলে বুকের ব্যথার কথা বলি। তখন ডাক্তার আমাকে ইনজেকশন দেয় এবং কিছু ওষুধ দেয় নিয়মিত খাবার জন্য। ওষুধগুলো খেয়ে এখন আমি ভালই আছি। বর্তমানে আমি সুস্থ এবং ভাল আছি। ঠিকমত অফিস করছি।
সেই দুঃসহ দুর্ঘটনার স্মৃতি আমাকে আজও তাড়া করে বেড়ায়। আমি গাড়িতে চড়তে ভীষণ ভয় পাই। বাসে চড়লেই আমার মৃত্যুর কাছাকাছি থেকে ফিরে আসার কথাটি মনে পড়ে। আজ প্রায় একটি বছর হতে চলেছে। কিন্তু ভুলতে পারিনি সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনার কথা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button