বাংলাদেশে জঙ্গি হামলার পর সতর্ক দাতারা
ভালুকা নিউজ ডট কম; ডেস্ক: দেশে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার ঘটনায় সতর্ক দৃষ্টি রাখছে উন্নয়ন সহযোগীরা। গত ১ জুলাই গুলশানে সন্ত্রাসী হামলার পর নিরাপত্তা নিয়ে দাতাগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সবাইকে রেস্টুরেন্ট, বার, শপিং ও জনাকীর্ণ এলাকা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন দাতা সংস্থার কর্মকর্তারা স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে গেলেও ঢাকার বাইরের সব ধরনের মিশন স্থগিত রেখেছেন। বিদেশি বড় কোন মিশন এই মুহূর্তে বাংলাদেশে আসছে না বলেও দাতা সংস্থাগুলোর বাংলাদেশ অফিস সূত্রে জানা গেছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সূত্র জানায়, গুলশানের জঙ্গি হামলায় মেট্রোরেল প্রকল্পের ৭ জাপানি কর্মকর্তা নিহত হওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই একটা উদ্বেগ সৃষ্টি হওয়ার কথা। কিন্তু এটা সাময়িক। পরিস্থিতির উন্নতি হলে সব আগের মতো চলবে। এর মধ্যে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ব্যাঘাত ঘটবে না। এ ঘটনার পর বিশ্বব্যাংক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি), জাইকাসহ বেশ কয়েকটি সংস্থাকে নিরাপত্তার বিষয়ে আশস্ত করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
ইআরডির সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেসবাহ উদ্দিন বলেন, এর আগে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়ে জাপান সরকারের আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থা-জাইকার মিশন স্থগিত রেখেছিল। ওই সময়ে নিরাপত্তার বিষয়ে ‘বিশেষ উদ্যোগ’ নেওয়ায় পরে স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরে আসেন তারা। এ ঘটনায পর জাপান আমাদের সঙ্গে আছে বলেও ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে। তিনি বলেন, দাতা গোষ্ঠীরা এ বিষয়গুলো সম্পর্কে বেশ সচেতন। কিন্তু এতে উন্নয়ন প্রকল্পে কোন প্রভাব পড়বে না।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জঙ্গি হামলার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। রফতানি ও বিনিয়োগ মুখ থুবড়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। দাতাগোষ্ঠীরা কেবল অর্থ দিয়েই সহযোগিতা করে না, তারা কারিগরি সহায়তাও দিয়ে থাকে। এ জন্য সংস্থার কর্মীদের বাংলাদেশেই থাকতে হয়। জীবনের নিরাপত্তা না থাকলে তারা স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশে অবস্থান করবেন না। তবে কোনো কোনো দাতাগোষ্ঠী বাংলাদেশের এমন বিপদের সময় পাশে থাকারও আশ্বাস দিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা আবাসিক মিশনের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন জানান, বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে অর্থমন্ত্রী বরাবর নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগের বিষয়টি জানানো হয়েছে। ডোনার হিসেবে বাংলাদেশের এমন পরিস্থিতিতে উদ্বেগের কথা জানাবেন এটিই স্বাভাবিক। আপাতত পরিস্থিতি শান্ত না হওয়া পর্যন্ত মিশন ও চলাফেরায় সতর্ক খাকতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এডিবির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, রোববারও উন্নয়নে বাংলাদেশের সঙ্গে ২২শ’ কোটি টাকার বড় ঋণ চুক্তি হয়েছে। এটি চলমান প্রক্রিয়া। তবে সাম্প্রকিত ঘটনাবলি এডিবি পর্যবেক্ষণ করছে। বর্তমান অবস্থার উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত আমরা সতর্ক হয়ে চলাফেরা করছি।
প্রসঙ্গত, গত ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলায় ২০ জন বিদেশি মারা যান। নিহতদের মধ্যে সাতজন জাপানি নাগরিক ছিলেন। এছাড়া ঈদুল ফিতরের দিন কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে টহলরত পুলিশের উপর সন্ত্রাসী হামলায় এক হামলাকারীসহ ৪ জন নিহত হয়।