জাতীয়

স্থগিতাদেশে নির্বাচনের সুযোগ পেতে পারেন তারেক!

ভালুকা নিউজ ডট কম; ডেস্ক: অর্থ পাচারের মামলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সাত বছরের কারাদণ্ড হওয়ায় পরবর্তী নির্বাচনে ‘অযোগ্য’ হয়ে পড়েছে। তবে একটাই পথ খোলা রয়েছে এই মামলায় আপিল বিভাগ থেকে তাঁকে স্থগিতাদেশ নিতে হবে, অথবা নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে হবে।

এদিকে এই সাজা না হলে তারেক লন্ডনে পলাতক অবস্থায়ই নির্বাচন করতে পারতেন। তা না হলে তারেক রহমান পরবর্তী জাতীয় সংসদসহ সব ধরনের নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিতে পারবে না বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান। নির্বাচনী আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ আইনের ১২ ধারায় প্রার্থীর যোগ্যতা-অযোগ্যতা অংশে বলা হয়েছে, ফৌজদারি আইনে দ-প্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। রাষ্ট্রপতি ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন আইনেও একই কথা বলা হয়েছে।

বাংলাদেশে সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ফৌজদারি অপরাধে কেউ দুই বছর বা বেশি সাজা ভোগ করলে এবং সাজা ভোগের পর পাঁচ বছর পার না হলে সেই ব্যক্তি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

সংবিধান বিশেষজ্ঞ আইনজীবী শাহদীন মালিক জানান বলেন, তারেক রহমানের এখন নির্বাচন করার সুযোগ নেই বললেই চলে। ফৌজদারি মামলায় হাইকোর্টের রায়ের পর একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আবেদন করতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে ‘বিলম্ব মার্জনার আবেদন’ করেও আপিল করার সুযোগ থাকে।

আরেক আইনজীবী বলেছেন, তারেক কয়েক দিন জেল খাটার পর যদি তাঁর সাজা মওকুফও করা হয়, সে ক্ষেত্রেও পরবর্তী পাঁচ বছর নির্বাচন করার সুযোগ থাকছে না।

বিএনপি একটি মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছে। বর্তমান সংসদকে ‘অবৈধ ও অগণতান্ত্রিক’ উল্লেখ করে দলটি তত্ত্বাবধায়ক বা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাচ্ছে। সংবিধান অনুযায়ী পরবর্তী নির্বাচন হবে ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে যেকোনো দিন।

তবে নির্বাচন যখনই হোক না কেন, সেই নির্বাচনে অংশ নেওয়াটা তারেকের জন্য অনিশ্চিত হয়ে গেল। রায়ের কারণে দেশের বাইরে অবস্থান করে পলাতক থেকে তারেকের পক্ষে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেল।

কয়েকজন আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ বলেছেন, তারেকের পরবর্তী নির্বাচনে অংশ নেওয়াটা অনেকগুলো ‘যদি’ ও ‘কিন্তু’র ওপর নির্ভর করছে। তাছাড়া নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের জন্য তারেকের যা করা উচিত, সেটা বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় তাঁর পক্ষে করা সম্ভব নয় বলেই মনে করেন তাঁরা। ফলে পরবর্তী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে আইনি কিছু সুবিধা তারেক রহমানের জন্য ‘কাগুজে সুবিধা’ বলেই মনে হবে।

আইনজীবীরা বলেন, নির্বাচনে ‘যোগ্য’ হতে হলে তারেককে দেশে ফিরে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে হবে। নিয়মিত আপিলে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে হবে। অথচ নির্বাচনের আগে এসে আপিল করলে আপিল বিভাগ থেকে হাইকোর্টের রায় স্থগিত করাতে হবে।

রায় স্থগিত না হলে তারেক নির্বাচন করতে পারবেন না। তবে যখনই আপিল করার চিন্তা করা হোক না কেন, তারেককে আগে আত্মসমর্পণ করে জেলে যেতে হবে। বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের দাবি, তারেক জেলে যেতে ভয় পান না। কেননা, রাজনীতি করলে জেলে যেতে হতেই পারে।

ওই আইনজীবীরাই বলছেন, বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় এই ঝুঁকি তারেক নেবেন না বলেই তাঁরা জানেন। ফলে পরবর্তী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ তাঁর থাকছে না।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, ‘সময় হলে’ তারেক দেশে ফিরে আপিল করবেন। তখন দেখানো হবে, এই মামলা সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে করা হয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button