সৌদি আরবে আটকা পড়েছে অর্ধলক্ষ শ্রমিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নির্মাণ খাতে দুর্দশার কারণে সৌদি আরবে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের অর্ধলক্ষ শ্রমিক আটকা পড়েছে। ভারত ও পাকিস্তান সরকার নিজ দেশের শ্রমিকদের জন্য সৌদি আরবে আশ্রয় শিবির খুলেছে। ফিলিপিনো শ্রমিকদের জন্য ম্যানিলা কর্তৃপক্ষ আপত্কালীন অর্থসহায়তার উদ্যোগ নিয়েছে।
তেলের মূল্যপতনের কারণে সৌদি নির্মাণ খাতে ধস নেমেছে। চলতিবছর নির্মাণ খাতে কার্যাদেশ ৫১ শতাংশ কমেছে। বাজেট ঘাটতি সীমিতকরণ ও ‘ভিশন ২০৩০’ মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে সৌদি কর্তৃপক্ষ নির্মাণ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিল পরিশোধে সময় নিচ্ছে। এ অবস্থায় সংকটাপন্ন কোম্পানিগুলো বিপুল সংখ্যক শ্রমিক ছাঁটাইয়ে বাধ্য হচ্ছে।
সৌদি আরবের বৃহত্তম নির্মাণ প্রতিষ্ঠান সৌদি বিন লাদেন গ্রুপ (এসবিজি) বছরের প্রথম থেকে এ পর্যন্ত ৭৭ হাজার বিদেশী শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়া ১২ হাজার স্থানীয় শ্রমিক ছাঁটাই করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এসবিজি জানিয়েছে, চাকরিচ্যুত শ্রমিকরা বেতন ও আনুষঙ্গিক সুবিধাদি পেয়েছেন। সাধারণ কার্যাদেশ কমার পাশাপাশি এসবিজির জন্য বাড়তি বিপত্তি হয়েছে সৌদি সরকারের নিষেধাজ্ঞা। মক্কায় ক্রেন দুর্ঘটনার কারণে সৌদি সরকার প্রতিষ্ঠানটির সরকারি দরপত্রে অংশগ্রহণের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
আরব নিউজ জানিয়েছে, দ্বিতীয় বৃহত্তম কোম্পানি সৌদি ওজের প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক ছাঁটাই করেছে। স্থানীয় ও বিদেশী মোট ৩১ হাজার শ্রমিক বকেয়া বেতনের দাবিতে এ কোম্পানির বিরুদ্ধে সৌদি শ্রম মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। জিও টিভি জানিয়েছে, সৌদি ওজের কনস্ট্রাকশনের কয়েকশ শ্রমিক সাত মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে শনিবার জেদ্দায় বিক্ষোভ করেছেন।
ফিলিপাইনের ওভারসিজ ওয়ার্কার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (ওডব্লিউডব্লিউএ) তথ্যমতে, সে দেশের ২০ হাজার নির্মাণ শ্রমিক সৌদি আরবে কর্মচ্যুত হয়ে আটকা পড়েছেন। এসব শ্রমিককে ফিলিপাইন সরকার ৪২৫ ডলার (২০ হাজার ফিলিপিনো পেসো) করে আপত্কালীন অর্থসহায়তা দিচ্ছে। চাকরিচ্যুত যেসব শ্রমিক বেতন ও অন্য সুযোগ-সুবিধা ছাড়াই দেশে ফিরেছেন, ফিলিপাইন সরকার তাদেরও সমপরিমাণ অর্থসহায়তা দিচ্ছে।
ফিলিপাইনের প্রবাসী কর্মসংস্থান দফতর সৌদি আরবের নয়টি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের ফিলিপিনো শ্রমিকদের অর্থসহায়তা দিচ্ছে। এসবিজি ও সৌদি ওজেরের পাশাপাশি কয়েকটি নির্মাণ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানও এর মধ্যে রয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, সৌদি আরবে আটকে পড়া শ্রমিকদের খাদ্য, ওষুধ ও আশ্রয় দিতে বিশেষ কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পাকিস্তানের প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক সৌদি আরবে আটকা পড়েছেন বলে দেশটির পার্লামেন্টারি কমিটিকে জানানো হয়েছে।