জাতীয়

বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা

ঢাকা: সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার প্রেক্ষিতে গার্মেন্টস শিল্প অধ্যুষিত এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কারখানায় আসা শ্রমিকদের মালপত্র বা খাবার যথাযথ পরীক্ষা করে প্রবেশ করতে দেয়া এবং এ জন্য মেটাল ডিটেক্টরসহ আর্চওয়ে ব্যবহার করতে কারখানা মালিকদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে সব কারখানার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা বসানোর কথা বলা হয়েছে।

এদিকে যেসব কারখানা বা বায়িং হাউসে একাধিক বিদেশী নাগরকি কর্মরত, সেসব স্থানে সার্বক্ষণিক পুলিশের উপস্থিতি নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়া গাজীপুর, সাভার, আশুলিয়া ও নারায়ণগঞ্জসহ অন্যান্য শিল্পাঞ্চলে মালিক-শ্রমিকদের নিয়ে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস বিরোধী সভাও করা হবে। সভায় সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের সচেতন করা হবে। এসব সভায় শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নুসহ শিল্পাঞ্চল পুলিশের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।

এ প্রসঙ্গে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, এই মুহূর্তে গার্মেন্টস এলাকায় যাতে কোন ধরনের আন্দোলন না হয় সেজন্য মালিক ও শ্রমিক উভয়পক্ষকে সজাগ থাকার অনুরোধ করা হয়েছে। কারণ কোন আন্দোলনের মাধ্যমে জঙ্গিবাদীরা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করার সুযোগ নিতে পারে। এ ব্যাপারে সরকার যেমন সজাগ আছে, তেমনি মালিক-শ্রমিকদেরও সজাগ থাকতে হবে।

তিনি বলেন, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরিতে চলতি আগস্ট মাসে শিল্পাঞ্চলগুলোতে আলাদা আলাদা সভা করা হবে। এসব সভায় শ্রমিকদের জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সচেতন করা হবে। প্রতিমন্ত্রী জানান, নিরাপত্তা জোরদারে শ্রমিকদের মালামাল বা খাবার পরীক্ষার জন্য মেটাল ডিটেক্টরসহ আর্চওয়ের ব্যবহার এবং কারখানায় পর্যাপ্ত পরিমাণ সিসি ক্যামেরা বসানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তৈরি পোশাক শিল্পের ইমেজ নষ্ট করতে নাশকতা সৃষ্টির মত যড়যন্ত্র যাতে কেউ না করতে পারে, এ ব্যাপারে সরকার যথেষ্ট সজাগ রয়েছে বলে তিনি জানান।

শিল্পাঞ্চল পুলিশের মহাপরিচালক আব্দুস সালাম বলেন, পোশাক খাতে কর্মরত বিদেশী নাগরিকদের নিরাপত্তার যেন কোন ঘাটতি না থাকে, এজন্য আমরা নতুনভাবে কাজ শুরু করেছি। একাধিক বিদেশী নাগরিক কর্মরত আছেন, এমন প্রতিষ্ঠানে সার্বক্ষনিক পুলিশের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হবে। এছাড়া বিদেশী ক্রেতাদের নিরাপত্তা দেয়ার লক্ষে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সার্বক্ষনিক যুক্ত করার কাজ শুরু হয়েছে বলে তিনি জানান। পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, বিমানবন্দর থেকে ক্রেতাদের কর্মস্থল কিংবা বাসায় পৌঁছে দেয়া এবং কাজ শেষে ফের বিমানবন্দরে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করবে নিরাপত্তা কর্মীরা। প্রতিদিন এ রকম যত ফোর্স লাগবে, আমরা তা দিতে প্রস্তুত আছি।

গার্মেন্টস খাতে নিরাপত্তা বাড়াতে নানামুখী পদক্ষেপ নেয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানান তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান। তিনি বলেন, বিদেশী ক্রেতাদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে শিল্পাঞ্চল পুলিশ।বিজিএমই’র সাথে সমন্বয় করে তারা এই কাজটি করছে।কারখানায় আর্চওয়ে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে বলে তিনি জানান। বাসস

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button