ভালুকা-গফরগাঁও সড়কের বেহাল দশায় জনদুর্ভোগ চরমে
মোঃ আসাদুজ্জামান সুমন, বিশেষ প্রতিনিধি: ভালুকা-গফরগাঁও সড়কের বেহাল দশায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারন করেছে। ঈদে ঘরে ফেরা মানুষ সীমাহীন শুধু ভোগান্তি পোহাচ্ছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আধা-ঘন্টার সড়কটি পাড়ি দিতে বর্তমানে সময় ব্যায় হচ্ছে দু’থেকে আড়াই ঘন্টা। যেন দেখার কেউ নেই তারপরও এই অবস্থাতেই চলেছে ছোট বড় যানবাহন। সংস্কার হচ্ছে হবে সেটার নাম সংস্কার না হয়ে সেটার নাম লোটপাট হলে ভাল হতো বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। অনতিবিলম্বে সংস্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঠিক দতারকির মাধ্যমে রাস্তাটির সংস্কার চায় এলাকাবাসি।
ভালুকা-গফরগাঁও সড়কের বেহাল দশায় যাত্রী দূর্ভোগের কথা বলে বুঝানো কঠিন। কেবল ভুক্তভোগীরাই জানেন সড়কটিতে যাতায়াতের কি কষ্ট ও বিরম্বনা। ২১কি.মি সড়কটি মাত্র আধা ঘন্টা বা একটু বেশী সময়ে পাড়ি দেয়ার কথা থাকলেও বর্তমানে সময় লাগছে দুই থেকে আড়াই ঘন্টা। সড়কটিতে অসংখ্য গর্তে পড়ে প্রতিনিয়তই বিকল হয় গাড়ি, প্রায় প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। জেলা সদর কিংবা রাজধানীর সাথে যোগাযোগের জন্য দু’উপজেলার একমাত্র রাস্তা এটি ফলে বলার অপেক্ষা রাখেনা রাস্তাটি কতোটা গুরুত্ব বহন করে।
ভালুকা ও গফরগাঁওয়ের বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার মানুষ প্রতিক্ষণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাস, পিকআপ বা টেম্পু যোগে ঢাকা, ময়মনসিংহ সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়ত করেন ওই সড়ক হয়ে। চলাচল করে পার্শ্ববর্তী কিশোরগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষও।এ ছাড়াও প্রতিদিন বালিসহ অন্যান্য মালামালবাহী অসংখ্য ট্রাক, পিকআপ সীমাহীন ঝুঁকির মধ্যে যাতায়ত করে সড়কটিতে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতাধীন ভালুকা থেকে গফরগাঁও পর্যন্ত ওই সড়কটির প্রায় সবটুকুর সিলকুট, কার্পেটিং উঠে খানা-খন্দক ও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে বেশ কয়েক বছর আগ থেকেই। বর্তমনের অবস্থা এতই নাজুক যে বলে বুজানোটাই দুষ্কর। অসুস্থ্য মানুষের যাতায়াত করা তো দূরের কথা এই পথে কোন সুস্থ্য মানুষ চলাচলেও অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। এরপরও বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় অপারগ হয়ে প্রতি মুহুর্তেই দুর্ঘটনা আশংকা ও মৃত্যু ঝুঁকি নিয়েই ওই সড়ক হয়ে যানবাহন চলাচল করতে হয় যাত্রী সাধারণকে।
ভালুকা-গফরগাঁও সড়কে চলাচলকারী বাস চালক শফিকুল ভালুকা নিউজ ডট কমকে জানায়, ভালুকা থেকে গফরগাঁয়ের দূরত্ব মাত্র ২১কিলোমিটার। এই রাস্তটুকু যেতে প্রায় দুই থেকে সোয়া দুই ঘন্টা সময় ব্যয় করতে হয়। রাস্তাটি যানচলাচল অযোগ্য হওয়ায় গাড়ির স্টিায়ারিংএ বসে সর্বদাই আতংকের মাঝে থাকতে হয়। কখন গর্তে পড়ে গাড়ি বিকল অথবা ঝাকি খেয়ে রাস্তার পাশে খাদে পড়ে য়ায়।
ভালুকা থেকে নিয়মিত গফরগাঁও যাতায়তকারী এক স্টোডিও ব্যাবসায়ী রফিকুল ইসলাম জানান, সড়কটির কি যে অবস্থা তা বলে বুঝানো যাবেনা। সড়কটি দিয়ে একদিন আসা যাওয়া করলে পর দিন আর যেতে মন চায়না। এরপরও আমরা অসংখ্য সরকারী, বেসরকারী চাকুরীজীবি, ব্যবসায়ী সীমাহীন কষ্ট শিকার হয়ে ওই সড়কে প্রতিদিন যাতায়াত করি।
উপজেলার টুংরাপাড়া গ্রামের রিক্সা চালক আবদুর রাজ্জাক ভালুকা নিউজ ডট কমকে জানান, ওই রাস্তায় রিক্সা চালাইয়া সংসার চালাইতাম। কিন্ত সড়কের অবস্থা এতই খারাপ যে এক ক্ষ্যাপ দিলে সারা দিন আর রিক্সার পেডেলে পাও দিবার মনে ধরেনা।
উপজেলার ধীতপুর গ্রামের ভ্যান চালক উসমান আলী জানান, আগে সারাদিনে বিভিন্ন মাল লইয়া কয়েকটা ক্ষ্যাপ দিতাম। আর অহন একটা ক্ষ্যাপ লইয়া গেলেই জানডা বাইর অইয়া যাইবার চায়। ওই সড়কের নিয়মিত যাত্রী অসীত নন্দী ভানু,হেলাল আহাম্মেদ খান, সাজ্জাদুল ইসলাম সজীব, শহিদুল ইসলাম মৃধাসহ অনেকেই জানান, বছর তিনেক আগে ওই সড়কের সংস্কার কাজ শুরু হয়। কিছু কাজ করার পর অজ্ঞাত কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়।
এ বিষয়ে সওজ’র সংশ্লিষ্ঠ এক কর্মকর্তার সাথে কথা হলে তিনি ভালুকা নিউজ ডট কমকে জানান, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করে বিভাগীয় প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হয়ে আসলে প্রয়োজনীয় মেরামত কাজ সম্ভব হবে। এখন কেবল বিভাগীয় রুটিন মেইন্টেনেন্স এর মাধ্যমে সড়কটির সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন,এ সড়কটির যে অবস্থা তাতে রুটিন মেইন্টেন্যান্স করে এ সড়কটি টিকিয়ে রাখা কঠিন। ড্যাবলপম্যান্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল(ডিপিপি) অনুমোদন ছাড়া এ সড়কটির স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়। এ লক্ষ্যে সওজ সংশ্লিষ্ঠ দফতর থেকে প্রয়োজনীয় প্রস্তাবনা অনেক আগেই পাঠানো হয়েছে।