বিভাগীয় খবররাজশাহী

রাবি শিক্ষিকার কক্ষ থেকে ‘সুইসাইড নোট’ উদ্ধার

রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আকতার জাহানের মরদেহ তার কক্ষ থেকে উদ্ধারের পর সেখান থেকে ‘সুইসাইড নোট’ ও কীটনাশকের বোতল উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার রাত ৮টার দিকে ওই শিক্ষিকার কক্ষ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবন থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

রাতে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘ঘরের বিছানার মশারির ভেতরে আকতার জাহানের মরদেহ পড়ে ছিল। সেখান থেকে একটি কীটনাশকের বোতল এবং সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে।’

তিনি জানান সুইসাইড নোটে শিক্ষিকা আকতার জাহান উল্লেখ করেছেন, ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। শারীরিক ও মানসিক চাপের জন্য আত্মহত্যা করলাম। সোয়াদকে যেন তার বাবা কোনভাবেই নিজের হেফাজতে নিতে না পারে। যে বাবা সন্তানের গলায় ছুরি ধরতে পারে সে যে কোন সময় সন্তানকে মেরেও ফেলতে পারে বা মরতে বাধ্য করতে পারে। আমার মৃতদেহ ঢাকায় না নিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেয়ার অনুরোধ করছি।’

নোটটি তার হাতের লেখা কিনা তা যাচাই করা হচ্ছে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।

আকতার জাহান জলি ঢাকার মহাখালী ডিওএইচএস এলাকার মৃত ফোরকান আলী মিয়ার কন্যা। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাতিল সিরাজ শুভ জানান, কয়েক দিন থেকে ওই শিক্ষককে দেখা যাচ্ছিল না। শুক্রবার দুপুরে শিক্ষকের ছেলে অন্য শিক্ষকদের মুঠোফোনে জানান, তিনি তাঁর মাকে মুঠোফোনে পাচ্ছেন না। এরপর বিষয়টি অন্য শিক্ষকেরা জানার পর জুবেরী ভবনে গিয়ে দেখেন, ভেতর থেকে দরজা বন্ধ।
suicide_note-la20160909225606
এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, পুলিশ ও বিভাগের শিক্ষকেরা গিয়ে

বিকেল সাড়ে চারটার দিকে দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। ঘরে মশারির ​ভেতর শোয়া অবস্থায় শিক্ষককে পাওয়া যায়। পরে তাঁকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দায়িত্বরত চিকিৎসক মাহিনুল ইসলাম বলেন, ‘তাঁকে সোয়া পাঁচটার দিকে আমার কাছে আনা হয়। তাতে দেখে মনে হয়েছে যে নিয়ে আসার অনেক আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর সঠিক কারণ ময়নাতদন্ত ছাড়া বলা সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।

বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক মশিহুর রহমান বলেন, ‘কক্ষ ভেঙ্গে প্রবেশ করে তার মুখের চারপাশে একধরনের পদার্থ দেখতে পাই। সম্ভবত ফেনা জাতীয় পদার্থ। তবে সেটা আসলে কি তা ময়না তদন্ত ছাড়া বলা সম্ভব নয়।’

বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আকতার জাহান ব্যক্তিগত কিছু সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন। বেশ কিছু ডিপ্রেশন ছিল। আর সম্প্রতি তার ছেলেকেও তিনি রাজশাহী থেকে ঢাকাতে ভর্তি করিয়েছিলেন। সেটার কারণেও মনে এক ধরনের কষ্ট কাজ করত। তবে তিনি এসব কষ্ট খুব কমই শেয়ার করতেন।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button