ভুল অপারেশনে প্রসূতির মৃত্যূ ঘটনায় _ভালুকার তাহমিনা হাসপাতাল সিলগালা তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা

মাহমুদুল হাসান ফোরাত,বিশেষ প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের ভালুকা পৌরসদরে অবস্থিত তাহমিনা জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়গনিস্টিক সেন্টারে সিজার করাতে এসে ডাক্তারের ভুল অপারেশনে প্রসূতি মৃত্যূ ঘটনায় হাসপাতালের মালিকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে ভ্রাম্যমান আদালত হাসপাতালটি সিলগালা করে দেন। এ সময় হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা, নোংড়া পরিবেশ ও মেয়াদুত্তীর্ণ ঔষধ রাখার দায়ে এক কর্মচারীকে ৫ দিনের সাজা দেয়া হয়। হাসপাতালে প্রসূতি মৃত্যূ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ভ্রাম্যমান আদালত ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে পৌরসদরে অবস্থিত তাহমিনা জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়গনিস্টিক সেন্টারে উপজেলার সাতেঙ্গা গ্রামের আলী আকবর মানিকের স্ত্রী আছমা খাতুনের সিজারিয়ান অপারেশনে কন্যা সন্তান জন্ম দেয়ার পর তিনি মারা যান। হাসপাতালের মালিক ডাক্তার. মোশারফ হোসেন, ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ডা. কায়কোবাদ ওই সিজারিয়ান অপারেশন করেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় নিহত আছমা খাতুনের পিতা উপজেলার ধীতপূর গ্রামের বাসিন্দা বীরমুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আবু মিয়া বাদী হয়ে মডেল থানায় হাসপাতালের মালিক ডা. মোশারফ হোসেনের নাম উল্লেখ করে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা (নম্বর-৯) দায়ের করেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার(৬অেেক্টাবর) দুপুরে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল আহসান তালুকদার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আফরোজা আখতার তাহমিনা জেনারেল হাসপাতালে অভিযান চালান। এ সময় হাসপাতালটি সিলগালা করে দেয়া হয় এবং অব্যবস্থাপনা, নোংড়া পরিবেশ ও মেয়াদুত্তীর্ণ ঔষধ রাখার দায়ে হাসপাতালের কর্মচারী উপজেলার সজনগাঁও গ্রামের আনিছ উদ্দিনের ছেলে সাইফুল ইসলামকে ৫ দিনের সাজা প্রদান করে জেল হাজাতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. একরাম উল্লাহ জানান, ডা. কায়কোবাদ এ্যানেস্থেসিয়ার ডাক্তার নন। শুনেছি, তিনি নিয়ম বর্হিভূত ভাবে ছুটি না নিয়েই তাহমিনা জেনারেল হাসপাতালে অপারেশনের রোগীকে অজ্ঞান করেছেন। তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্টেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল আহসান তালুকদার জানান, ক্লিনিক পরিচালনার জন্য যা যা দরকার তার কোনটিই তাহমিনা জেনারেল হাসপাতালে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া হাসপাতালে চরম অব্যবস্থাপনা, নোংড়া পরিবেশ ও মেয়াদুত্তীর্ণ ঔষধ পাওয়া যাওয়ায় এক কর্মচারীকে ৫ দিনের সাজা দেয়া হয়েছে। হাসপাতালে প্রসূতি মৃত্যূ ঘটনায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) আফরোজা আখতারকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি ঘটন করা হয়েছে এবং ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট প্রদানের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।