স্বাস্থ্য চিকিৎসা

৫৭ বছর ধরে ফ্রি চিকিৎসা দিচ্ছেন ডা. মান্নান

গৌরীপুর প্রতিনিধি: মানুষ মানুষের জন্য জীবন জীবনের জন্য কিংবা সেবা মহত্তের লক্ষণ এমন বাণীগুলো এখানে যেন সত্য। নিয়মিত ভাবে বিনামূল্যে ৫৭ বছর ধরে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন প্রবীণ চিকিৎসক ডা. আ. মান্নান (৮০)। সেবায় যেন তার ক্লান্তি নেই।
ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌর শহরের নয়াপাড়ায় তার চিকিৎসালয়। সকাল থেকেই চলে তার রোগীসেবা। ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দেয়া সৌজন্য ওষুধ দিয়ে দেন অসুস্থদের। সারা জীবন মানবসেবা দিলেও রাখেননি হিসাব। তবে গড়ে দৈনিক ৭৫ জন হলে ৫৭ বছরে প্রায় ১৫ লাখ মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন তিনি। জীবনে সরকারি ছুটি আর উৎসবের দিনেও চিকিৎসা বন্ধ করেননি।
গৌরীপুরের ইতিহাস ও ঐতিহ্যে গ্রন্থের লেখক রণজিৎ কর বলেন, তিনি শুধু বিনামূল্যে ব্যবস্থাপত্র দেননি, অনেককে ওষুধ ক্রয়ের টাকাও দিয়েছেন। তিনি প্রকৃত অর্থেই একজন সমাজ হৈতষী।
জানা যায়, উপজেলার বোকাইনগর ইউনিয়নের শেখ আব্দুল করিম ও শেখ নেকজান বিবির পুত্র আ. মান্নান। শিক্ষার সনদে জন্ম তারিখ ২ জানুয়ারি ১৯৩৬। আর.কে উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৫৩ সালে ম্যাট্রিক পাস করেন। ঢাকার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এমবিবিএস পাস করে ১৯৬০ সাল থেকে চিকিৎসা সেবা পেশা শুরু করেন। মায়ের আদেশ পালন করতেই তিনি জন্মভূমি ছেড়ে সরকারি চাকরি বা দূরে চিকিৎসা সেবা দিতে যাননি। দাম্পত্যজীবনে তিনি ৫ কন্যা ও ৩ পুত্রের জনক।
ডা. আব্দুল মান্নান বলেন, ডাক্তার মানেই সেবা। যারা আজ ডাক্তার হচ্ছেন, তাদের সেবার মনোভাব শূন্যতায় পৌঁছে যাচ্ছে। নতুনদের ডাক্তারদের দায়িত্ব কর্তব্য সম্পর্কে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। তাই নতুন প্রজন্মের ডাক্তারদের জন্য তিনি লিখেছেন ‘বাংলাদেশের চিকিৎসা বিভ্রাট ও প্রতিকার’ নামক একটি বই।
গৌরীপুর উপজেলা ঘোষণার পূর্বে তিনি ঈশ্বরগঞ্জ থানা পরিষদের মেম্বার নির্বাচিত হন। ১৯৬৪ সালে গৌরীপুর পৌরসভার কমিশনার ও ১৯৭৭ সালে পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টিও প্রার্থী হিসাবে লাঙল প্রতীক নিয়ে তিনি নির্বাচন করেছেন।
পরিশেষে তিনি বলেন, জীবনের সুস্থ্যতার শেষ মূহুর্তপর্যন্ত যেন মানুষের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যেতে পারি আপনারা সেই দোয়া করবেন। সে সাথে এলাকার চিকিৎসা সেবার মান আরও উন্নত হউক সেই আশাবাদ ব্যাক্ত করেন এই প্রবীণ চিকিৎসক।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Check Also
Close
Back to top button