আন্তর্জাতিক

দামামা বাজছে সৌদি-ইরান যুদ্ধের!

সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের কাছে গত শনিবার ভূপাতিত করা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটি ইরানের তৈরি বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন বিমান বাহিনীর জ্যেষ্ঠ এক কমান্ডার বলেছেন, ক্ষেপণাস্ত্রটিতে ইরানের সাঙ্কেতিক চিহ্ন রয়েছে এবং সেটি ছোড়া হয়েছে ইরান থেকেই।

মার্কিন বিমান বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ডের দক্ষিণ পশ্চিম এশিয়া বিষয়ক কমান্ডার জিফ্রে হ্যারিগায়ান এই দাবি করেছেন। শুক্রবার তিনি বলেন, গত শনিবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের প্রধান বিমানবন্দর লক্ষ্য করে ধেয়ে আসা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটি ইরানের তৈরি। বিমানবন্দরের কাছে ভূপাতিত করা ক্ষেপণাস্ত্রটিতে ইরানের সাঙ্কেতিক চিহ্ন রয়েছে।

সৌদি নৌ ও আকাশপথে নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও এই ক্ষেপণাস্ত্র কীভাবে ইয়েমেনে পৌঁছেছে সেব্যাপারে জানতে তদন্ত চলছে বলেও জানান জিফ্রে। ক্ষেপণাস্ত্র হামলার এই ঘটনা প্রমাণ করে, ইয়েমেন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর সক্ষমতা অর্জন করেছে ইরান, দাবি মার্কিন এই কর্মকর্তার। তবে ঠিক কোন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র এই হামলায় ব্যবহার করেছে ইরান সেব্যাপারে নির্দিষ্ট তথ্য দিতে অস্বীকার করেছেন তিনি।

এদিকে, রিয়াদে ভূপাতিত ওই ক্ষেপণাস্ত্র ইরানের তৈরি বলেই দৃঢ় বিশ্বাস সৌদি ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের। এমনকি উভয় দেশের রাজনীতিকরাও ইরানের তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র রিয়াদে আটকের দাবি করেছেন। তবে এ ব্যাপারে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি তারা।

বিস্তারিত তথ্য না দিয়ে গত সপ্তাহে সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ক্ষেপণাস্ত্রটির উদ্ধারকৃত ধ্বংসাবশেষে নিশ্চিত হওয়া গেছে, এটির উৎপাদনকারীর ভূমিকায় আছে ইরানি শাসকরা। এদিকে, সৌদি ও যুক্তরাষ্ট্রের দাবির সঙ্গে সুর চড়িয়েছেন পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই রিয়াদ সফররত ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাঁক্রো। তিনিও কোনো ধরনের প্রমাণ উপস্থাপন করা ছাড়াই বলেছেন, ক্ষেপণাস্ত্রটি অবশ্যই ইরানের।

ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য একের পর এক অভিযোগ আনা হচ্ছে ইরানের বিরুদ্ধে; তবে তেহরান এই হামলার সঙ্গে কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। এই অভিযোগকে ধ্বংসাত্মক, দায়িত্বজ্ঞানহীন, উসকানিমূলক এবং ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়ে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, এই হামলা ছিল ইয়েমেনে সৌদি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইয়েমেনিদের স্বতঃপ্রণোদিত।

মন্ত্রণালয়ের এই বিবৃতিতে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির মন্তব্যের প্রতিধ্বনি উঠে এসেছে। তিনি বলেছেন, এটির জন্য আসলে রিয়াদই দায়ী। কেননা সৌদি আরবের বোমা বর্ষণ থেকে দেশকে রক্ষার জন্য লড়াই করছে ইয়েমেনি যোদ্ধারা।

বুধবার ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, নিজ দেশে বোমা হামলার প্রতিক্রিয়া ইয়েমেনিদের কীভাবে জানানো উচিত? সেজন্য কী নিজ অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি তারা (ইয়েমেনিরা) পাবেন না? সৌদি জোটকে উদ্দেশ্য করে রুহানি বলেন, আপনি আগে বোমা বর্ষণ বন্ধ করুন; এরপর দেখুন ইয়েমেনিরা এ ধরনের হামলা আর চালাবে না।

সূত্র : আরটি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button