শিরোনামহীন

অপুকে শাকিবের ডিভোর্স দেয়ার আসল গোমর

অনলাইন: এবার ঢালিউড কুইন অপু বিশ্বাসকে তার স্বামী ঢাকাই চলচ্চিত্রের কথিত সুপার স্টার শাকিব খানের ডিভোর্স দেয়ার আসল গোমর ফাঁস হয়ে গেছে। আর অজান্তেই সেই গোমর ফাঁস করে দিলেন অপু নিজেই। আজ বুধবার গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, আসলে জয়ের জন্ম নিয়েই শাকিবের সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতি ঘটে। সন্তানের জন্ম হোক এটি শাকিব চায়নি। জয়ের জন্মের আগে শাকিবের আপত্তির মুখে ৩ বার অ্যাবরশন করাতে হয়েছে তাকে। তিনি আরও বলেন, জয় যখন গর্ভে আসে তখন অ্যাবরশন করানোর জন্য আমাকে  ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে পাঠায় শাকিব। সেখানকার চিকিৎসক জানান, যেহেতু আগে ৩ বার অ্যাবরশন হয়েছে আর নতুন করে কনসেপ্টের সময় ৪ মাস হয়ে গেছে সেহেতু তখন অ্যাবরশন করানোটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
ঢালিউড কুইন বলেন, এরপরও শাকিব আমাকে কলকাতা পাঠায় অ্যাবরশন করানোর জন্য। সেখানে শাকিব তখন শিকারি ছবির শুটিং করছিল। শাকিব তার চাচাতো ভাই মুনিরকে দিয়ে আমাকে কলকাতার একটি হাসপাতালে পাঠায়। সেখানকার চিকিৎসকরাও অ্যাবরশন ওই সময় ঝুঁকিপূর্ণ জানিয়ে তা করতে অস্বীকার করেন। তখন বাধ্য হয়েই আমি সন্তান জন্মদানের সিদ্ধান্ত নেই। আর এতেই শাকিব আমার ওপর খেপে যায়। তার সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। সে আমার সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দেয় এমন কি আমার মোবাইল নাম্বারও ব্লক করে দেয়। এতে মুনিরের মাধ্যমে শাকিবের সঙ্গে আমার যোগাযোগ চলতে থাকে। যে কোনো বিষয়ে শাকিবের অনুমতি নিতে মুনিরের মাধ্যমে তাকে জানিয়ে আসছি।
অপু বলেন, শাকিবের কারণে আমি আমার নাম অপু ইসলাম খান বলে প্রকাশ করতে পারিনি। কারণ বিয়ের ব্যাপরটি ৮ বছর ও জয় গর্ভে আসার পর থেকে টিভি চ্যানেলে তা প্রকাশ করা পর্যন্ত দেড় বছর শাকিবের নির্দেশে বিয়ে ও সন্তানের বিষয়টি গোপন রাখতে হয়েছে। আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, পাসপোর্ট থেকে শুরু করে সব জায়গায় অপু বিশ্বাস নাম রয়ে গেছে। এসব বদলাতে তো সময়ের দরকার। শাকিব আমার সঙ্গে কথা বলে সব ঠিক করলে এক্ষেত্রে আর কোনো সমস্যা হওয়ার কথা ছিল না। এখন সব ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে শাকিব ও জয়কে নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে চাই।
শাকিবকে ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার অনুরোধ জানিয়ে অপু বলেন, না হলে আমার আর কোনো পথ থাকবে না। প্রয়োজনীয় যা করার সবই করতে হবে আমাকে। তিনি বলেন, আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চাইছি। কারণ ধর্মান্তরিত করে বিয়ে করার পর আজ আমাকে শাকিব তালাক দিতে চাইছে। আমি এখন কোথায় গিয়ে দাঁড়াব। আমার সম্প্রদায় তো এখন আমাকে আর স্বাভাবিকভাবে মেনে নেবে না। তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত সহনশীল ও সুবিবেচনাপ্রসূত মনের মানুষ। তার সহমর্মিতা অতুলনীয়। আমি দেশের একজন প্রথম শ্রেণির নাগরিক। শাকিবের একরোখা সিদ্ধান্তে আমার জীবন এখন বিপন্ন। প্রধানমন্ত্রীর সদয় হস্তক্ষেপই এই দুর্বিষহ অবস্থা থেকে আমাকে মুক্ত করতে পারে। মানবাধিকার ও নারী সংগঠনগুলোকেও পাশে চান তিনি।
অপু বিশ্বাস বলেন, সেলিব্রেটি হলেও আমার সামাজিক মর্যাদা রয়েছে। ডিভোর্সের মতো একটি ন্যক্কারজনক সিদ্ধান্ত কখনো মেনে নেওয়া যায় না। তার কথায়, সংসারে ঝগড়া, ঝামেলা থাকা অস্বাভাবিক কিছু নয়। শাকিবের সিদ্ধান্ত মেনে নিতাম যদি একই ধর্মের হতাম। আমাকে ও জোর করে ধর্মান্তরিত করেছে, বিয়ে করেছে। তাই তার এই অমানবিক সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই মেনে নেব না।
অপু বলেন, যদিও এখন পর্যন্ত ডিভোর্সের কোনো চিঠি পাইনি তারপরও বিষয়টি শুনে অবাক হয়েছি। কারণ গত মাসের ২৮ তারিখে সন্তান জয়কে নিয়ে শাকিবের বাসায় গিয়েছি। জয়কে শাকিবের কাছে রেখে দুদিনের জন্য গ্রামের বাড়ি বগুড়া গিয়েছি। শাকিবের মা, বাবাকে বলেছি আমি নামাজ, রোজা, হজ আদায় করব আর শাকিবের সঙ্গে সুখে সংসার করব। তারাও আমার কথায় সম্মত হয়েছিলেন। এরপর এমন কী ঘটনা ঘটল যে, সে আমাকে ডিভোর্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল।
অপুকে ডিভোর্স দেয়া বিষয়ে শাকিবের সেই ২ কারণের জবাব দিতে গিয়ে বিস্ময়সূচক কণ্ঠে নায়িকা বলেন, যে দুটি কারণ দেখিয়ে আমাকে ডিভোর্স লেটার পাঠানো হয়েছে সেসব সত্যিই আমার কাছে বোধগম্য নয়। জয়কে তালাবন্দি করা সম্পর্কে তিনি বলেন, আমার শারীরিক অবস্থা বেশ খারাপ থাকায় আমি আব্রামকে রেখে যেতে বাধ্য হয়েছিলাম। যদিও জয়কে নিয়েই আমার ভারত যাওয়ার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু তাকে দেখাশোনার জন্য আমার বাসায় সেলিনা আক্তার (শেলী) নামে যে মেয়েটি থাকে তার ভারতীয় ভিসার মেয়াদ ছিল না। তাই বাধ্য হয়ে একদিনের জন্য আমি একাই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়ার জন্য ভারতে যাই। এবং ডাক্তার দেখানোর পরদিনই আবার ফিরে আসি।
ভারতে যাওয়ার আগে শাকিবের এক কাজিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন জানিয়ে এই চিত্রনায়িকা বলেন, কিন্তু তিনি ওই সময় ব্যাংককে শাকিবের সঙ্গে ছিলেন। শারীরিক অবস্থা খারাপ না থাকলে আমি দ্রুত চলে যেতাম না। এটা ডিভোর্সের কোনো ইস্যু হতে পারে না। তাছাড়া একদিনের জন্য ভারত গেলেও আব্রামকে দেখাশুনা করার জন্য আমি বাসার কাজের মেয়েসহ আমার কাজিনকে রেখে গিয়েছিলাম। বয়ফ্রেন্ড প্রসঙ্গে অপু বিশ্বাস বলেন, কথিত বয়ফ্রেন্ড বলে নায়ক বাপ্পিকে ঘিরে আমাকে নিয়ে যে মন্তব্য করা হচ্ছে এটা শুনে আমি বিস্মিত হয়েছি। আমি চিকিৎসা করাতে ভারতে গিয়েছিলাম, কোনো বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে না। এটা কেন সাজানো হচ্ছে আমি জানি না। আর বাপ্পির কথা এখানে কিভাবে এলো। বাপ্পি তো আমার জুনিয়র। আমাকে দিদি ডেকে সে সবসময়ই সম্মান করে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button