কাচিনাগ্রামীণ কৃষিপ্রাণের বাংলাদেশবিভাগীয় খবরভালুকা উপজেলাময়মনসিংহরাজৈসারা দেশসারা ভালুকাহবিরবাড়ি

ভালুকায় বালি দিয়ে খাল ভরাট করায় ৮০ হেক্টর জমির ধান পানির নীচে !

 ভালুকা উপজেলার কাচিনা ইউনিয়নের বাটাজোর ও কাচিনা গ্রামে নির্মানাধীন টি ভি এস ফ্যাক্টরী কর্তৃক খাল ভরাট করায় বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে ৪/৫ টি গ্রামের হাজার হাজার মন বোরো ধান পানির নীচে তলিয়ে গেছে। পানির নীচে থাকায় ধান কাটতে পারছেন না ফলে ধানে শিকর গজানোর সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে কৃষকরা আশংকা করছেন।

কাচিনা ও বাটাজোড় গ্রামের কৃষকদের মধ্যে- ছফির উদ্দীন জানান তার দেড় একর, শামছুল হক ২ একর জমির ধান প্রায় এক ফুট পানির নীচে তলিয়ে গেছে। আমজাদ আলীর ২ একর, শাহাবদ্দীন ভান্ডারীর ৩ কাঠা ধান ও বাড়ীতে পানি উঠেছে, শাহ জাহান মিয়ার ২২ কাঠা, নেহাজ আলীর ৩ কাঠা, জসীম উদ্দীনের ১০ কাঠা, মজিবর রহমানের ৯ কাঠা, আশরাফ উদ্দীনের এক একর পানির নীচে, জুলহাস উদ্দীনের ৪ কাঠা,শামছুদ্দীনের ২ একর পানির নীচে, মোজাম্মেল হকের ৮ কাঠা, সিদ্দিকুর রহমানের ৮ কাঠা, জালাল উদ্দীনের ৩ একর এক ফুট পানির নীচে, চাঁন মিয়ার ৩ একর এক ফুট পানির নীচে,নজরুল ইসলামের ৮ কাঠা, আব্দুল কদ্দুসের ২ একর, আফাজ ফকিরের ২ একর, জুলহাস ফকিরের ১৫ কাঠা সহ শত শত কৃষকের বোরোধান জলাবদ্ধতায় নষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়াও আফতাব উদ্দীনের দুটি পুকুর ডুবে যাওয়ায় তার ৪/৫ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে বলে জানান। পাশে রুহুল আমিনের ৭/৮ টি পুকুরের পার ডুবু ডুবু অবস্থায় ঝুকির মধ্যে রয়েছে।
উপজেলার কাচিনা-বাটাজোর এলাকায় নির্মিতব্য ওই ফ্যাক্টরি ও স্থানীয় লোকজনের ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ ও বাধ দিয়ে মাছ চাষ করায় এ জলাবদ্ধতা, কাচিন, পালগাঁও, তামাট,কাদিগড়, ঢাকুরিয়া ও পাড়াগাঁ গ্রামে বোরো ধান ক্ষেত তলিয়ে প্রায় ৮০ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হওয়ার পথে বলে জানিয়েছেন, ওই এলাকার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো: আব্দুল হক ।
ওই এলাকার কৃষক সমাজের প্রতিনিধি মোজাম্মেল হক জানান, ভালুকার বন খীরু নদীর মল্লিকবাড়ী হতে সালদাহ নামে একটি অতি পুরানো খাল কাদিগড়, তালাব,পালগাঁও, কাচিনা-বাটাজোর সড়কের সেতুর নীচ দিয়ে দক্ষিনে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর হয়ে তুরাগ নদীতে মিলেছে। এই এলাকার বর্ষার পানি নিষ্কাশনের একমাত্র খালটি সম্প্রতি টিভিএস কোম্পানী কর্তৃক রাস্তার দক্ষিন অংশে বিশাল এলাকা জুড়ে ফসলি জমিতে বালি ভরাট করায় উজানের কাদিগড়, পালগাঁও,তামাট,ঢাকুরিয়া,কাচিনা ও বাটাজোর গ্রামের আংশিক এলাকাজুড়ে বৃষ্টির পানি জমে বিশাল জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে ওই সব গ্রামে কয়েক হাজার একর জমির উঠতি বোর ধান পানির নীচে তলিয়ে যায়।
কাচিনা ইউপি চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান লিটন জানান, সাময়িকভাবে পানি নিস্কাশনের কাজ চলছে, আশা করা যায় খুব শীঘ্রই এ অবস্থা থেকে রেহাই মিলবে। তবে স্থায়ী ব্যাবস্থা গ্রহন সময় সাপেক্ষ।
ভালুকা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার পাল জানান, কাচিনা-বাটাজোর ছাড়াও উপজেলার রাজৈ,ভাটগাঁও এলাকায় প্রায় ৪০/৫০ হেক্টও বোরো ধানের জমি পানিতে তলিয়ে আছে। পানিবন্ধির কারন হিসেবে তিনি অতি বৃষ্টি ও ফ্যাক্টরি ও বিভিন্নভাবে খাল ভরাট হওয়াকে দায়ী বলছেন। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা করে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করছেন বলেও তিনি জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ কামাল, জানান জলাবদ্ধতার বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, কাচিনা ইউপি চেয়ারম্যান ও সংশ্লীষ্টদের দ্রুত ব্যাবস্থা নিতে বলা হয়েছে। দ্রুত পানি নিষ্কাশন করা যায় তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button