গ্রামীণ কৃষিপ্রাণের বাংলাদেশ

ফরিদপুরে লালমি’র বাম্পার ফলন হয়েছে।। বিক্রি হবে ৩ কোটি টাকা

ফরিদপুর: ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলায় চলতি বছর লালমি বাম্পার ফলন হয়েছে। রমজান মাসে লালমি বিক্রি করে ভালো দাম পাওয়ায় বেশ খুশি চাষীরা। লালমি বিক্রির টাকা দিয়ে ছেলে-মেয়েদের ঈদের পোশাক ক্রয় করবেন চাষীরা। ফরিদপুরে উৎপাদিত লালমি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। অল্প সময়ে অধিক লাভ কেবল লালমি চাষেই সম্ভব বলে জানালেন কৃষি বিভাগ।

সারাদিন রোজা রাখার পর লালমি জুস দিয়ে ইফতারের তুরনা হয় না। লালমি’র জুস ঠান্ডা হওয়া রোজাদারদের লালমির প্রতি আগ্রহ বেশী থাকে। আর সেকারণে রমজান মাসকে সামনে রেখে প্রতিবছরের ন্যায় চলতি বছরেও সদরপুর উপজেলায় ব্যাপক হারে লালমি চাষ করেছেন চাষীরা। রোজার শুরু থেকেইে লালমি বাঙ্গির বাজারজাত শুরু হয়েছে। চাষীরা এখন মাঠ থেকে লালমি বাঙ্গি তোলা এবং বাজারজাত করতে ব্যস্তসময় পার করছেন। চাষীদের সাথে মাঠে কাজ করছে কৃষাণীরাও।

সদরপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় লালমি চাষ ব্যাপক ভাবে হয়ে থাকে। লাভ ভাল হওয়ায় প্রতিবছর রমজানকে টার্গেট করে লালমি চাষকরে চাষীরা। লালমি-বাঙ্গি বিক্রি করে ভালো দাম পাওয়ায় দিনের পর দিন কৃষকেরা ঝুঁকছেন লালমি চাষে। বর্তমানে সদরপুর উপজেলার ১০টিগ্রামে চাষ হচ্ছে লালমি। এখান কার উৎপাদিত লালমি বাঙ্গি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে।

কৃষক নুরু বলেন, ফলন ভাল হয়েছে। বাজারে দামও ভাল পাচ্ছি। এর উপর নির্বর করে আমাদের জীবিকা। ঈদের কেনাকাটাও এই লালমি বিক্রির টাকায় হয়। এখানকার লালমি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের চাহিদা পুরন করে থাকে। সরকারী সহযোগিতা পেলে আমরা আগামীতে আরও বেশী চাষ করতে পারব।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে চলতি বছর প্রায় ৬৪০ হেক্টোর জমিতে লালমির আবাদ হয়েছে। চারা রোপনের ৪৫দিন পর থেকে লালমি তোলা যায়। এক বিঘা জমিতে খরচ ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা আর বিক্রয় হয় ৫০ থেকে ৬০ টাকা বিক্রয় করা সম্ভব।

সদরপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. ফরহাদুল মিরাজ বলেন, লালমি স্বল্প সময়ে একটি লাভ জনক ফসল। রমজান মাসকে সামনে রেখে লালমি চাষ করে থাকে। লালমি ইফতারে বিশেষ ভুমিকা রাখে। বীজ রোপনের ৪৫ থেকে ৬০ দিনে বাজারজাত করা যায়। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে লালমি যায়। এক বিঘা জমিতে খরচ ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা আর বিক্রয় হয় ৫০ থেকে ৬০ টাকা বিক্রয় করা সম্ভব। লালমি চাষ করে কৃষকেরা স্বাভলম্বী হয়েছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ফরিদপুরের উপপরিচালক কৃষিবিদ কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্ত বলেন, সদরপুরের উৎপাদিত লালমির চাহিদা সারা দেশে আছে। ইফতারিতে এটি খুবই জনপ্রিয় ফল। ঢাকায় একটি মার্কেটও আছে। সেই হিসাবে লালমি খুবই একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতি ফসল হিসাবে সদরপুরে চাষ হচ্ছে। এবছর ৬৪০ হেক্টোর জমিতে যে লালমির চাষ হয়েছে, যা এখন বাজার যাত হচ্ছে। প্রায় তিন কোটি টাকার লালমি উৎপাদিত হবে। আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বিষমুক্ত লালমি উৎপাদতনের জন্য সহযোগিতা করে থাকি।

সরকারি পৃষ্ঠপোশকতা পেলে আগামীতে আরও বেশী বেশী লালমি বাঙ্গির আবাদ করবেন এ অঞ্চলের কৃষকেরা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button