আন্তর্জাতিক

করোনার সংক্রমণ কমায় মাস্ক: গবেষণা

ভালুকা নিউজ; আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: ব্যাপক হারে মাস্ক ব্যবহারের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ অনেকাংশে কমানো সম্ভব। হ্যামস্টারের (ইঁদুরজাতীয় প্রাণী) ওপর পরীক্ষার পর রোববার এমনটাই জানিয়েছেন হংকংয়ের একদল গবেষক।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এ গবেষণা কর্মটি করেছেন। মাস্ক পরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানো যায় কিনা সে বিষয়ে এটিই প্রথম পূর্ণাঙ্গ গবেষণা। গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন বিশ্বের প্রখ্যাত করোনাভাইরাস বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইউয়েন কোভক-ইয়ুং।

পাশাপাশি দু’টি খাঁচায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও সুস্থ কয়েকটি হ্যামস্টার রেখে গবেষণাটি করা হয়। এমনভাবে খাঁচা দু’টি পাশাপাশি রাখা হয় যাতে বাতাসের মাধ্যমে আক্রান্ত হ্যামস্টারের করোনার জীবাণু সুস্থ হ্যামস্টার রাখা খাঁচায় যেতে পারে। এরপর পরীক্ষার জন্য দু’টি খাঁচার মাঝে সার্জিক্যাল মাস্ক দিয়ে সুরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করা হয়।

দেখা যায়, সরাসরি সংস্পর্শে না আসলে মাস্ক ব্যবহারের মাধ্যমে ৬০ শতাংশ সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব।

এরপর খাঁচা দু’টির মাঝখান থেকে সার্জিক্যাল মাস্ক সরিয়ে নেওয়া হয়। এক সপ্তাহের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ সুস্থ হ্যামস্টার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়।

আক্রান্ত হ্যামস্টারের খাঁচা মাস্ক দিয়ে ঢেকে রাখলে সংক্রমণের হার ১৫ শতাংশ কমে যায়। অন্যদিকে সুস্থ হ্যামস্টারের খাঁচা মাস্ক দিয়ে ঢেকে রাখার পর দেখা যায়, সংক্রমণের হার ৩৫ শতাংশ কমানো সম্ভব হয়েছে।

আবার সংক্রমিত হ্যামস্টারের যেগুলোকে মাস্কযুক্ত খাঁচায় রাখা হয়েছিল সেগুলোর মধ্যে ভাইরাসের জীবাণু তুলনামূলক কম পাওয়া গেছে। আর যে খাঁচায় মাস্ক ছিল না, সে খাঁচায় থাকা হ্যামস্টারগুলোর মধ্যে সংক্রমণের পরিমাণ ছিল বেশি।

অধ্যাপক ইউয়েন বলেন, মাস্কের কার্যকারিতার বিষয়টি এখন স্পষ্ট। অন্য যে কোনো উপায়ে সংক্রমণ ঠেকানোর চেয়ে এটি বেশি কার্যকর।

২০০৩ সালে যে গবেষক দলটি সার্স ভাইরাসের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন অধ্যাপক ইউয়েন। চীনের উহানে যখন প্রথম নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মেলে তখনই হংকংয়ের সব বাসিন্দাকে মাস্ক পরে চলাফেরা করার আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি। ওই সময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ অনেক দেশের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সাধারণ মানুষের ব্যাপক হারে মাস্ক পরার বিরোধিতা করেছিল।

করোনাভাইরাস মহামারি ছড়িয়ে পড়ার চার মাস পর এসে দেখা গেল, হংকংয়ে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন মাত্র এক হাজার মানুষ। মৃত্যু হয়েছে চার জনের। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বিপুল সংখ্যক মানুষকে পরীক্ষার আওতায় আনা, আক্রান্ত ব্যক্তিকে শনাক্ত করে দ্রুত আলাদা করে ফেলার পাশাপাশি ব্যাপকহারে মাস্ক ব্যবহার হংকংয়ে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button