
কে. এম. রুবেল, ফরিদপুর: মধ্য আফ্রিকায় জাতি সংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে কর্মরত অবস্থায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বাংলাদেশী সৈনিক ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলার সদরপুর ইউনিয়নের চরব্রাক্ষন্দি গ্রামের আরজান হাওলাদারের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে তার গ্রামের বাড়ীতে আরজানের দাফন সম্পন্ন হয়।
শুক্রবার বিকেলে লাশ হস্তান্তর করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর সৈয়দ কামরুল হাসান বীর। ওই সময় উপস্থিত ছিলেন সদরপুর উপজেলার এসিল্যান্ড ও অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউএনও মো. জোযায়ের রহমান রাশেদ। আরজানের স্ত্রী চায়না বেগম ও মা রহিমা খাতুন লাশটি গ্রহন করেন। লাশ হস্তান্তর শেষে নিহত সৈনিক আরজান কে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা সম্মান জ্ঞাপন করে বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর সম্মান দল। লাশ হাতে পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন নিহতের স্বজনরা।
শুক্রবার সকাল থেকেই আরজানের আত্বীয় স্বজনরা নিহতের লাশ দেখতে বাড়িতে জড়ো হয়। স্বজনের আহাজারিতে ওই সময় পুরো এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। বিকেল সাড়ে পাঁচটায় স্থানীয় ঢোউখালী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে প্রথম জানাযা ও সন্ধা সাড়ে সাতটায় সদরপুর উপজেলা পরিষদ মাঠে দ্বিতীয় জানায়া শেষে রাত সাড়ে আটটায় স্থানীয় চৌদ্দরশী গ্রামের বাড়ীর পারিবারিক কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার দিয়ে তাঁকে দাফন করা হয়। স্বজনদের পাশাপাশি পুরো এলাকার শত শত গ্রামবাসী জানাযায় অংশ নেয়।
উল্লেখ্য, অভিযানিক দায়িত্ব পালনকালে গত শনিবার ২৬মে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬.৪৫ মিনিটে মধ্য অফ্রিকার ইয়ালোক নামকস্থানে মিশনের কাজে ব্যবহ্নত গাড়ি উল্টে গেলে দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে নিহত হন। আরজানের মৃত্যুর খরব ২৭মে পরিবারের কাছে এলে স্বজনদের কান্নায় ভারি হয়ে উঠে এলাকার পরিবেশ।
আরজান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট সৈনিক পদে চাকরি করতেন। ২০০৪সালে এইচএসসি পাশ করে তিনি সেনা বাহিনীতে চাকুরী নেয়। ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার সদরপুর ইউনিয়নের চরব্রাক্ষন্দী গ্রামের মৃত মো. করিম হাওলাদারের পুত্র আরজান। পরিবারের দুই ভাই দুই বোনের মধ্যে সে ছিলো সকলের বড়। বাবা করিম হাওলাদারের মৃত্যুর পর মা রহিমা খাতুন দরিদ্র পরিবারকে নিয়ে চলে যান বাবার বাড়ীতে। সেই পরিবারের বড় হন আরজান। লেখা-পড়া শেষে সেনাবাহিনীতে চাকরি নিয়ে পরিবারের হাল ধরেন তিনি।