আইপিএলের নতুন চ্যাম্পিয়ন মুস্তাফিজের হায়দ্রাবাদ
এক বল বাকি থাকতেই জয় উদযাপন করে নিলেন সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার। ঠিক তার উল্টো চিত্র রয়াল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু শিবিরে। টানটান উত্তেজনার ফাইনালে ব্যাঙ্গালুরুকে ৮ রানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের শিরোপার স্বাদ পেল মুস্তাফিজুর রহমানের দল।
রোববার ব্যাঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ডেভিড ওয়ার্নারের দারুণ ব্যাটিংয়ে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২০৮ রান সংগ্রহ করে হায়দ্রাবাদ। জবাব দিতে নেমে ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২০০ রানে থামে ব্যাঙ্গালুরুর ইনিংস।
হায়দ্রাবাদের ছুড়ে দেয়া ২০৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দলকে দারুণ শুরু এনে দেন ব্যাঙ্গালুরুর দুই ওপেনার ক্রিস গেইল ও বিরাট কোহলি। ৬৩ বলে এই জুটি স্কোর বোর্ডে যোগ করেন ১১৪ রান। ৩৮ বলে ৭৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে গেইল আউট হলে এই জুটি ভাঙে। ৪টি চার ও ৮টি ছয়ের মার ছিল ক্যারিবীয় তারকার ইনিংসে।
স্কোর বোর্ডে ২৬ রান যোগ হতেই বীরেন্দর স্রানের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন চলতি আসরের সর্বোচ্চ রানের মালিক কোহলি। ৫টি চার ও ২টি ছয়ের মারের সাহায্যে ৩৫ বলে খেলেন ৫৪ রানের ইনিংস। ক্রিজে থাকতে পারেননি এবি ডি ভিলিয়ার্সও। মাত্র ৫ রান করেই তিনি ফিরে যান সাজঘরে।
এমন অবস্থায় দলকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছিলেন শেন ওয়াটসন। কিন্তু তা হতে দেননি মুস্তাফিজ। দলীয় ১৭তম ওভারে বাঁহাতি এই কাটার মাস্টারের বল তুলে মারতে গিয়ে তা হেনরিকসের হাতে তুলে দেন। ৯ বলে ১১ রান করে সাজঘরে ফেরেন ব্যাঙ্গালুরুর এই অজি ব্যাটসম্যান।
হায়দ্রাবাদের হয়ে দুটি উইকেট পেয়েছেন বেন কাটিং। একটি করে উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান, বিপুল শর্মা ও বীরেন্দর স্রান।
এর আগে, ডেভিড ওয়ার্নারের দারুণ ব্যাটিংয়ের ওপর ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২০৮ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর সংগ্রহ করে সানরাইজার্স।
সানরাইজার্সকে বড় সংগ্রহ এনে দিতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন ওয়ার্নার। ৩৮ বলে ৮টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে ৬৯ রানের অধিনায়কোচিত ইনিংস খেলেন তিনি। ওয়ার্নারকে যোগ্য সঙ্গ দেন যুবরাজ সিং। এই ভারতীয় অলরাউন্ডার করেন ২৩ বলে ৩৮ রান। এছাড়া দলটির হয়ে শিখর ধাওয়ান ২৫ বলে ২৮ রান করেন।
শিরোপার লড়াইয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে সানরাইজার্সকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন ওয়ার্নার ও ধাওয়ান। এই দুজন ৪০ বলে ৬৩ রানের দারুণ এক জুটি গড়লে মজবুত ভিত পায় অরেঞ্জ আর্মিরা। দলীয় ৬৩ রানের মাথায় চাহালের বলে জর্দানকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ধাওয়ান। দ্বিতীয় উইকেটে ময়েসেস হেনরিকসকে (৪) নিয়ে ১৯ বলে ৩৪ রানের জুটি গড়ে দলকে কক্ষপথেই রাখেন ওয়ার্নার।
এরপর দলীয় ৯৭ রানের মাথায় হেনরিকস ফিরে গেলে ওয়ার্নার ও যুবরাজ মিলে ২২ বলে ২৮ রানের দারুণ জুটি গড়ে সানরাইজার্স শিবিরকে শক্ত অবস্থানেই রাখেন। দলীয় ১২৫ রানের মাথায় অরবিন্দের বলে ওয়ার্নার ক্যাচ আউট হয়ে ফিরে গেলে বড় স্কোর গড়ার পথে হোঁচট খায় মুস্তাফিজের দল।
চতুর্থ উইকেটে দীপক হুদা ও যুবরাজের দৃঢ়তায় লড়াকু সংগ্রহ পায় সানরাইজার্স। চতুর্থ উইকেটে দীপক-যুবরাজ মিলে ১৫ বলে ২২ রানের জুটি গড়েন। দীপক আউট হয়ে গেলে বেশি এগুতে পারেননি যুবরাজও। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান খেলেন ২৩ বলে ৪টি চার ও ২টি ছয়ের সাহায্যে ৩৮ রানের ইনিংস। আর শেষ দিকে এসে বেন কাটিং খেলেন ১৫ বলে ৩৯ রানের ইনিংস। তার ইনিংসে ছিল ৩টি চার ও ৪টি ছয়ের মার। ব্যাঙ্গালুরুর হয়ে তিনটি উইকেট নেন ক্রিস জর্দান। দুটি উইকেট নিয়েছেন শ্রিনাথ অরবিন্দ।