খেলাধূলাবিশ্বকাপ ফুটবল-২০১৮

বিশ্বকাপ কার ফ্রান্স না ক্রোয়েশিয়ার! ফয়সালা আজ

কে হবে বিশ্বকাপ ফুটবল চ্যাম্পিয়ন? ফ্রান্স না ক্রোয়েশিয়া। ফুটবলপ্রেমীদের মুখে এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে এই প্রশ্ন। কার হাতে উঠবে বিশ্বকাপ তার ফয়সালা হবে আজ রবিবার রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর লুজনিকির মাঠে। বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় শুরু হবে এই খেলা।
ক্রোয়েশিয়া নতুন চ্যাম্পিয়ন হতে চায়। ফ্রান্স চায় ৯৮ বিশ্বকাপের পর দ্বিতীয় ট্রফি। এই দুই দল আগেও মুখোমুখি হয়েছিল। ৯৮ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। সেখানে ফ্রান্স ২-১ গোলে ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়েছিল। ডেবর সুকরদের স্বপ্ন ভেঙ্গে দিয়েছিলেন দিদিয়ের দেশম, জিনেদিন জিদানরা। ৯৮ এর পর ২০১৮। পেরিয়ে গেছে আঠার বছর। বদলে গেছে অনেক কিছু। বদলে গেছে ফ্রান্স, বদলেছে ক্রোয়েশিয়াও।  ফ্রান্স এবং ক্রোয়েশিয়া নতুন শক্তি নিয়ে বেড়ে উঠেছে।
ফুটবলের তামাম দুনিয়া দেখেছে যোগ্য দুই দলই বিশ্বকাপের মঞ্চে উঠেছে। দুই দলে শক্তিমান ফুটবলাররাই রয়েছেন উপরে নিচে সব জায়গায়। বিশ্বকাপ ফুটবলের বড় বড় দেশ, বড় তারকাদের বিশ্বকাপের মঞ্চ থেকে বিদায় করে দিয়েছেন তারা। আজ শ্রেষ্ঠত্ব দেখাবার পালা। ফরাসী সৌরভ ছড়াতে চায় ফ্রান্স। আর যুদ্ধে জেতার অভিজ্ঞতা নতুন নয়, এই বলে হুমকি দিয়েছে ক্রোয়েশিয়ানরা। অর্থাৎ, ক্রোয়েশিয়া রীতিমতো যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।
ফ্রান্স আগেও বিশ্বকাপের স্বাদ পেলেও ফরাসীদের মধ্যে এক রকম উত্তেজনা আর ক্রোয়েটরা প্রথমবার ফাইনালে উঠেছে বলে তাদের মধ্যে আরেক রকম উত্তেজনা। মস্কোতে খবর এসেছে ক্রোয়েশিয়ান মন্ত্রীরা খেলোয়াড়দের জার্সি গায়ে মন্ত্রী সভার মিটিংয়ে বসেছিলেন। তাদের মধ্যে বিজয় উল্লাস হয়েছে। প্রথমবার বিশ্বকাপ ফুটবল ফাইনাল বলে কথা। দেশটির প্রায় ৫০ লাখ মানুষ তাকিয়ে আছে আজকের ম্যাচের দিকে। উত্তেজনায় টগবগ করছে গোটা দেশ। ক্রোয়েটরা এখন কাজ ভুলে গিয়ে ফুটবলে মজেছে। মন্ত্রী প্রেসিডেন্ট সবাই ফইনালে থাকতে চান। সাক্ষী হতে চান এক নতুন ইতিহাসের।
আর ফরাসীরা বলছে ৯৮তে তারা সহজেই ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়েছিল। এবারও তাই হবে। খেলোয়াড় এবং কোচ হিসাবে বিশ্বকাপ ফুটবলে ফ্রান্সের ফুটবলে ইতিহাস গড়তে চলেছেন ফ্রান্সের কোচ দিদিয়ের দেশম। যা আগে করেছিলেন জার্মানির বেকেন বাওয়ার এবং ব্রাজিলের মারিও জাগালো।
ফুটবল পরিসংখ্যান বলছে প্রতি বিশ বছর পর পর নতুন দল চ্যাম্পিয়ন হয়। বিশ্বকাপের নতুন দল হিসাবে ব্রাজিল প্রথম ট্রফি জয় করেছিল ৫৮ বিশ্বকাপে। তার বিশ বছর পর আর্জেন্টিনা চ্যাম্পিয়ন হয়। ফ্রান্স যখন চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল সেটিও বিশ বছর পর। ক্রোয়েশিয়াও কি সে পথে পথ হাঁটতে যাচ্ছে? নাকি ফ্রান্স এসব কথা ভুল প্রমাণ করবে। সবকিছু নির্ভর করছে মাঠের যোদ্ধাদের উপর।
কার কতোটা ষ্ট্যামিনা, কতোটা শক্তি, ধৈর্য্য আছে লজুনিকি স্টেডিয়ামে সেটার প্রমাণ দেয়ার পালা। দুই দলই কোনো খেলায় না হেরে এতো দূর এসেছে। ফরাসী ফুটবল দল এগিয়ে আছে। তাদের স্ট্যামিনা ভালো ক্রোয়েশিয়ার চেয়ে। হিসাব বলছে ক্রোয়েশিয়াকে টানা তিনটি খেলায় ১২০ মিনিট লড়াই করতে হয়েছে। ডেনমার্ক, রাশিয়া এবং ইংল্যান্ডকে হারাতে ১২০ মিনিট পর্যন্ত লড়াই করেছে তারা। যতটুকু বিশ্রাম পাওয়া দরকার তা হয়নি খেলোয়াড়দের।
ফাইনালের মতো যুদ্ধে যাওয়ার ১০০ ভাগ রশদ নেই। মাঠে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়তে পারেন রাকিটিচ, রেবিচ, লুকা মর্ডিক, মানজুকিচ, ব্রোজবিকরা। ফ্রান্স যদি ফাইনাল খেলাটাকে ১২০ মিনিট পর্যন্ত টেনে নিয়ে যেতে পারে তাহলে ক্রোয়েশিয়ান ফুটবলাররা দৌড়ে টিকতে পারবে কিনা সেটা। ক্রোয়েশিয়ার কোচ জ্লাতকো দালিচ এটিকে উড়িয়ে দিচ্ছেন।
বলছেন, ‘অবসাদগ্রস্ত হবে না। অবসাদ কাটানোর জন্য যা কিছু দেয়া দরকার সেই টোটকা দেয়া হয়েছে। আজ ফ্রান্স জিতলে ট্রফি ফিরে পাবে। আর ক্রোয়েশিয়া জিতলে ফুটবলে রুপকথার ইতিহাস লেখা হবে।  খবর- ইত্তেফাক।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button