জাতীয়সারা ভালুকা

ভালুকার রাস্তাগুলোর বেহাল দশা; সংস্কার জরুরী

ভালুকা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের রাস্তাগুলো ভেঙ্গে গিয়ে চলার অনুপযোগী হয়ে গেছে দীর্ঘদিন থেকে। ক্ষমতাসীন দলের চার চারবারের এমপি থাকার পরও যেন দেখা কেউ নেই। অসহায় অবস্থায় চলাচল করছে এই এলাকার লক্ষ লক্ষ জনগন।
ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা শিল্পসমৃদ্ধ-কৃষি নির্ভর একটি উপজেলা। উপজেলার মোট জনসংখ্যার মধ্যে ৬৭% মানুষ কৃষি নির্ভর ও গ্রামে বাস করে, ২০০১ সালের আদমশুমারী রির্পোট অনুযায়ী উপজেলায় মোট পাকা রাস্তা ১২২কিলোমিটার, আধাপাকা রাস্তা ২৭৫কিলোমিটার ও কাচা রাস্তা আছে ৯০০কিলোমিটার। এত বছর পেরিয়ে গেলেও যোগাযোগ ব্যবস্থায় খুব একটা সুবিধা পায়নি ভালুকার জনগন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সিডষ্টোর-বাটাজোর সড়কের বাটাজোর বাজারের প্রবেশ পথেই বিশাল গর্ত, একটু বৃষ্টিতেই অথৈ জলাধার। বাজারের ভেতরেও রয়েছে ছোট-বড় গর্ত। এই সড়কে বাস, অটো রিক্সা, মালবাহী ট্রাক, লরি, পিকাপ ভ্যানসহ প্রতিদিন মিল শ্রমিকবাহী শতশত যানবাহন সখীপুর ও বাটাজোর বাজার থেকে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করে থাকে। এসব খানা-খন্দের কারনে সৃষ্টি হয় যানজট ও বিঘœ ঘটে গাড়ী চলাচলে। এই রোডের বাস চালক মোঃ বাবুল মিয়া জানান-প্রায়ই রাস্তা নষ্ট থাকায় দুর্ঘটনা ঘটছে। এছাড়াও বাটাজোর সোনার বাংলা কলেজ ও স্কুলের রাস্তাটি চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। কলেজ রোডের প্রায় পুরোটারই কার্পেটিং উঠে গেছে এবং বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সাইফুল নামে কলেজের এক ছাত্র রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের দাবী জানান। উথুরা বাজার হতে কাতলামারী বাজারে রাস্তার বেহাল দশা। প্রতিদিন এ রাস্তায় শতশত লোক যাতায়াত করে। উথুরা কলেজে প্রতিদিন শিক্ষার্থীদের রিতিমত যুদ্ধ করে কলেজে গিয়ে ক্লাস করতে হয়। পার্শ্ববর্তী গ্রাম পাচগাঁও, মরচী, চামিয়াদী সহ কয়েকটি গ্রামের মানুষের প্রতিদিন কৃষিপন্য বেচা-কেনা করতে, বাজার করতে উথুরা যেতে হয়। প্রতিদিন বহু কষ্টে মানুষ যাতায়াত করছে এই রাস্তা দিয়ে। মানুষ হেটেই যেতে পারে না সেখানে যানবাহন তো দিবাস্বপ্ননের মত। এলাকার  জনগন ক্ষোভে-দুঃখে গত কয়েক দিন আগে ধানের চারা লাগিয়ে প্রতিবাদ জানায়। হবিরবাড়ী-কাচিনা ইউনিয়নের সিড্ষ্টোর-গাংগাটিয়-তালাব রাস্তাটি একটু বৃষ্টিতেই চলাচলে অযোগ্য হয়ে পড়ে। খুব বেশী কাঁদা হওয়ায় এ রাস্তাটি বিড়ম্ভনায় ফেলে দেয়-শিক্ষার্থী, অভিভাবক, কারখানার পুরুষ ও মহিলা শ্রমিক, তরি-তরকারী বাহী যান বাহন ও সর্ব সাধারণকে। অবহেলিত এ রাস্তাটি পাকাকরনের দাবী দীর্ঘ দিনের। হবিরবাড়ী জামিরদিয়া চেয়ারম্যান বাড়ী মোড় থেকে নারিশ হয়ে আমতলী, মায়ের মসজিদ, খন্দকারপাড়াসহ ছোট ছোট রাস্তাগুলো সারা বছর ছোট বড় গর্তে চলা চলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এছাড়া এই এলাকার প্রতিটি রাস্তা দু’পাশের দোকান, বাসা বাড়ি থেকে নিচে হওয়ায় সামান্য একটু বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যায়।
বর্ষা মৌসুমে উপজেলার কাঁচা ও আধা-পাকা রাস্তাগুলো অনেকটা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। বিড়ম্ভনার শিকার হয় হাজারো সাধারণ মানুষ। উপজেলার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ন রাস্তার মধ্যে কাচা অবস্থায় আছে- কাতলামারী হতে ভয়রাটেক হয়ে মল্লিকবাড়ী বাজার পর্যন্ত। ছিটাল বাজার হতে ইন্তারঘাট হয়ে আখালিয়া-মল্লিকবাড়ী বাজার হতে নয়নপুর হয়ে বাটাজোর বাজারের রাস্তারও বেহাল দশা। এ ব্যাপারে ডাকাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিকুজ্জামান লস্কর বলেন- ‘এটা অনেক বড় বাজেটের কাজ তাই  আমি এম,পি মহোদয় কে ব্যক্তিগত ভাবে ও লিখিত ভাবে রাস্তাটির কথা বলেছি, তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।’ এলাকাবাসীর দাবী যেনো দ্রুত রাস্তাগুলো মেরামত ও পাকাকরন করা হয়। এছাড়া উপজেলার পুর্ব ভালুকা-কোনাপাড়া-আসকা কাঁচা রাস্তাটি এতোই কর্দমাক্ত যে একটু বৃষ্টি হলেই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে বলে জানিয়েছেন- ওই এলাকার এক কলেজ পড়–য়া তরুন আব্দুল্লহ আকরাম।
এ ব্যাপারে ভালুকা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম মোস্তফা বলেন, আমরা উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত ৭১ কিলোমিটার রাস্তা পাকা করেছি। পরবর্তীতে স্থানীয় এলজিইডি এবং স্থানীয় এমপি মহোদয়ের বরাদ্ধ পেলে বাকী রাস্তাগুলো পাকা করা হবে।
ভালুকার প্রত্তন্ত এলাকার জনগনের প্রাণের দাবি রাস্তাগুলো মেরামত করে চলা চলের উপযোগী করতে সরকার এগিয়ে আসবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button