সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ড : ১০ একর বনভূমি পুড়ে ছাই
সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলী টহল ফাড়ি এলাকার বনে আগুন লেগেছে। প্রায় ২০ ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। আজ সোমবার সকালে সুন্দরবনের নাংলী টহল ফাড়ি সংলগ্ন শিকদারের ছিলা এলাকায় গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে বন বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস, স্থানীয় টাইগার টিমের সদস্যসহ বন সংলগ্ন উত্তর রাজাপুর এলাকার ২ শতাধিক লোক আগুন নিয়ন্ত্রণে অংশগ্রহণ করে। নতুন করে যাতে আর কোন এলাকায় আগুন ছড়িয়ে না পড়ে সে জন্য অগ্নিকাণ্ডস্থলে ফায়ার লেন (নালা) কাটা হয়েছে। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় ভোলা নদী থেকে স্যালো মেশিনের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
বন বিভাগ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ২৭ মার্চ সন্ধ্যা ৬টার দিকে এলাকাবাসী প্রথমে জঙ্গলের প্রায় এক কিলোমিটার গহীনে ধোঁয়া দেখতে পেয়ে ধানসাগর স্টেশনের বন কর্মকর্তাদের জানান। খবর পেয়ে ওই রাতেই ধানসাগর স্টেশনের কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ বনরক্ষীদের নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পরে মোড়েলগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় জনসাধারণের কাছে আগুন নেভানোর সহায়তা চায় বন বিভাগ।
গতকাল ২৮ মার্চ সকালে বন বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় জনসাধারণের যৌথ প্রচেষ্টায় আগুনের ভয়াবহতা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তবে, এখনো কিছু কিছু স্থান থেকে ধোয়া উঠতে দেখা গেছে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বনের প্রায় ১০ একর জমির বিভিন্ন প্রকার গাছ-পালা, লতা-গুল্ম পুড়ে ছাই হয়েছে। অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে গতকাল সোমবার সকাল ১০ টায় সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের ডিএফও সাইদুল ইসলামসহ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
আগুন নেভানোর তৎপরতা
মোড়েলগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের ইন-চার্জ স্বপন কুমার ভক্ত জানান, আগুন নিয়ন্ত্রয়ণে ফায়ার সার্ভিসের ২০ সদস্যের একটি দল রবিবার রাত থেকে কাজ শুরু করেছে। আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এখন সুন্দরবনে বড় ধরনের ক্ষতির আশংকা নেই।
স্থানীয়রা জানান, বন সংলগ্ন এলকার প্রভাবশালীরা প্রতি বছর সুন্দরবনের জলাশয় অলিখিতভাবে বন বিভাগের কাছ থেকে ইজারা নিয়ে বর্ষা মৌসুমে মাছ শিকার করে। ওই প্রভাবশালী চক্র সুন্দরবনের জলাশয় পরিস্কার করার জন্য এই মৌসুমে (শুস্ক) অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটায়। কিন্তু বন বিভাগ এ বিষয় অবগত থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয় না। ফলে প্রতি বছরই সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মোঃ বেলায়েত হোসেন জানান, আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। দ্রুত আগুন নিভানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করায় বন বড় ধরণের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে এবং অগ্নিকাণ্ড সংগঠিত এলাকা বন বিভাগের নজরদারিতে রয়েছে। তবে, এ মূহুর্তে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ বলা যাচ্ছে না। সংবাদ:- নয়াদিগন্ত