বাস চাপায় ত্রিশালের ইউএনও নিহত
ভালুকা নিউজ ডট কম: ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহসড়কের ত্রিশাল উপজেলার বইলর নুরুর দোকানের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ত্রিশাল থানার ওসি মনিরুজ্জামান জানান, ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম অফিসের কাজ শেষে উপজেলার হদ্দেরভিটায় জমি সংক্রান্ত একটি সালিশ বৈঠকে যোগদান করতে বাসা থেকে মোটরবাইকে রওনা হন। তাকে নিয়ে মোটরবাইকটি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহসড়কের ত্রিশাল উপজেলার বইলর নুরুর দোকানের সামনে পৌঁছলে ত্রিশাল থেকে ময়মনসিংহগামী পদ্মা গেইটলক সার্ভিসের একটি বাস পিছন থেকে তাদের ধাক্কা দিলে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে মোটরবাইকের পিছনে বসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম (৩৮) ও চালক ভূমি অফিসের পিয়ন নসরউদ্দিন (৩৫) ছিটকে রাস্তার পাশে পড়ে যান। স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে উইনারপাড় কমিউনিটি বেজড মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক গুরুতর অবস্থায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। দুর্ঘটনায় আহত পিয়ন নসরউদ্দিনকে কমিউনিটি বেজড মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
খবর পেয়ে নবগঠিত ময়মনসিংহ বিভাগের কমিশনার জি এম সালেহ উদ্দিন, ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, জেলা প্রশাসক মো. মুস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী, পুলিশ সুপার মঈনুল হক, ত্রিশালের উপজেলা চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন, ওসি মনিরুজ্জামান, সাবেক এমপি হাফেজ রুহুল আমিন মাদানিসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ হাসপাতালে ছুটে আসেন।
নিহত ইউএসও’র বাবা গিয়াসউদ্দিন মাস্টার, স্ত্রী আকিফা বিনতে জলিল, শ্যালক হাফেজ শরীফুলসহ স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। স্ত্রীও বাবা বারবার মুর্ছা যান। ইউএনওর মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় চার বছর আগে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার লোহাগাছা গ্রামের গিয়াসউদ্দিন মাস্টারের ছেলে ইউএনও রাশেদুল ইসলামের সাথে বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি আব্দুল জলিলের মেয়ে আকিফা বিনতে জলিলের বিয়ে হয়। তাদের কোনো সন্তান নেই।
ইউএনও রাশেদুল ইসলামের শ্যালক হাফেজ শরীফুল জানান, গত সোমবার দুই পরিবারের লোকজন ত্রিশালে বেড়াতে আসেন। মঙ্গলবার বিকেলে তাদের ঢাকায় ফিরে যাবার কথা ছিল। বিকেলে অফিস শেষে ইউএনও বাসায় এলে তারা ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এসময় ইউএনও সরকারি কাজে বাইরে যাচ্ছেন জানিয়ে তাদেরকে একটু অপেক্ষা করতে বলেন। কিছুক্ষণ পর ইউএনওর গাড়ির চালক গাড়ি নিয়ে বাসা থেকে দ্রুত বেগে বেরিয়ে গেলে তাদের সন্দেহ হয়। এরপর তারা ইউএনওর মোবাইলে ফোন করলে অপরিচিত এক ব্যক্তি ফোনটি রিসিভ করেন এবং তাদেরকে দুসংবাদটি জানান। পরে তারা হাসপাতালে ছুটে এসে তাকে মৃত দেখতে পান।