জঙ্গীবাদ নির্মূলে করণীয় বিষয়ে কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনা
ভালুকা নিউজ ডট কম; মেহেদী জামান লিজন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ দেশে বিদ্যমান বিভিন্ন জঙ্গী হামলা প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে রবিবার এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহীত উল আলম এর সভাপতিত্বে তাঁর অফিস কক্ষে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় ট্রেজারার প্রফেসর এ এম এম শামসুর রহমানসহ, সকল অনুষদের ডীন, বিভাগীয় প্রধান, প্রক্টরিয়াল বডি, দপ্তর প্রধানগণ ও ছাত্র প্রতিনিধি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমাম মাওলানা মো: শহিদ উল্লাহ আজমী ধর্মের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘কাউকে হত্যা করা বা আত্মহত্যা করাকে ইসলাম ধর্ম সমর্থন করে না। ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে কিছু বিপথগামী মানুষ এই জঙ্গীবাদকে মদদ দিচ্ছে। ধর্মকে নিয়ে বাড়াবাড়ি করা বা অন্য ধর্মকে আঘাত দেওয়া যাবে না। এছাড়া ইসলামে জিহাদ অর্থ গুপ্তহত্যা বা বোমা মারা নয়।’
জঙ্গী হামলা প্রতিরোধ এবং কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন ব্যক্তি যেন কোনপ্রকার জঙ্গী কার্যকলাপের সাথে সংশ্লিষ্ট হতে না পারে তার জন্য কী কী উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে এ বিষয়ে উপস্থিত সকলে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।
আলোচনায় বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়, যার মধ্যে রয়েছে- শিক্ষার্থীর ক্লাসে উপস্থিতি, শিক্ষার্থীর যাবতীয় তথ্য নিয়ে ডাটাবেজ তৈরি করা, সিসিটিভি বসানো, নিরাপত্তা প্রহরীর সংখ্যা বৃদ্ধি, সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, কাউন্সেলিং-এর ব্যবস্থা করা, ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সচেতনতা বৃদ্ধি, মনোবিজ্ঞানী নিয়োগ প্রদান, শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে ব্যস্ত রাখা, হলে এবং আশপাশের মেসে অপরিচিত ও ছাত্র নয় এমন ব্যক্তিদের মনিটরিং করা, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অপরিচিত ব্যক্তির প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা, সচেতনতা বৃদ্ধি কল্পে একটি সমাবেশ করা ইত্যাদি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহীত উল আলম সভাপতি হিসেবে তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘মূলত দুই ধরণের ধর্ম প্রচার লক্ষ্য করা যায়। মসজিদ ভিত্তিক ও ধর্মগ্রন্থ ভিত্তিক। মসজিদ ভিত্তিক প্রচার অপেক্ষাকৃত তারল্যপ্রধান কিন্তু ধর্মগ্রন্থ ভিত্তিক প্রচার যেহেতু লিপিবদ্ধ তাই এদিক সেদিক করার সুযোগ থাকে না। এই লক্ষ্যে ধর্মগ্রন্থ ভিত্তিক প্রচার করলে এবং মাতৃভাষায় অনূদিত বইয়ের মাধ্যমে ইসলামের সঠিক প্রচার করলে ভুল বোঝাবুঝি কম হবে।’ তিনি আলোচিত বিভিন্ন বিষয়ে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নিরাপত্তা প্রহরীর ব্যবস্থা করা হবে এবং প্রত্যেক ভবনে অন্তত একজন করে নিরাপত্তা প্রহরী প্রদান করা হবে। খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকা- এমনিতেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশি হয়, তবে আরও বেশি করার ব্যবস্থা করা হবে। শিক্ষার্থীদের তথ্যভিত্তিক ডাটাবেজ তৈরি করা হবে। যেসকল শিক্ষার্থী পরপর চারদিন ক্লাসে অনুুপস্থিত থাকবে তাদের তালিকা তৈরি করে আগামী ২৩-০৭-২০১৬ তারিখে জেলা প্রশাসনে পাঠানো হবে। তবে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নিশ্চিতের পাশাপাশি শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও উপস্থিতি নিশ্চিত করা হবে। মনোবিজ্ঞানী নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করব তবে সকল শিক্ষককেই আপাতত মনোবিজ্ঞানীর ভূমিকা পালন করতে হবে।’
এ সকল কার্যক্রমকে সফল করতে উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহীত উল আলম ট্রেজারার প্রফেসর এ এম এম শামসুর রহমানকে সভাপতি এবং ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সোহেল রানাকে সদস্য-সচিব করে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেন। জঙ্গী কার্যক্রম বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি কল্পে আগামী ২৬-০৭-২০১৬ তারিখ মঙ্গলবার বেলা ১১:০০ ঘটিকায় এক সমাবেশ করার সম্ভাব্য সময় নির্ধারণ করেন।