হিজরি নববর্ষ-১৪৩৮। খোশ আমদেদ!

ভালুকা নিউজ ডেস্ক:বাংলাদেশের রবিবার পবিত্র মহররম মাসের চাঁদ দেখা গেছে। তাই সোমবার থেকে ১৪৩৮ হিজরি সাল শুরু হয়েছে। ১২ অক্টোবর, বুধবার সারাদেশে পালিত হবে পবিত্র আশুরা। আমরা হিজরি নববর্ষকে জানাই খোশ আমদেদ। সেই সঙ্গে ভালুকা নিউজের পাঠকদের প্রতি রইল নতুন হিজরি বছরের শুভেচ্ছা। শুভ হিজরি নববর্ষ ১৪৩৮।বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হিজরতের ঘটনাকে কেন্দ্র করেই হিজরি সনের শুভ সূচনা লাভ হয়। হিজরি বছরের প্রথম মাস মহররম মাস শুরু হলো আজ থেকে।১৪৩৭ হিজরি সনকে বিদায় জানিয়ে শুরু হলো ১৪৩৮ হিজরি বর্ষের পথচলা।রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ত্যাগ ও কুরবানির ঐতিহাসিক স্মৃতি স্মারক হিজরি (আরবি) সন। ইসলামের প্রচার, প্রসার এবং বিজয় কেতন উড্ডীনে হিজরি সনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অত্যাধিক। আইয়্যামে জাহেলিয়াতের জ্ঞানপাপীরা বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও ইসলামকে পৃথিবী থেকে চিরতরে সরিয়ে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল। আল্লাহর নির্দেশে বিশ্বনবি দ্বীন প্রচারে প্রিয় মাতৃভূমি ত্যাগ করে মাদিনা মুনাওয়ারায় হিজরত করেন। যাকে কেন্দ্র করেই আজকের হিজরি সন। যা আজো মুসলিম উম্মাহর হৃদয়ে আলোকবর্তিকা হিসেবে জাগরিত হয়ে আছে।আমাদের দেশে হিজরি তারিখ ব্যবহার তেমন লক্ষ্য করা যায় না; করলেও সীমিতভাবে। যদিও হিজরি সালের সঙ্গে জড়িয়ে আছে মুসলমানদের ইবাদত-বন্দেগির বিষয়। তারপরও হিজরি সালকে কেন্দ্র করে তেমন কোনো আয়োজন পরিলক্ষিত হয় না।বাংলা ও ইংরেজি নববর্ষে যেভাবে নানা কর্মসূচির মধ্যে পালিত হয়ে থাকে; হিজরি নববর্ষের অনেক গুরুত্ব ও তাৎপর্য থাকা সত্ত্বেও তেমন কোনো কর্মসূচি পালন করা হয় না।হিজরি বছরের শেষ মাস এবং শুরুর মাস অনেক মর্যাদা ও ফজিলতের মাস। তাই এ হিজরি বছরের শেষ এবং নতুন বছরের প্রথম রাত ও দিন বিগত দিনের গোনাহ মাফ এবং আগামী দিনের কল্যাণ লাভের এক মর্যাদপূর্ণ সময়।মহররম মাসকে উপলক্ষ করে আল্লাহ তায়ালার সামনে মানুষের দাসত্ব ও বিনম্রতা প্রকাশ করা বেশি জরুরি। একই সঙ্গে দুনিয়ার সব সৃষ্টির সঙ্গে উত্তম আচরণ, ভালোবাসা প্রদর্শন, আত্মীয়-স্বজন-বন্ধু-বান্ধব ও পরিচিত জনসহ প্রত্যেকের সঙ্গে আন্তরিকতা বৃদ্ধি ও হিংসা-বিদ্বেষ দূর করে শান্তিময় সমাজ গড়া দরকার।মহররম মাসে অনন্য মর্যাদায় আসীন কিছু নফল ইবাদতের মোক্ষম সুযোগ ঘটে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে মুসলমানরা আল্লাহর দিকে মনোযোগ জোরদার করে করে থাকেন।মহররমের ১০ তারিখ আশুরার দিন দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে খাবার প্রদানসহ তাদের খোঁজখবর নিয়ে থাকেন। এর মাধ্যমে পরস্পরে ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়, সামাজিক বন্ধন গভীর থেকে গভীরতর হয়। ইসলামের বিধান মতে, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা এবং বিশেষ করে রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে হৃদ্যতাপূর্ণ যোগাযোগ রাখা সওয়াবের কাজ।মানুষ হিসেবে আমরা এটা মানি ও জানি যে, জীবনচলার পথে সামান্য হলেও কিছু বিরতি দরকার। যাতে জীবনের একঘেয়ে মিপনা কেটে যায়।কারণ, একঘেয়ে মানুষ জীবনে সৃষ্টিশীল কিছু উপহার দিতে পারে না। সে হিসেবে বলা যায়, নতুন বছর ও মাস হলো নবজীবনের প্রতীক। নতুন চিন্তা, নতুন কাজ ও নতুন দৃষ্টিভঙ্গির উন্মোচক।আর এভাবেই হিজরি নববর্ষ হয়ে উঠতে পারে আমাদের জীবনে সৃষ্টিশীলতা জন্ম থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের মাধ্যম।মনে রাখা জরুরি যে, এ মাস অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ মাস। মুহাররম মাস শুধুমাত্র কারবালার ঘটনা স্মরণ করার মাসই নয়, এমাস গোনাহ থেকে বেঁচে থাকার, ত্যাগের, ভালো কাজ করার, খারাপ কাজ থেকে বেঁচে থাকার এবং মুসলিম বিশ্বকে নতুন করে গড়ার প্রতিজ্ঞা করার মাস । ইসলাম ও মুসলমানের জন্য এ মাসের রয়েছে অনেক শিক্ষণীয় ও পালনীয় বিষয়। তাইতো এ মাসের ৯, ১০ ও ১১ তারিখে রোজা রাখা উত্তম। আল্লাহ তাআলা সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে হিজরি বর্ষ স্মরণ, মযাদা ও কল্যাণের প্রতি লক্ষ্য রাখার, আমলি জিন্দেগি যাটন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।(সংগৃহীত)