একই জরায়ু থেকে মা ও ছেলের জন্ম!
ভালুকা নিউজ ডট কম, ডেস্ক: এখন পর্যন্ত বিশ্বের একমাত্র ব্যাতিক্রম ঘটনা হলো, একই জরায়ু থেকে মা ও সন্তানের জন্ম নেওয়া। মা এমিলি এরিকসন ও তার ছেলে এমনি বিচিত্র সম্পর্কে আবদ্ধ। আর এমিলি এরিকসন জরায়ু ছাড়া জন্ম নেওয়া বিশ্বের অন্যতম নারী, যার জরায়ু প্রতিস্থাপন সফল হয়েছিল। এমিলির নিজের মা তাকে জরায়ু দিয়েছিলেন। ফলে তার জন্ম নেওয়া গর্ভ থেকেই তার সন্তানের জন্ম হয়েছে।
৩০ বছরের এমিলির ছেলে আলবিনের বয়স ২ বছর। এমিলির মা হওয়ার স্বপ্ন ভেঙে গিয়েছিল যখন জানতে পারেন, তিনি জরায়ু ছাড়াই জন্মগ্রহণ করেছেন। সন্তান ধারণের ক্ষমতা তার নেই। অন্য নারীদের মতই তিনিও ভেঙে পড়েছিলেন। সত্যটা গ্রহণ করতে বেশ সময় লেগেছিল তার। সত্য মেনে নিলেও প্রযুক্তির সাহায্যে কীভাবে মাতৃত্ব লাভ করা যায়, সেসব খোঁজও রেখেছিলেন। সে সময়ই হঠাৎ টেক্সাসের বেলোর বিশ্ববিদ্যালয়ের জরায়ু প্রতিস্থাপনের একটি প্রোজেক্টের কথা জানতে পারেন। এমিলি প্রথম মাকেই জানায় এ খবর।
যদিও, প্রথমে বিষয়টা নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামাননি এমিলির মা মেরি এরিকসন। কিন্তু, পরবর্তীকালে তিনিই এমিলিকে প্রস্তাব দেন তার জরায়ু নিতে। প্রথমে রাজি হয়েও খানিক ভয় পেয়েছিলেন এমিলি। কিন্তু তার মা তাকে বলেছিলেন, মাতৃত্বের স্বাদ পাওয়ার এটাই শেষ সুযোগ। সেই সুযোগ ব্যবহার করলেন শেষ পর্যন্ত এমিলি এরিকসন।
অপারেশন সফল হওয়ার পরেও, ডাক্তাররা জানিয়েছিলেন এখনও গর্ভবতী হওয়ার ক্ষমতা তার নেই। খানিক অপেক্ষা করতে হবে এমিলি ও তার স্বামী ড্যানিয়েলকে। ডাক্তারের পরামর্শ মত শেষে ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজেশনের মাধ্যমে তৈরি করা একটি ভ্রুণ তার গর্ভে স্থাপন করা হয়। প্রথমে পরীক্ষা নেগেটিভ এলেও এক সপ্তাহের মধ্যে গর্ভবতী হয়ে যান এমিলি। মাকে জানাতেই মেরি জানিয়েছিলেন, নিজের জরায়ুর ক্ষমতার প্রতি তার পূর্ণবিশ্বাস ছিল।
স্বাভাবিকভাবেই জন্মগ্রহণ করে আলবিন। এমনকি উচ্ছ্বসিত এমিলি জানিয়েছেন, সন্তানের কান্না শুনে আনন্দে মূর্ছা গিয়েছিলেন ড্যানিয়েল। তারা দুজনেই আলবিনের খানিকটা বড় হওয়ার প্রতিক্ষায় রয়েছেন। আলবিনকে জানাবেন কীভাবে জন্মগ্রহণ করেছে সে। আর এমিলি চান আরো বহু নারী তার জীবনের এই সত্যি জেনে অনুপ্রাণিত হোক। তাদের কোলেও ছোট্ট আলবিনরা খেলা করুক।