সখিপুরের ইউএনও এবং ওসিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ
বিশেষ প্রতিনিধি: তথ্যপ্রযুক্তি আইনে সখিপুরের (টাঙ্গাইল) স্কুলছাত্র সাব্বির সিকদারকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দেয়া কারাদণ্ডাদেশকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রত্যাহার এবং স্কুলছাত্র সাব্বিরকে মুক্তির আদেশ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া শুনানিতে ওই শিক্ষার্থীর দেওয়া বক্তব্যকে অভিযোগ হিসাবে গ্রহণ করে বিচারবিভাগীয় তদন্তের জন্য টাঙ্গাইলের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত। (মঙ্গলবার) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও আশীষ রঞ্জন দাসের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে সখিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের পক্ষে আইনজীবী শ.ম. রেজাউল করিম ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাকসুদুল আলমের পক্ষে নুরুল ইসলাম সুজন এমপি শুনানি করেন। রায়ের পর আইনজীবী খুরশিদ আলম খান সাংবাদিকদের এ কথা জানান। তিনি বলেন, উচ্চ আদালতের রায়ে স্কুলছাত্র সাব্বির সিকদারকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে টাঙ্গাইল-৮ আসনের এমপি অনুপম শাহজাহানকে নিয়ে মন্তব্যের জেরে গত ১৭ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইলের সখিপুরের প্রতীমা পাবলিক হাই স্কুলের শিক্ষার্থী সাব্বিরকে দুই বছরের সাজা দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালনকারী সখিপুরের ইউএনও।সাব্বির প্রতিমাবঙ্কি গ্রামের শাহিনুর আলমের ছেলে।
এর আগে টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখিপুর) আসনের এমপি অনুপম শাজাহান জয় ওই বালকের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করেন। ভ্রাম্যমান আদালত কর্তৃক দণ্ড প্রদানের পর গত ১৯ সেপ্টেম্বর ওই স্কুলছাত্রকে টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
গত ২০ সেপ্টেম্বর একটি ইংরেজি দৈনিকে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেই প্রতিবেদনের কপি আইনজীবী খুরশীদ আলম খান আদালতের নজরে আনেন। এরপর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও আশীষ রঞ্জন দাসের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সখিপুরের ইউএনও ও ওসির কাছে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চান। একইসঙ্গে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষার্থীকে জামিনে মুক্তির নির্দেশও দেন।
সে অনুযায়ী গত ২৭ সেপ্টেম্বর ইউএনও-ওসি দণ্ডের বিষয়ে উচ্চ আদালতে ব্যাখ্যা দেন। আদালতে জমা দেয়া প্রতিবেদনে জিডির বরাত দিয়ে ওসি বলেন, সাব্বির এমপি অনুপম শাহজাহানকে মেসেঞ্জারে হুমকি দিয়েছে যে, ‘আপনার সময় ফুরিয়ে আসছে’। আর ম্যাজিস্ট্রেট সূত্রে উল্লেখ করা হয়, তাকে তথ্য প্রযুক্তি আইনে এই দণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে আইনের কোন ধারায় দণ্ড দেওয়া হয়েছে তা তিনি উল্লেখ করেননি। ব্যাখ্যা শুনে হাইকোর্ট এ বিষয়ে রায় ঘোষণার জন্য ১৮ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।