জাতীয়

গ্যাসের দাম নিয়ে গণশুনানি করবে সিপিবি-বাসদ

ঢাকা: গ্যাসের দাম নিয়ে গণশুনানি করার ঘোষণা দিয়েছে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে প্রতিবাদে হরতাল ডাকা বামপন্থী দল সিপিবি ও বাসদ। তাদের দাবি এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন এখন প্রশ্নবিদ্ধ সংস্থায় পরিণত হয়েছে।

আগামী মঙ্গলবার ডাকার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে শনিবার দল দুটির সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।

গত বৃহস্পতিবার গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন। এর আগে এই সিদ্ধান্ত নিতে তারা গণশুনানি করেছিল যে শুনানিতে ভোক্তা অধিকার বিষয়ক সংগঠনগুলো দাম বাড়ানোর বিরোধিতা করে বক্তব্য রেখেছিল। তবে তাদের সেই যুক্তি গ্রহণযোগ্য হয়নি।

বিইআরসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী মার্চ থেকে এক দফা এবং জুনে আরেক দফা দাম বাড়বে গ্যাসের। দুই দফায় সব মিলিয়ে ২২ দশমিক ৭ শতাংশ বাড়ানো হলেও আবাসিকে দাম বাড়ছে ৫০ শতাংশ।

সংবাদ সম্মেলনে সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের একটি স্বাধীন নিরপেক্ষ সংস্থা হিসেবে ভূমিকা পালন করার কথা। কিন্তু দুই জন মন্ত্রী বলেছেন যে, সরকারের পক্ষ থেকে দাম বৃদ্ধির যে সুপারিশ করা হয়েছিল সে অনুযায়ীই গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, ‘যে প্রক্রিয়ায় দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, সেটাকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বা পদ্ধতি বলা চলে না। এখানেও স্বেচ্ছাচার করা হয়েছে।’

গ্যাসের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে সামঞ্জস্যা বিধানের যে কথা মন্ত্রীরা বলছেন, তার সমালোচনা করেন সিপিবি সভাপতি সেলিম।

সরকার বলছে, বিদেশ থেকে আনা এলএনজির দাম বেশি পড়বে। তাই এই দামের সঙ্গে সামঞ্জস্য করতেই গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। এই অবস্থানের সমালোচনা করে সিপিবি সভাপতি বলেন, তাহলে সামঞ্জস্য বিধানের জন্য এমপি-মন্ত্রীদের কাছ থেকে গাড়ির ট্যাক্স আদায় করা হোক, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পোশাক শ্রমিকদের নূন্যতম বেতন ১৬ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হোক।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০১৫-১৬ গ্যাস বিক্রি বাবদ আয় হয়েছে ১৬ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা। সরকার ভ্যাট নিয়েছে ৫৫ শতাংশ, লভ্যাংশ নিয়েছে ২ শতাংশ, আগাম কর্পোরেট ট্যাক্স ৩ শতাংশ, সম্পদমূল্য মার্জিন ১৫. ৯৬ শতাংশ, গ্যাস ডেভেলপমেন্ট ফান্ড বাবদ ৫.১৪ শতাংশ অর্থাৎ মোট ৮১.১০ শতাংশ সরকার নিয়ে নিয়েছে। এর অর্থমূল্য দাঁড়ায় ১৩ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা। পরিচালন ব্যয় বাদ দিলে কোম্পানির লাভ ৫ শতাংশ বা ৮৩১ কোটি টাকা। গ্যাস ডেভেলপমেন্ট ফান্ডে জমা আছে ১৯ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা। লাভ হওয়া সত্ত্বেও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কেন?

গৃহস্থালিতে গ্যাস সরবরাহে সরকারের হিসাব নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে দল দুটি। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দুই চুলায় মাসে ৯২ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহারের হিসাব ধরা হলেও বাস্তবে গড়ে গ্যাস ব্যবহার করা হয় ৪৫ ঘনমিটার। অর্থাৎ ব্যবহারকারীরা ৪৭ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার না করেও দাম ঠিকই দিয়ে যাচ্ছে।

গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেয়া হয় সংবাদ সম্মেলনে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button