সারা দেশ

একটানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে নওগাঁর মান্দায় আত্রাই নদীর পানি বাড়ছে

ব্রেলভীর চৌধুরী, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ গত কয়েক  । গত ২৬ ঘন্টায় এ নদীর পানি বেড়ে এখন বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে দুটি বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে মান্দায় তিন শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

এদিকে শিব নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ঠাকুরমান্দা যাতায়াতের রাস্তা তলিয়ে গেছে। তলিয়ে গেছে মাঠের আমন ধানের ক্ষেত। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় তিন নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অন্তত ৩০টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এসব নদীর বাঁধের ভিতরে থাকা অন্তত ৫ শতাধিক পরিবার।

টানা বর্ষণ ও উজানের ঢলে শুক্রবার রাত থেকে আত্রাই, ফকির্নি ও শিবনদের পানি বাড়তে থাকে। শনিবার দুপুরে এসব নদীর পানি বিপদ সীমা অতিক্রম করে। রবিবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত এসব নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার ১২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় রবিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আত্রাই নদীর বাইবুল্যা নামকস্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ৫০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। দুপুর ১২ টার দিকে পার-নুরুল্লাবাদ উত্তরপাড়ায় আরেকটি বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে আড়াই শতাধিক পরিবার। দুর্গত মানুষরা গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি নিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে এসব এলাকার ফসলের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ।

এদিকে পানির অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে আত্রাই নদীর শহরবাড়ী ভাংগীপাড়া, কয়লাবাড়ি, চকরামপুর, চকবালু, শামুকখোল হাতিয়ানদহ, প্রসাদপুর খেয়াঘাট, কামারকুড়ি, কালিকাপুর বাজার, কয়াপাড়া বেড়িবাঁধ, পারলক্ষ্মীরামপুর, মদনচক, নান্নুরঘাট ও আয়াপুর পাগলীতলা এবং ফকির্নি নদীর নুরুল্লাবাদ মন্ডল পাড়া, চকহরি নারায়ন, নিখিরাপাড়া, গোয়ালমান্দা ও করাতিপাড়া।

এছাড়া শিবনদের বাদলঘাটা, কোঁচড়া, দুর্গাপুর, শগুনিয়া, ডেবরা, বলাক্ষেত্র, শিমলাদহ, বাঁকাপুর, শংকরপুর, রুয়াই, ভাতহন্ডা এলাকার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এসব ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টগুলো টিকিয়ে রাখতে স্বেচ্ছা শ্রমে রাতদিন কাজ করে যাচ্ছে গ্রামপুলিশসহ স্থানীয়রা।

এদিকে ফকির্নি নদীর বামতীর নুরুল্লাবাদ মন্ডলপাড়া নামকস্থানে বেড়িবাঁধ উপচে পানি পার হচ্ছে। স্থানীয়রা বাঁধটি টিকিয়ে রাখতে কাজ করে যাচ্ছে। পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বাঁধটি টিকিয়ে রাখা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। বাঁধটি ভেঙ্গে গেলে নুরুল্লাবাদ, কশব ও বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হবে।

 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম প্রামানিক জানান, বন্যায় ফসলের ক্ষয়ক্ষতির পরিসংখ্যান নিরুপনে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

 

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান, জরুরি ভিত্তিতে ক্ষতি গ্রস্থদের তালিকা তৈরি করছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা। তালিকা হাতে পেলেই ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য জানা যাবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button