দুর্নীতির অধিকাংশ অভিযোগই ভূমি অফিসের বিরুদ্ধে: টিআইবি

ঢাকা: দুর্নীতির অভিযোগের অধিকাংশই অর্থাৎ শতকরা প্রায় ৬৭ ভাগই উপজেলা ভূমি অফিস ও এর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে; আর শুধু ভূমি অফিসের বিরুদ্ধেই অভিযোগ এসেছে ২৯ ভাগ। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পরিচালিত গণশুনানিতে এসব তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে টান্সফারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। আজ রোববার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়। ‘দুর্নীতি প্রতিরোধে দুদক পরিচালিত গণশুনানি: কার্যকারিতা, চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করেছে টিআইবি। সংস্থাটি জানায়, গবেষণাটির সময়কাল ছিল গত বছরের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, দায়িত্বে অবহেলা, খারাপ আচরণ ও প্রতারণা বিষয়ক অভিযোগ উঠে এসেছে। এছাড়াও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ক্ষেত্রে বাসা বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে বিলম্ব করা ও সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে ঘুষ দেয়ার অভিযোগ উঠে এসেছে। রাজউকের সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রেও অবৈধ উপায়ে প্লট দখল ও প্লট বরাদ্দ পাওয়ার অভিযোগ এসেছে। বিআরটিএ এর ক্ষেত্রেও ঘুষসংক্রান্ত অভিযোগ উত্থাপিত হতে দেখা গেছে।
অভিযোগের সমাধানের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ইতিবাচক চিত্র দেখা গেছে। অভিযোগকারীদের তথ্যানুযায়ী ৭৮ ভাগ অভিযোগকারী তাদের অভিযোগ সমাধানের প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন। এর মধ্যে ২৭ ভাগ অভিযোগকারী তাদের অভিযোগের সমাধান পেয়েছেন। তবে উপজেলা ভূমি অফিস, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ও রাজউক উল্লেখযোগ্য অভিযোগ সমাধান করতে পারেনি।
২৭ শতাংশ অভিযোগের নিষ্পত্তি হলেও এটি ইতিবাচক বলে মন্তব্য করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুদকের গণশুনানির ফলে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে এক ধরনের জবাবদিহিতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে মানুষের মধ্যে কিছুটা আস্থা তৈরি হচ্ছে। তিনি বলেন, গণশুনানিতে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে রায় এলেও দুদকের পরবর্তী মনিটরিং না থাকায় তা চাপা পড়ে যাচ্ছে। এতে অভিযোগকারীর দুদকের প্রতি আস্থা কমছে।
যারা গণশুনানিতে অংশগ্রহণ করছেন তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এই প্রক্রিয়া দুদকের একটি হাতিয়ার হলেও অনেক সময় দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা প্রভাবিত হয়ে রায় দিচ্ছেন। এতে করে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না।