আন্তর্জাতিক

জাতিসংঘের অভিযোগ‘সুচি’র সম্মতিতে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতন’

অনলাইন ডেস্ক: মিয়ানমারে মুসলমান সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতনের অনুমোদন সেদেশের নেত্রী অং সান সুচির অনুমোদনেই হয়েছে বলে ধারণা করছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার যেইদ রাদ আল হুসেইন।

এজন্য মিয়ানমারের নেতাদের একসময় বিচারের মুখোমুখি হতে হবে বলে তিনি বলছেন। বিশ্বে মানবাধিকার রক্ষার বিষয়গুলো দেখভাল করে জাতিসংঘের এই প্রতিষ্ঠানটি প্রধান হুসেইন।

তিনি বলেছেন, ”যে মাত্রায় এবং যেভাবে সেখানে সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে, তা অবশ্যই দেশের উঁচু পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ওই অভিযানে কয়েক হাজার মানুষ মারা গেছে এবং লাখ লাখ মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন।’ এজন্য মিয়ানমারের নেতাদের একসময়ে গণহত্যার অভিযোগের মুখোমুখি হতে হবে।”

যদিও এসব অভিযোগের ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি অং সান সুচি, যিনি একসময় শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন।

বিবিসির সংবাদদাতা জাস্টিন রোল্যাট বলছেন, ”মিয়ানমারের নেতাদের ভবিষ্যতে বিচারের মুখোমুখি দাড়াতে হতে পারে, জাতিসংঘের এই নজরদারি প্রতিষ্ঠানটির প্রধানের এই বক্তব্য খাটো করে দেখার সুযোগ নেই।”

এ মাসের শুরুর দিকেই জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে দেয়া বক্তব্যে হুসেইন বলেছিলেন, মিয়ানমারে যে ব্যাপক বা পরিকল্পিতভাবে রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন চালানো হয়েছে, তাতে গণহত্যার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যাবে না।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হলোকাস্টের পর জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো একটি কনভেনশনে স্বাক্ষর করেছেন, যেখানে কোন গোত্রকে নিশ্চিহ্নকে করার চেষ্টাকে গণহত্যাকে বলে বর্ণনা করা হয়েছে। কিন্তু তার এই বক্তব্যের পর কি অং সান সুচির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা পারে?

তিনি বলছেন, মিয়ানমারে গণহত্যা হয়েছে কিনা, সেটি প্রমাণের দায়িত্ব যেইদ রাদ আল হুসেইনের নয়। কিন্তু তিনি হয়তো আন্তর্জাতিক একটি তদন্ত চাইতে পারেন। যদিও হাই কমিশনার বলছেন, সেটিও কঠিন একটি কাজ।

তিনি আরও বলছেন, ”কেউ যদি গণহত্যা চালানোর পরিকল্পনা করে, সেটি তো তারা কাগজ কলমে করবে না। হয়তো আপনি কোন নির্দেশনার প্রমাণও পাবেন না। তবে এখন আমরা যা দেখছি, তার ভিত্তিতে ভবিষ্যতে কোন আদালত যদি এরকম কোন তদন্তের আদেশ দেয়, তাতে আমি অবাক হবো না।”

অগাস্টে এই অভিযান শুরুর পর সাড়ে ছয় লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। শত শত গ্রাম পুড়িয়ে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। সেখানে ব্যাপক হত্যা আর গণধর্ষণের বর্ণনা দিয়েছেন পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা।

স্যাটেলাইটে তোলা ছবি বিশ্লেষণের পর যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, বার্মার (মিয়ানমার) রাখাইন রাজ্যে গত দুইমাসে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।

অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে আরো ৪০টি গ্রামের ভবনসহ বহু ঘরবাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে বলে সংস্থাটি দেখতে পেয়েছে। ২৫ অগাস্টের পর রাখাইনে এ নিয়ে ৩৫৪টি গ্রাম আংশিক বা পুরোপুরি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বিবিসি

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button