আন্তর্জাতিক

মিয়ানমারে আবারো সংঘর্ষ, বাড়ি ছাড়া ১২০০ বাসিন্দা

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: মিয়ানমারের শান প্রদেশে ফের স্থানীয় বিদ্রোহীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর তীব্র সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। সেনা-বিদ্রোহী সংঘর্ষের ঘটনায় ওই প্রদেশ থেকে ১ হাজার ২০০ জনের বেশি বাসিন্দা পার্শ্ববর্তী কিয়াওকমি ও মংনু শহরে পালিয়েছেন।

দেশটির স্থানীয় দৈনিক দ্য ইরাবতি বলছে, কিয়াওকমি ও ন্যামসান শহরের সীমান্ত এলাকায় গত ২৭ ডিসেম্বর মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী তাং লিবারেশন আর্মির (টিএনএলএ) সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।

স্থানীয় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সংস্থাগুলো বলছে, সেনাবাহিনী এবং টিএনএলএর মধ্যে এখনো তীব্র উত্তেজনা চলছে। কিয়াওকমি শহরে শান প্রদেশের বাস্তুচ্যুতদের সহায়তা করছেন থর জ্য। তিনি বলেন, কিয়াওকমিসহ লাশিও, ন্যামসান ও কুটকাই এলাকার বিভিন্ন সামাজিক সংস্থা বাস্তুচ্যুতদের মধ্য ত্রাণ বিতরণ করছে।

সামাজিক উন্নয়ন, ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিভাগের কর্মকর্তা কো অং কিয়াও মো বলেন, ‘তিন শতাধিক পরিবারের মধ্যে আমরা ৯ ধরনের জরুরি ত্রাণ সরবরাহ করেছি। ত্রাণের মধ্যে সাত দিনের চাল, পোশাক, সাবান, হাঁড়ি-পাতিল, কম্বল, তোয়ালে রয়েছে।’

তিনি বলেন, তবে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের আগে যারা উদ্বাস্তু হয়েছিল তারা ইতোমধ্যে বাড়িতে ফিরে গেছেন। সর্বশেষ সংঘর্ষে এ গ্রামবাসীরা (১২০০ জন) নতুন করে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।’

দেশটির কাচিন প্রদেশের স্বাধীনতাকামী বিদ্রোহীদের সংগঠন কাচিন ইন্ডিপেনডেন্স আর্মির সঙ্গে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এখনো লড়াই চলছে। কাচিনের মানসি এলাকায় এ লড়াই শুরু হয়েছে।

অন্যদিকে, গত নভেম্বরে মিয়ানমারের শিন রাজ্যে আরাকান আর্মির বিদ্রোহী ও দেশটির সেনাবাহিনীর সদ্স্যদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সময় ভারতীয় দৈনিক দ্য হিন্দু এক প্রতিবেদনে জানায়, শিন রাজ্যে নতুন করে ছড়িয়ে পড়া এ সংঘর্ষে সেখানকার বাসিন্দারা ভারতে পালিয়ে যাচ্ছেন। প্রায় ১ হাজার ৩০০ মানুষ মিয়ানমারের শিন রাজ্য থেকে ভারতে ঢুকে পড়ে।

রোহিঙ্গা-অধ্যুষিত রাখাইনে দেশটির সেনাবাহিনীর অভিযানে আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে রয়েছে মিয়ানমার। এর মাঝেই শিন ও শান রাজ্যে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষে মিয়ানমারের শত শত বাস্তুচ্যুত হচ্ছেন অথবা ভারতে পালিয়ে যাচ্ছেন।

রাখাইনের পার্শ্ববর্তী শিন রাজ্যে গত ৮ নভেম্বর থেকে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। পালেতওয়ার পাশের দুটি গ্রামে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। শিনের এ সংঘর্ষের ঘটনার পর রাখাইনের উত্তরাঞ্চলেও দুই পক্ষের লড়াই বৃদ্ধি পেয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বছরগুলোতে রাখাইন ও শিন প্রদেশে আরাকান আর্মির সদস্যরা ক্রমান্বয়ে সক্রিয় হয়ে উঠছে। সেনাবাহিনীর সঙ্গে বারবার সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে তারা।

২০১৬ সালে দেশটির বিভিন্ন জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সরকারের শান্তি-প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের পদক্ষেপ হাতে নেয়া হয়। সেই সময় শান্তির প্রক্রিয়ার একটি রেফারেন্স গাইডে বলা হয়, আরাকান আর্মি গঠিত হয়েছে ২০০৮ সালে। জাতিগত রাখাইন জনগোষ্ঠীর জন্য স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গঠনই এ সংগঠনটির মূল লক্ষ্য।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button