আন্তর্জাতিক

ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলা-সেই বন্দুকধারীর ২১ দিনের রিমান্ড

অনলাইন ডেস্ক: নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে আল-নুরসহ দুটি অস্ট্রেলিয়ান এক শ্বেতাঙ্গ বন্দুকধারীর এলোপাতাড়ি গুলিতে প্রাণ হারান মসজিদে অবস্থানকারী ৪৯ জন। ওই হামলার পর বন্দুকধারীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে দেশটির পুলিশ। এরপরে তাকে আদালতে হাজির করলে বন্দুকধারীর বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ আনা হয়েছে। সেই অভিযুক্তে ব্রেন্টন ট্যারান্টকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

শুক্রবার (১৫ মার্চ) দুপুর পৌণে ২ টায় মসজিদে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ চালানোর অভিযোগে তাকে হত্যার অভিযোগ এনে ২১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে দেশটির আদালত বলে জানিয়েছেন দেশটির জাতীয় সংবাদমাধ্যম।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৮ বছর বয়সী ওই হামলাকারীকে সাদা রংয়ের কয়েদীদের পোশাকে এবং হ্যান্ডকাফ পরা অবস্থায় আদালতে হাজির করা হয়। তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ আনা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর আগে দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা আর্ডান বলেন, এই হামলা ছিল একটি উগ্র-সন্ত্রাসবাদী হামলা এবং প্রধান সন্দেহভাজন হামলাকারীর আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ছিল।

তিনি আরও বলেন, ওই ব্যক্তি ছাড়া আরও দু’জন পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। আটকদের কারো বিরুদ্ধে কোন অপরাধের রেকর্ড নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে জুম্মার নামাজরত শতশত মুসুল্লির ওপর ওই হামলা চালায় সশস্ত্র বন্দুকধারী। ওই হামলায় আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৪৮ জন। নিহতদের পরিচয় এখনো প্রকাশ করেনি কর্তৃপক্ষ। তবে বাংলাদেশ, ভারত ও ইন্দোনেশিয়া জানিয়েছে যে, নিহতদের মধ্যে তাদের নাগরিকরাও রয়েছেন।

হামলার পর থেকেই ক্রাইস্টচার্চে ব্যাপক নিরাপত্তা বিরাজ করছে এবং পুরো দেশজুড়ে সকল মসজিদ বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা বলেছেন, মসজিদের হামলার এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ব্যক্তির পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং একটি লাইসেন্স ছিল। হামলার ঘটনার একদিন পর তিনি জানিয়েছেন, দেশের অস্ত্র আইন বদলানো হবে।

পুলিশ জানিয়েছে, তারা হামলার শিকার দুটো মসজিদ থেকেই গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে এবং সন্দেহভাজন একজনের গাড়ির ভেতর বিধ্বংসী ডিভাইস পাওয়া গেছে।

জাসিন্দা আর্ডান সাংবাদিকদের বলেন, হামলাকারীর বন্দুকের লাইসেন্স ছিল এবং সেটি ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে নেয়া হয়েছে। ওই ব্যক্তি বলেছে সে, ২০১৭ সালে ইউরোপ ভ্রমণের পর থেকে এই হামলার পরিকল্পনা করছিল।

এদিকে ৫ এপ্রিল ট্যারান্টকে আবারও আদালতে হাজিরার তারিখ দেয়া হয়েছে। ততদিন তিনি পুলিশের হেফাজতেই থাকবেন।

বন্দুক হামলায় দু’টি মসজিদের ৪৯ জনকে হত্যা করলেও প্রথমে হামলাকারীর বিরুদ্ধে একটি হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ এনে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। পর্যায়ক্রমে তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ আনা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

হামলার ঘটনায় আরও ৩ জনকে আটক করে একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেয়া হলেও বাকি দু’জনের ব্যাপারে তদন্ত চলছে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button