মতামত

প্রাকৃতিক রসগোল্লা লিচু

———– মোঃ কায়ছার আলী

“ঝড়ের দিনে মামার দেশে আম কুড়াতে সুখ, পাকা জামের মধুর রসে রঙিন করি মুখ।” পল্লী কবি জসীমউদ্দীনের এ কাব্যকথাগুলো মনে পড়লেই মনটা ছুটে যায় সেই ছোট্ট বেলায়। পাকা ফুলের মধুর রস সত্যিই সুন্দর, সুস্বাদু যা মন ও হৃদয়কে জুড়িয়ে দেয়। পল্লীকবির প্রতি শত শ্রদ্ধা রেখেই লিখছি যদি তিনি আমাদের এই দিনাজপুরের সদর উপজেলার মাশিমপুর গ্রামে অথবা বিরল উপজেলায় মাধববাটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করতেন তবে অবশ্যই লিচুকে নিয়ে হয়তবা একখানা অমর কবিতা লিখতেন, এ আমার দৃঢ় বিশ্বাস। সুস্বাদু ও মজাদার এ লিচু দিনাজপুরের বিরল, সদরসহ অন্যান্য বেশ কয়েকটি উপজেলায় আবাদ হচ্ছে। হামরা দিনাজপুরিয়ারা এই লিচুকে ভালবেসে বলি ‘প্রাকৃতিক রসগোল্লা’। স্বাদ আর বর্ণের জন্য দিনাজপুরের লিচুর ব্যাপক চাহিদা। এমনকি নিকট প্রতিবেশী দেশগুলো থেকেও ক্রেতারা আসেন দিনাজপুরের লিচুর বাজারে। বাংলাদেশের লিচু বলতে দিনাজপুরের লিচু অতুলনীয়। বিরল উপজেলার ছাত্রকল্যাণ সমিতি ঢাকা ‘লিচু’ এর সম্পাদক মেধাবী ছাত্র পলাশ আমাকে এই আর্টিকেল লিখতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছে। বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ এই দুই মাস গরমকাল। ঋতুচক্রে গরমকাল হলেও ফলের বিবেচনায় এই মাসকে বলা হয় ‘মধু ঋতু’। জ্যৈষ্ঠ মাস হল মধু মাস। মধু মাসে কত ফলই না হলে গাঁয়ের এ বাগানে-ও বাগানে, এ বাড়িতে-ও বাড়িতে। গ্রীষ্মের গরম উপেক্ষা করে লিচু হাতে পেলে মানুষ ভুলে যায় অসহ্য গরমের যন্ত্রণা। লিচু পুষ্টি এবং স্বাদে এত মজা যার তুলনা অন্য কোন ফলের সাথে করা যায়না কেননা বিভিন্ন ফলের স্বাদ ও পুষ্টিগুণ এবং এর ভেষজ মূল্য এক এক রকম। এক এক জেলা এক এক ফলের জন্য বিখ্যাত। যা মাটির উপর নির্ভর করে। মাটি হল পৃথিবীর উপরিভাগের একটি আস্তরণ যা প্রাণি ও উদ্ভিদের পুষ্টি জোগায় ও বেঁচে থাকতে সাহায্য করে। এই মাটির উৎপত্তি হয়েছে টারশিয়ারী যুগের শিলা, প্লাইস্টোসিন যুগের সোপান এবং সাম্প্রতিক কালের পলল থেকে। জেলা শহরের চারদিকে বিশেষ করে দক্ষিণ ও পশ্চিম পাশে গ্রামগুলোতে ছড়িতে আছে বিভিন্ন শস্যের চাষাবাদের সুসমতল কৃষি শ্যামল উর্বর বিস্তৃত কৃষিক্ষেত্র। জনপদ মাত্রই কিছু কিছু অর্থনৈতিক সম্পদ ও সমৃদ্ধির ক্ষেত্রভূমি। সুন্দর প্রাকৃতিক শোভায় এই জেলা অতি মনোমুগ্ধকর। কিন্তু সে সৌন্দর্য বৈচিত্র্যহীন ও অবিচ্ছিন্ন। কারণ এ জেলায় কোন পাহাড়-পর্বত, মরু প্রাপ্তর, হৃদ বা বৃহৎ জলাভূমি নেই। তবে এ জেলায় রয়েছে মাটির সমতল বুক চিড়ে প্রবাহিত অনেক চঞ্চল গতি ক্ষীণকায় নদী বস্তুত নির্জন নিবিড় বনময় মুগ্ধ প্রকৃতির কোলে অবস্থিত হয়েও এবং দূর পল্লীর বিচ্ছিন্ন পরিবেশেও মাধববাটি বা মাশিমপুর বরাবর একটি স্বনামধন্য গ্রাম। স্বর্গীয় সম্পদেও বৈশিষ্ট্যে ভরপুর এ গ্রামের মানুষেরা হাজার হাজার একর জমি লিচু আবাদ করে সারাদেশ বাসীকে এক মায়ার জালে বেঁধে ফেলেছে। এ গ্রামের লিচু চাষীরা তাদের যোগ্যতা ও মেধার বিকাশ ঘটিয়েছে। জাতীয় ফল কাঁঠাল, ফলের রাজা আম অবশ্যই পুষ্টিকর ও উপাদেয় ফল। লিচু সম্পর্কে লিখতে গেলে মনের অজান্তে কেন জানি লিখতে ইচ্ছে করে লিচু হল ফলের রাণী। জানিনা তা বলা ঠিক হবে কি না? তবে এটা আমার ব্যক্তিগত মত । মতান্তর থাকতে পারে। লিচু হল বিশ্বের সবচেয়ে রোমান্টিক এবং উপকারী ফল। প্রায় দুই হাজার বছর থেকে এ ফলটি এ মর্যাদা পেয়ে আসছে। বিশ্বে প্রথম ফল চাষের বই লেখা হয়েছিল ১০৫৬ সালে, সেটিও ছিল লিচুকে নিয়ে। বিশ্বে অনেক রাজা বাদশাহ রাণী-বেগমদের মন জয় করতে যুগে যুগে লিচু ফল উপহার দিয়েছেন। অষ্টম শতকে চীনা সম্্রাট হুয়ান সাংও একই কাজ করে বেগমের মন জয় করেছিলেন। দক্ষিন চীন থেকে লিচু বয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন সূদুর উত্তর চীনে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে লিচুর চাষাবাদ শুরু হয়। লিচুর আছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। তা ব্রেস্ট ক্যানসার নিরাময়ে সহায়তা করে থাকে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হার্ট ভালো রাখে। এতে পাওয়া যায় অলিগনাল নামক বিশেষ উপাদান। তা নাইট্রিক অ্যাসিড উৎপাদন করে। এ অ্যাসিড Vasodialator –এর কাজ করে। মানে, ব্লাড ভেসেল এক্সপান্ড করে দেয়। ফলে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে। কমে হৃদয়ের ওপর চাপ এবং হৃদয় ভালো থাকে। লিচু শরীরের রক্তচাপও ঠিক রাখে। হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটাতে লিচু দারুন দারুণ কাজ করে। চোখে সহজেই ছানি পড়তে দেয় না লিচুতে থাকা ফাইটো কেমিক্যাল থেকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এতে থাকা অ্যান্টি নিওপ্লাসমিক প্রপার্টি তৈরি হয় বলে কোস বিভাজন নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফলে চোখে ছানি পড়ে না। ইনফ্লুয়েনঞ্জা হওয়ার প্রধান কারণ হলো বিভিন্ন ভাইরাস। দেখা গেছে, ইনফু¬য়েঞ্জা হলে লিচু খেলে তা দ্রুত সেরে যায়। শুধু তা-ই নয়, লিচু থেকে এ অসুখের ওষুধ তৈরি করা যায় কিনা, তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। প্রতি ১০০ গ্রাম লিচুতে আছে ৬৬ ক্যালরি। এ ছাড়া আছে ফাইবার। তা চর্বি গলাতে সাহায্য করে। তাই যারা ওজন কমাতে চান, তারা ডায়েটে অবশ্যই লিচু রাখুন। লিচুতে আছে পর্যাপ্ত ভিটামিন ‘সি’। ফলে আমাদের শরীরে ইমিউনিটি বাড়াতে সাহায্য করে। কারোর স্কার্ভি হলে লিচু খেলে তা সেরে যায়। স্কার্ভি ভিটামিন ‘সি’ ডেফিসিয়েন্সি থেকে হয়ে থাকে। বিজ্ঞানীরা নানা জাতের লিচু উদ্ভাবন করেছেন। বর্তমানে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণা দ্বারা তিনটি জাতের লিচু উদ্ভাবন করেছেন। এদেশে যেসব জাতের লিচু পাওয়া যায় সেগুলো হল- বোম্বাই, মাদ্রাাজি, চায়না-৩, মঙ্গলবাড়ি, মোজাফ্ফরপুরী, বেদানা লিচু, বারী লিচু-১, বারী লিচু-২, বারী লিচু-৩। এই জাতের গাছে প্রতি বছরই ভালো ফল ধরে। বেদানা নাবী জাত। বারী লিচু-১ আগাম জাত, বারী লিচু-৩ মৌসুমী জাত, কিন্তু বারী লিচু-২ নাবী জাত। লিচু লাগানোর জন্য এসব জাত থেকে যেকোন জাত নির্বাচন করা যেতে পারে। সাধারণত লিচু গাছে তিন থেকে ছয় বছর পর ফল ধরে। তবে বিশ-ত্রিশ বছর পর্যন্ত লিচু গাছে ফলন বাড়তে থাকে। সাধারণত প্রতিটি গাছ থেকে বছরে ৮০-১৫০ কেজি বা ৩২০০-৬০০০টি লিচু পাওয়া যায়। অবস্থাভেদে এর তারতম্য লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু বীজ থেকে উৎপাদিত গাছে ফল ধরতে ৭-১২ বছর সময় লাগে। এজন্য বীজ থেকে সাধারণত চারা উৎপাদন করা হয় না। চারা উৎপাদনের জন্য গুটিকলম লিচুর ক্ষেত্রে সর্বাধিক উপযোগী। তবে এ পদ্ধতি ছাড়া জোড় কলম, কুঁড়ি সংযোজন, ছেদ কলম প্রভূতির মাধ্যমে সকল ভাবে চারা উৎপাদন করা যায়। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নভাবে জমি তৈরি করে জমি সমান করতে হবে। মে-জুন মাসে জমি তৈরি করা ভাল। জমিতে বর্গাকার বা ষড়ভুজী রোপন প্রণালী অনুসরন করে ১০ মিটার দূরে দূরে ১ মিটার ১ মিটার আকারের গর্ত খনন করতে হয়। গর্ত করার পর গর্তের উপরের মাটির সাথে গর্ত প্রতি ২০-২৫ কেজি জৈব সার ২ কেজি হারের গুঁড়ো বা ৫ কেজি কাঠের ছাই মিশিয়ে গর্ত ভরে দিতে হবে। তারপর তাতে পানি দিয়ে কিছুদিন রেখে আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসের দিকে গর্তের মাটির সাথে ২৫০ গ্রাম ইউরিয়া ও এমওপি মিশিয়ে গর্তের মাঝখানে লিচুর চারা বা গুটিকলম লাগাতে হবে। লাগানোর পর পরই পানিসেচ দিতে হবে। প্রয়োজনবোধে কিছু পাতা ছাটাই করা ভাল। প্রতিবছর তিনবার সার প্রয়োগ করতে হবে। গাছে যদি তামাটে রং ধারন করে তবে প্রতিবছর ৫০০ লিটার পানির সাথে দুই কেজি চুন ও জিঙ্ক সালফেট গুলে বসন্তকালে গাছে ছিটাতে হবে। এর ফলে ফল ঝরা কমে যাবে। ভরাট করার সময় জমির লেভেল থেকে কমপক্ষে ১৫-২০ সে.মি উুঁচু ঢিবির মত করতে হয়। ঢিবির মধ্যখানে হাত দিয়ে বা নিড়ানী দিয়ে গুটিকলমের মাটির পাত্র বা পলিব্যাগের আকারে ছোট গর্ত করে তাতে লিচুর গুটি কলমের মাটির বলটি বসিয়ে চারদিকে মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হয়। কলমটি যাতে বাতাসে হেলে না পড়ে। সেজন্য কলম গাছের গোড়া থেকে ১০-১৫ সে.মি দূরে একটি খুটি পুঁতে খুঁটিতে হেলিয়ে গাছের সাথে বেঁধে দিতে হয়। কিছু পানি গাছের পাতায় ছিটিয়ে দিয়ে গাছটি গরু-ছাগল থেকে রক্ষার জন্য বেঁধে দিতে হয়। লিচু চাষের সনাতন পদ্ধতি থেকে চাষীরা আজ আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করতে শুরু করেছে। বর্তমানে ইশ্বরদীতে আম-লিচুতে কীটনাশকের পরিবর্তে চার্জওয়াটার নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার করে বিষমুক্ত ফল উৎপাদনে চাষীরা সাফল্য ভাল করেছে। জার্মানী থেকে আমদানী করা এই প্রযুক্তি বাংলাদেশে এ বছরই প্রথম পরীক্ষামূলক ভাবে ব্যবহার করা হয়। আর তাতে সফলতা আসায় নতুন এ প্রযুক্তি নিয়ে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের মাঝে। কৃষিবিদরা বলেছেন এই প্রযুক্তি ব্যবহার করলে একদিকে যেমন উৎপাদন খরচ কমবে তেমনি কীটনাশকমুক্ত সবজিও ফল উৎপাদনে এ প্রযুক্তি সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে কৃষিক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে বলে মনে করেন স্থানীয় কৃষক ও কর্মকতারা। প্রচন্ড দাবদাহে লিচু ফেটে নষ্ট হয়ে ঝড়ে পড়া আবার পোকার আক্রমণ তো আছেই। এ সবের হাত থেকে রেহাই পেতে লিচু চাষীরা ব্যবহার করেন বিভিন্ন রকমের কীটনাশক। যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কীটনাশকের চেয়ে প্রায় নব্বই ভাগ খরচ কম বিষমুক্ত এই প্রযুক্তিতে শুধুমাত্র পানিকে নিক্কন ওয়াটার মেশিনের মাধ্যমে চার্জ করে সেই পানি ব্যবহার করা হয় লিচু ও আমগাছে। এই স্প্রে করার ফলে ইশ্বরদীতে এবার লিচু ঝরে পড়েনি, পোকা লাগেনি, পচেনি বা ফাটেনি। এই আশাতীত সাফল্যে ঢাকার বে কনসোর্টিয়াম লিমিটেডের জি.এম (টেকনিক্যাল) জার্মান ও সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন বাগান দেখে এসে এবং অনুপ্রাণিত হয়ে এই প্রযুক্তি বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। জার্মান বিজ্ঞানী ড. কার্লোস আবিষ্কৃত খাবার সমতুল্য পানি নিক্কন ওয়াটার মেশিনের চার্জ পদ্ধতি আজ লিচু চাষীদের জন্য এক মাইলফলক। এই পদ্ধতিতে স্প্রে কারীর শ্বাস-প্রশ্বাসের বা স্বাস্থ্যের ক্ষতি, গাছের ফলন রক্ষা, মাটির উপরিভাগের উপকারী কীটপতঙ্গ রক্ষা, জলবায়ু ও পরিবেশসহ সবকিছু স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হয়। শুধুমাত্র ইশ্বরদীতে নয় সারাদেশে এই আধুনিক পদ্ধতিতে ছড়িতে দিতে হবে। লাভজনক বা অর্থকারী ফল প্রাকৃতিক রসগোল্লা লিচু আমাদের দিনাজপুরের গর্ব ও অহঙ্কার। তাই এর যথাযথ আধুনিক উৎপাদন পদ্ধতির ব্যবহার আরো বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে লিচু চাষীদের উন্নত মানের সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণ কোর্স সরকারিভাবে দেওয়া যেতে পারে। সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় লিচু সংরক্ষণের জন্য আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ব্যবহার আজ জরুরি হয়ে পড়েছে। বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সূত্র মতে, ২০১৩ সালে বৈশ্বিক পরিসংখ্যানে বিশ্বে ফল উৎপাদনে বৃদ্ধির হার এখন বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি। ২০১৪-১৫ সালে এ দেশে প্রায় এক কোটি টন ফল উৎপাদিত হয়েছে। বিশ্বে মোট ফল উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান আঠাশতম। এটা তো কম সুখের কথা নয়। বিশ্বে বাংলাদেশ আম উৎপাদনে সপ্তম ও পেয়ারা উৎপাদনে অষ্টম স্থানে উঠে এসেছে। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে দিনাজপুরের লিচু এদেশের জাতীয় অর্থনীতিতে এক নতুন মাত্রা যোগ করবে। শুধু আমি নই, দিনাজপুরবাসী নয় এদেশের প্রতিটি বাঙালী বিশ্বাস করে “দিনাজপুরের মাটি, লিচু উৎপাদনের ঘাঁটি।

লেখকঃ সহকারী প্রধান শিক্ষক। ফরক্কাবাদ এন.আই স্কুল এন্ড কলেজ। বিরল, দিনাজপুর।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button