উপ-সম্পাদকীয়

বন্ধুত্ব হোক আদর্শ চেতনার…. সফিউল্লাহ আনসারী

বন্ধুত্বের বন্ধনে নেই কোন সীমানা।বন্ধুত্বের সম্পর্ক শর্তহীন নীখাদ।বন্ধুত্বের নেই কোন দিন-ক্ষণ বা গন্ডি। একাকীত্বকে হারাবার একমাত্র উপায় বন্ধুত্ব। বিশ্বে নানান বিষয়ের উপর বা গুরুত্বকে বাড়িয়ে দিতে দিবস পালন করা হয়।যদিও বন্ধুত্ব প্রতিদিন একই রকম আবেগ-অনুভুতিতে অমলিন।তেমনি আগষ্ট মাসের প্রথম রোববার পালিত হয় বন্ধুদিবস।একেকটা দিবস পালনের পেছনে রয়েছে কোন না কোন ঘটনা।বন্ধু দিবস কিভাবে এলো জেনে নিই-“১৯৩৫ সাল থেকেই বন্ধু দিবস পালনের প্রথা চলে আসছে আমেরিকাতে। জানা যায় ১৯৩৫ সালে আমেরিকার সরকার এক ব্যক্তিকে হত্যা করে। দিনটি ছিল আগস্টের প্রথম শনিবার। তার প্রতিবাদে পরের দিন ওই ব্যক্তির এক বন্ধু আত্মহত্যা করেন। এরপরই জীবনের নানা ক্ষেত্রে বন্ধুদের অবদান আরতাদের প্রতি সম্মান জানানোর লক্ষেই আমেরিকান কংগ্রেসে ১৯৩৫ সালে আগস্টের প্রথম রোববারকে বন্ধু দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেন ।”(সংগৃহীত)ইদানিংকালে বিশ্বে দিবস পালনের রেওয়াজ খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।বন্ধু দিবসটিও নীখাদ বন্ধুত্বকে আরো অমুল্য করে তুলতে আমাদের দেশেও আনন্দঘন পরিবেশে পালিত হচ্ছে।বন্ধুতো সে বিপদের সময়,নি:সংগতায়,হতাসায় পাশে থেকে নিজের মতোই অতি আপনজন হয়ে পাশে থাকবে।কথায় আছে বিপদে বন্ধুর পরিচয়’সত্যি তাই।শুধু সুখের দিনে ভোগ করবে,বিপদে পড়লে কেটে পড়বে বন্ধুত্ব এমন হতে পারেনা।জীবনের সংকটকালে অপর বন্ধু ছুটে যান বন্ধুদের কাছে। জীবনের বাঁকে বাঁকে আনন্দ-উল্লাস,হাসি-কান্না,যাপিত জীবনের সকল স্তরে বন্ধু থাকেন ছায়ার মতো,মায়ায় বাধনে। জীবনের শেষ সময়েও, অবসর জীবনে বন্ধুত্বের ভালোবাসা সঙ্গী হয়ে থাকে জীবনকে পুর্ণতা দিতে। বন্ধুত্বের যেমন কোন সীমা নেই তেমনি নেই কোন বাধ্যবাধকতা। বন্ধুত্ব হতে পারে মা-বাবা-সন্তানের সাথে,ভাই-বোনের সাথে,সহপাঠির সাথে,কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীর সাথে,ছেলে-মেয়ের সাথে।লিঙ্গ বৈষম্য বন্ধুত্বে নেই।বন্ধুত্ব হতে পারে পারবারিক,সামাজিক,রাষ্ট্রীয়।ইদানিংকালে  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে কাছের-দুরের কখনো দেশের গন্ডি পেরিয়ে বন্ধুত্ব হচ্ছে।বন্ধুর সহচর্য এখন হাতের মুঠোয়।বন্ধুত্বের আবেদন বেড়েই যাচ্ছে।কখনো একটা কাজ করতে করতে কাজের সাথে হয় বন্ধুত্ব। জীবনের সাথে ধমীয় বা দেশ প্রেমের মূল্যবোধ ও নৈতিকতার সাথেও বন্ধুত্ব হয় গভীর বিশ্বাসে।সব বন্ধুত্বই জীবনকে অর্থবহ করে,করে সমৃদ্ধ জীবনকে দেয় পুর্ণতা।জীবন এবং জগতকে মহিমান্বিত করতে বন্ধুত্বই পারে অহিংস বিশ্ব গড়তে।বন্ধুত্ব যেনো আমাদের সন্তানদের বিপথগামী না করতে পারে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।অনেক সময় সঙ্গদোষে বা অনৈতিক বন্ধুত্ব ছেলে-মেয়ে বা আমাদের জীবনে অভিশাপ হয়ে আসতে পারে।তাই বন্ধুত্ব যেনো হয় সত্য-সুন্দর  আর নৈতিক আদর্শকে ধারন করে।বন্ধুত্বের আহ্বান-বন্ধুত্বেই জীবন,বন্ধুত্বেই মরন,বন্ধুত্বেই জীবনেরসফলতা, বন্ধুত্বেই হোক উজ্জল-উচ্ছল আগামীর পথচলা…শুভ বন্ধুতা!  অাচমকা উচ্চারণ যদি বলে উঠে-বন্ধু কি খবর বল?কতোদিন দেখা হয় নি।আবেগ আপ্লুত সেই ক্ষণ শুধুই বন্ধত্বে,আর কোন সম্পর্কে আছে?বন্ধু নিয়ে গান-কবিতার নির্ধারিত সংখ্যা নেই, এই গানটিও খুব ভালো-

“বন্ধু তোমার চোখের মাঝে চিন্তা খেলা করে

বন্ধু তোমার কপাল জুড়ে চিন্তালোকের ছায়া

বন্ধু তোমার নাকের ভাজে চিন্তা নামের কায়া

বন্ধু আমার মন ভাল নেই/তোমার কি মন ভালো

বন্ধু তুমি একটু হাসো/একটু কথা বলো

বন্ধু আমার বন্ধু তুমি/বন্ধু মোরা ক’ জন

তবুও বন্ধু…মন হলো না আপন’’-কৃষ্ণকলি(সংগৃহীত)।

বন্ধুত্ব হোক বিশ্বাসে,ভালোবাসায়,আন্তরিকতায়,মায়া-মমতায়,তুমুল উচ্ছাসে বাধাহীন-দ্বীধাহীন পারফেক্ট!বন্ধু দিবস হোক প্রতিক্ষণ,প্রতিদিন।বন্ধুত্ব ছিলো,বন্ধুত্ব আছে,বন্ধুত্ব থাকবে অনন্তকাল।শুভ কামনা সকল বন্ধুর প্রতি…।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button