আন্তর্জাতিক

নিউইয়র্কে বাংলাদেশি ইমামসহ ২জনকে গুলি করে হত্যা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নিউইয়র্কের ওজোন পার্ক এলাকার মসজিদ ‘আল ফোরকান’এর ইমাম আলাউদ্দিন আকুঞ্জি ও তার সঙ্গী ৮৫ বছর বয়সী তারা মিয়াকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।

শনিবার জোহরের নামাজের পর লির্বাটি এভিনিউ এর ৭৯ নং সড়কের কাছে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আলাউদ্দীন আকুঞ্জি ঘটনাস্থলেই মারা যান। তার মাথায় গুলি করা হয়েছে। তার সাথে থাকা তারা মিয়া বুকে গুলিবিদ্ধ হন। তারা মিয়া্কে হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান।

দুর্ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে। যদিও স্থানীয় এলাকাবাসীর ধারণা, এটি চলমান মুসলিম বিদ্বেষী যে ‘হেইট ক্রাইম’এর ঘটনা ঘটছে তারই বর্বরতার সর্বশেষ শিকার এই দুই বাংলাদেশি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ‘আল ফোরকান’ মসজিদের মাত্র এক ব্লক দূরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তারা মিয়া ও তার সহকারী মাটিয়ে লুটিয়ে পড়েন।

“দিনে দুপুরে এই ভাবে মেরে ফেললো মানুষটিকে! আমরা কোথায় বাস করছি?” বলছিলেন মিল্লাত উদ্দীন নামের স্থানীয় একজন প্রতিবেশি। ওজন পার্ক কমিউনিটি বোর্ড সদস্য সৈয়দ খশরু এই প্রতিবেদকের কাছে জানান, নিহত ইমাম তারা মিয়া আর তার সহ-ইমাম দুজনই বাংলাদেশের সিলেটের বাসিন্দা।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কসহ বিভিন্ন মুসলিম প্রধান বসতিতে সম্প্রতি মুসলিম বিদ্বেষ আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গিয়েছে। নিউইয়র্কের ব্রঙ্কস’এ গত সপ্তাহে একজনকে কুপিয়ে জখম করে দুর্বৃত্তরা। মাস তিনেক আগে জ্যামাইকার এক বাংলাদেশি বৃদ্ধ মসজিদ থেকে ফেরার পথে হামলার শিকার হন। কিন্তু শনিবারের এই হামলা সাম্প্রতিক ইতিহাসের সব মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।

শেষ খবরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে নিউইয়র্কের বাংলাদেশি কমিউনিটি। তারা এই ঘটনার ন্যায়বিচার এবং মুসলিমদের নিরাপত্তা দাবি করে একটি প্রতিবাদ বিক্ষোভের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ব্রঙ্কস কমিউনিট বোর্ড সদস্য এন মজুমদার এবং জ্যামাইকার ফ্রেন্ডস সোসাইটির সংগঠক ফকরুল ইসলাম দেলোয়ার।

উল্লেখ্য, এর আগে টেক্সাসের একটি মসজিদের বাইরে সশস্ত্র অস্ত্রধারীরা মহড়া দিলে ভীতি ছড়িয়ে পড়ে স্থানীয় অধিবাসীদের মধ্যে। অরল্যান্ডো হত্যাকাণ্ডে একজন মুসলিমের নামে খবর চাউর হলে সেখানকার ১৬টি মসজিদে নিরাপত্তা বাড়িয়ে মুসুল্লিদের আশ্বস্ত করে টেক্সাস পুলিশ। দু’দিন আগে নিউইয়র্কের মুসলিম আমেরিকান পুলিশ সোসাইটির একটি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন কমিউনিটির মুসলিম নেতারা মুসলমানদের উপরে ক্রমবর্ধমান ‘হেইট ক্রাইম’ বন্ধে সিটি পুলিশকে আরো তৎপর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। নিউইয়র্ক পুলিশ বাহিনীতে প্রায় এক হাজার পুলিশ সদস্য আছেন যারা মুসলিম। এর একটা বড় অংশ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button