প্রবাস

মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে পারবে ৭৪৪ রিক্রুটিং এজেন্সি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোয় ৭৪৪টি রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকা প্রকাশ করেছে দেশটির ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ। গত ৯ নভেম্বর দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগের  ওয়েব সাইটে  এ তালিকা প্রকাশ করা হয়।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বেশ কয়েক দফা জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার পর মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে কর্মী নিয়োগের ঘোষণা আসে। মালয়েশিয়া এ ঘোষণা দিলেও অতীতের অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখে মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে তেমন কোনো আগ্রহ দেখায়নি। এর আগে মালয়েশিয়া নিয়ে অনেক তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই আগ বাড়িয়ে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা না বলার কৌশল নেয় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।

বৈঠকে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে বৈধপথে কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্তের কথা জানান। ছাত্র ভিসা, টুরিস্ট ভিসাসহ নানা মাধ্যমে দেশটিতে বৈধ কর্মীর চেয়ে অবৈধ কর্মীর সংখ্যা বাড়ছে। বিভিন্ন সময়ে আয়োজিত বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অবৈধ কর্মীদের বৈধ করে নেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়। তারা প্রস্তাবটি মেনে নিয়ে এখন নতুন করে বৈধ পথে কর্মী নিয়োগের অনুমতি দিয়েছেন।

এক সপ্তাহের ব্যবধানে মালয়েশিয়া কয়েক হাজার কর্মী নিয়োগের চাহিদা পাঠিয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশন কর্মী নিয়োগের বিষয়টি কঠোরভাবে মনিটর করবে। কোনো ধরনের অনিয়ম করতে দেয়া হবে না।

এদিকে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রতারণা ঠেকাতে কর্মীদের বায়ো-মেডিকেল ও বীমার আওতায় আনা হবে। এর আগে কর্মীদের বিদেশ যাওয়া নিশ্চিত হওয়ার আগেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন করা হতো। তাতে অনেকেই আনফিট হওয়ায় যেতে পারত না। ওই কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার সব টাকার অপচয় হয়েছে। বায়ো-মেডিকেলের ফলে এবার আর টাকা অপচয়ের সুযোগ থাকছে না।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে করা ‘জিটুজি প্লাস’ চুক্তির আওতায় কর্মী নেয়ার পুরো প্রক্রিয়াই হবে অনলাইনে। এতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা থাকবে। সরকারের তথ্য ভাণ্ডারের পাশাপাশি বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সিও কর্মী বাছাইয়ের সুযোগ পাবে। তবে এজন্য তাদের মন্ত্রণালয় থেকে কর্মী নিয়োগের অনুমোদন নিতে হবে।

মালয়েশিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন সূত্রে জানা গেছে, দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি পর্যায়ে লোক পাঠানোর পদ্ধতিকে ভালো হিসেবে অভিহিত করেছেন। তবে এক্ষেত্রে সাধারণ শ্রমিকরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত ও প্রতারণার শিকার না হয় সেদিকে নজর রাখার জন্য মালয়েশিয়ার হাইকমিশনারকে নির্দেশনা দিয়েছেন।

জানা গেছে, রিক্রুটিং এজেন্টরা লোক নিয়োগ করলেও পুরো ব্যবস্থা সরকার মনিটরিং করবে, যাতে কোনো অনিয়ম না হয়। নতুন এই সিদ্ধান্তের ফলে সরকার কর্তৃক তালিকাভূক্ত ৭৪৫ টি বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো শুরু হতে যাচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দূতাবাসের এক কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে জানান, জনশক্তি রফতানির ক্ষেত্রে শোষণ-বঞ্চনামুক্ত পদ্ধতির প্রতি মালয়েশিয়া জোর দিয়েছে।

ওই কর্মকর্তা বলেন, অবশ্যই অভিবাসন ব্যয় গ্রহণযোগ্য সীমার মধ্যে হতে হবে। নিয়োগকারীকে অবশ্যই কর্মীদের কল্যাণ ও নিরাপত্তার গ্যারান্টি দিতে হবে। স্বচ্ছতার জন্য বর্তমান ডাটাবেস থেকে বাছাই করে নিবন্ধনকৃত কর্মী নিয়োগ করতে হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button