ভাসানীর হাতে গড়া প্রতিষ্ঠানগুলো বিলুপ্তির পথে

অনলাইন ডেস্ক: আজ ১৭ নভেম্বর। মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী। জাতীয় রাজনীতিতে ভুমিকার পাশাপাশি ভাসানী প্রতিষ্ঠা করেন শিক্ষা ও সেবামূলক অনেক প্রতিষ্ঠান। টাঙ্গাইলের সন্তোষে তিনি অন্তত ৩৩টি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন। যদিও অযত্ব অবহেলার কারণে অনেক প্রতিষ্ঠানই বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
আর মাজারের দক্ষিণ পাশে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর প্রতিষ্ঠিত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় টেকনিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাস। কলেজের একটি ভবনের ছয়টি কক্ষের মধ্যে চারটিই পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। খুবই ঝুঁকির মধ্যে এই ভবনে শিক্ষার্থীরা লেখা পড়া করছে।
কলেজের শিক্ষার্থীরা জানায়, মওলানা ভাসানীর প্রতিষ্ঠিত এই কলেজে লেখাপড়া করার সুযোগ পেয়ে তারা গর্ববোধ করে। কিন্ত তাদের কষ্ট লাগে কলেজটির করুন অবস্থার জন্যে। এটি একটি টেকনিক্যাল কলেজ। কিন্ত টেকনিক্যাল কোন সাপোর্ট নেয়। একটি মাত্র ল্যাবটব দিয়ে পুরো কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় শিক্ষা গ্রহণ করছে।
এ ব্যপারে বিশ্ববিদ্যালয় টেকনিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন জানান, ভাসানীর হাতে গড়া এ প্রতিষ্ঠানটি খুবই অবহেলিত অবস্থায় চলছে। কলেজের কোন সীমানা প্রাচীর নেই। ফলে খুবই অনিরাপদ পরিবেশে ছাত্রছাত্রীরা পড়ালেখা করছে।
মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী জীবনের শেষ প্রান্তে সন্তোষে বহু শিক্ষা, সেবা, ক্রীড়া ও উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় টেকনিক্যাল কলেজ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সরকারি বালিকা হাইস্কুল ও বালক হাইস্কুল, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিশু স্কুল, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় তালিমাতে কোরান ও সুন্নাহ, ভোগ্যপণ্য সরবরাহ সমিতি, বহুমুখি কেন্দ্রিয় সমবায় সমিতি, ঐতিহাসিক দরবার হল, একটি জামে মসজিদ, মুসাফির খানা, পীর শাহজামান মার্কেট, সরকারি মাতৃসদন কেন্দ্র, সরকারি পশু হাসপাতাল।
এছাড়া বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে- ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সন্তোষ, সাপ্তাহিক হক কথা, শান্তি প্রেস, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সুচি শিশু স্কুল, পীর শাহজামান হোষ্টেল, শাহ এনায়েত উল্লাহ হোষ্টেল, মৎস্য খামার, তাঁত শিল্প, উদ্যার নার্সারী, গরুর খামার।
মওলানা ভাসানীর হাতে গড়া এসব প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে জানতে চাইলে ভাসানী ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও ভাসানীর নাতি মাহমুদুল হক সানু বলেন- মওলানা ভাসানী একটি দর্শন নিয়ে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন। কিন্ত পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতা না থাকায় ইতোমধ্যে ১৩ টি প্রতিষ্ঠান বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
এ ব্যপারে মওলানা ভাসানীর তৎকালীন একান্ত সচিব ও ভাসানী অনুসারী সৈয়দ ইরফানুল বারী বলেন, ভাসানী হুজুরের প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানগুলো টিকিয়ে রাখতে মওলানা ভাসানীর চিন্তাধারার সমন্বিত নেতৃত্ব প্রয়োজন। প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানই মওলানা ভাসানীর একেকটা অঙ্গের মতো বলেও মনে করেন তিনি।