আন্তর্জাতিক

রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধে মায়ানমারের উপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে। আর রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নির্যাতনকে গণহত্যা আখ্যায়িত করে তা বন্ধে জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ও ইসলামী দেশগুলোর সংগঠন ওআইসিসহ বিদেশী হস্তক্ষেপ আহ্বান করেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক। গতকাল রোববার রোহিঙ্গাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে রাজধানী কুয়ালালামপুরে এক বিক্ষোভে অংশ নেন তিনি। বিক্ষোভ যোগ দেয় কুয়ালালামপুরের হাজার হাজার মানুষ। এতে মায়ানমারে গণতন্ত্রের নেত্রী হিসেবে পরিচিত ও শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অং সান সুচির নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা করেছেন নাজিব রাজাক।

র‌্যালির আয়োজন করে নাজিব রাজাকের ক্ষমতাসীন ইউনাইটেড মালয় ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ও প্যান-মালয়েশিয়ান ইসলামিক পার্টি। এতে যোগ দেন প্রায় ১০ হাজার মানুষ। রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদ জানাতে গত সপ্তাহে মায়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে মালয়েশিয়া। আন্ডার-২২ ফুটবল ম্যাচে অংশ নেয়া বাতিল করে দেশটি।

সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশ মালয়েশিয়া। তারা মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা মোকাবিলা নিয়ে এবং রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের বিরুদ্ধে তীব্র থেকে তীব্র সমালোচনা করে যাচ্ছে। ওই নির্যাতনের কারণে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সে বলা হয়, মায়ানমারে চলমান এ নির্যাতনকে গত শনিবারই মালয়েশিয়া ‘এথনিক ক্লিনজিং’ বা জাতি নির্মূল বলে আখ্যায়িত করেছে। তাই এ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ আহ্বান করলেন নাজিব রাজাক। তিনি গতকাল রোববারের সমাবেশে বলেছেন, বিশ্ব বসে বসে দেখতে পারে না চলমান এই গণহত্যা।

এদিকে অন্য সদস্য দেশের বিষয়ে আসিয়ানভুক্ত কোনো দেশ নাক গলাতে পারে না বলে মালয়েশিয়াকে আগেই সতর্ক করেছিল মায়ানমার। কিন্তু সেই সমালোচনা গায়ে না মেখে প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক র‌্যালি করলেন। তিনি উল্টো মায়ানমারকে সতর্ক করে দিলেন। বললেন, গত বছর আসিয়ান নিজেকে একটি একক সমপ্রদায় হিসেবে ঘোষণা করেছে। এর সনদে বলা হয়েছে মৌলিক মানবাধিকার রক্ষা করতে। কিন্তু মায়ানমারে কি তা হচ্ছে! অং সান সুচির নিষ্ক্রিয়তারও সমালোচনা করেছেন নাজিব রাজাক। তিনি বলেছেন, দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় রোহিঙ্গা ইস্যুটি সরিয়ে রেখেছেন সুচি। তিনি সুচির প্রতি প্রশ্ন রাখেন_ কিভাবে এটি হতে পারে? আমাদের মধ্যে তো সব ইস্যুতে আলোচনা হওয়া উচিত। মালয়েশিয়ায় রোহিঙ্গা সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ফয়সাল ইসলাম মুহাম্মদ কাসিম বলেছেন, সঙ্কট সমাধানে মালয়েশিয়া যে ভূমিকা নিয়েছে তিনি তার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, আমরা চাই মালয়েশিয়া মুসলিম বিশ্ব ও পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে একটি বার্তা পাঠিয়ে দিক। তাতে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মায়ানমার সরকারকে চাপ দিতে হবে। ২০১২ সালে সামপ্রদায়িক দাঙ্গায় কয়েক শত মানুষকে হত্যা করা হয় রাখাইনে। তারপর এবারই সবচেয়ে ভয়াবহ রক্তপাত চলছে সেখানে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button